বিশ্বকর্মা পুজোতে ঘুরে বেড়ানো

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা,

বাড়ির পুজোর গরম গরম খিচুড়ি খেয়ে আর কি জেগে থাকা যায়? দুপুরবেলায় খিচুড়ি খেয়ে তাই আর চোখ খুলে থাকতে পারলাম না। বিছানায় অল্পক্ষণের জন্য বসতেই চোখ জুড়ে ঘুম চলে এলো। তবে ঘুমোনোর আগে মনে মনে ঠিক করে নিলাম, বিকেল বেলায় তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে আশেপাশের সব কটা বিশ্বকর্মা পুজোর প্যান্ডেল থেকে ঘুরে আসব।

কিন্তু আমার আর বিকেল হলো না ঘুম যখন ভাঙলো তখন ঘড়িতে সন্ধ্যে ছটা পেরিয়ে গেছে। যেহেতু শীত প্রায় আসন্ন তাই সন্ধ্যাটা একটু আগেই হয়েছে। ঘুম থেকে উঠে দেখি চারিদিকটা বেশ অন্ধকার অন্ধকার হয়ে গেছে। আমার মনটা গেল ভেঙ্গে গেলো। কত আশা নিয়ে ঘুমোতে গেছিলাম যে বিকেল বেলা ঘুম থেকে উঠে আশেপাশের বিশ্বকর্মা পুজো গুলো দেখে আসবো। কিন্তু সেটা আর হলোনা। তাই মন কাচুমাচু করে বাইরে বেরোলাম। বাইরে বেরোতেই পুজোর গানের আওয়াজ পেলাম। আওয়াজ কানে আসা মাত্র স্থির করে ফেললাম সন্ধ্যে হয়েছে তো কি হয়েছে ঘুরেই আসি।

আসলে পুজোর প্যান্ডেলে ঘুরতে যাওয়ার তাগিদের পিছনে আমার দুটো কারন আছে। এক, ঠাকুর দেখে আসা। আর দুই, পূজোর খিচুড়ি। বারোয়ারী পুজোর খিচুড়ির প্রতি আমার একটা অদ্ভুত ভালো লাগার টান আছে। সে কালীপুজোর খিচুড়ি ভোগ হোক কিংবা গণেশ চতুর্থীর খিচুড়ি ভোগ। আমি খিচুড়ি ভোগ পেলে তখন আর লোভ সামলাতে পারি না। পাশের বাড়ির ভাইপোকে সাথে করে নিয়ে বেরিয়ে পরলাম।

স্থির করলাম, কিছুটা দূরে বিদ্যুৎ অফিসের বিশ্বকর্মা পুজোটা আগে দেখে আসবো। আসলে বিদ্যুৎ অফিসের পুজোর গানের আওয়াজটা কানে খুব ভেসে আসছে তাই আগে সেখানে যাওয়া ঠিক মনে হলো। হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছেও গেলাম বিদুৎ অফিসে।

PXL_20220917_183836515_copy_1008x756.jpg

PXL_20220917_184721425_copy_1008x756.jpg

বাবা বিশ্বকর্মার সামনে মাথা ঠুকে। প্রসাদ খাওয়ার আশায় নিয়ে বিদুৎ অফিসের ভেতর চলে গিয়ে হাত পাতলুম। যদিও ততক্ষণে প্রসাদ বিতরণ বন্ধ হয়ে গেছিলো তবুও তারা আমাদেরকে দেখে খিচুড়ি প্রসাদ দিলেন সাথে লাবড়া।

PXL_20220917_184138583_copy_1008x756.jpg

আহা পুজোর প্রসাদের স্বাদের কোনো তুলনা নেই। প্রসাদ খেয়ে আবার ঠাকুরের সামনে মাথা ঠুকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ইচ্ছা ছিলো আরো একটু দূরে গিয়ে ঠাকুর দেখে আসার। কিন্তু রাত বাড়ছে দেখে আর গেলাম না।


গ্রামে পৌঁছে পাশেই একটা ঘরোয়া পুজো হচ্ছিলো সেখানে গিয়ে ঘুরে সেখানকার ঠাকুরটাও দেখলাম। ছোটখাটো বাবা বিশ্বকর্মা আলোর মাঝে বসে আছেন। দেখে বেশ ভালই লাগলো। সেখানেও খিচুড়ির প্রসাদ পেলাম। অনেক জোরাজুরি করলো কিন্তু যেহেতু আগেই খিচুড়ি খেয়ে নিয়েছি তাই সেখানে আর খিচুড়ি খেলাম না। প্রসাদ নিয়ে বাড়ি নিয়ে চলে এলাম। সবাই মিলেই খাবো।

PXL_20220917_190435405_copy_1008x756.jpg

PXL_20220917_190715307_copy_1008x756.jpg

বাড়ি যখন ঢুকলাম মনটা তখন বেশ ফুরফুরে হয়ে গিয়েছিলো। আসলে গত কয়েকদিন জ্বর থাকার পর প্রসাদ যেন অমৃতের মত লাগলো। অল্প শারীরিক দুর্বলতা থাকলেও, ঠাকুর দেখে এসে মনটা চাঙ্গা হয়ে গেলো।





Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 2 years ago 

আপনাদের বিশ্বকর্মা পুজোর কথা আমি শুনেছি। এমনকি সিরিয়ালে দেখেছি তারা খুব সুন্দর ভাবে পুজো পালন করে। আপনি যে বন্ধুকে নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের পূজো দেখতে গিয়েছিলেন এটা বেশ ভালো লাগলো। বিশেষ করে পুজোর ভোগ দেওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল কিন্তু আপনাদেরকে দেখে তাও দিয়েছিল। আমিও শুনেছি খিচুড়ি নাকি অনেক মজা হয়। সব মিলিয়ে আপনারা আজকের পোস্ট অনেক ভালো লাগলো।

 2 years ago 

আসলেই খিচুড়ি খুবই ভালো ছিলো। দারুন লাগলো আমার

 2 years ago 

সর্বপ্রথম আপনার পরিপুর্ন সুস্থ্যতা কামনা করছি । দেখতে দেখতে পুজার ঘন্টা বেজেই গেল , আমি যতটুকু জানি বিশ্বকর্মা পুজা দিয়েই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পুজার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় এবং আসতে আসতে তাদের দুর্গা পুজা শুরু হয় এবং এই সময়টা হিন্দু ভাই বোনরা অনেকটাই আনন্দে মেতে উঠে , আপনার কিছু মুহুর্ত আমার ভাল লেগেছে ভাইয়া যেমন খিচুরু শেষ হওয়ার পরেও আপনি পেলেন এবং সুন্দরতম মুহুর্ত হলো অসুস্থ্য থেকেও বিশ্বকর্মা পুজার কিছু মুহুর্ত অনুভব করলেন এবং আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন , ধন্যবাদ ভাইয়া

 2 years ago 

দেখতে দেখতে পুজো চলেই আসলো। আর কয়েকদিনের মধ্যে দূর্গা পুজো।

 2 years ago 

ভাগ্যিস সন্ধ্যা বেলায় ঘুম থেকে উঠেছেন তা না হলে ত বিশ্বকর্মা পুজোর অনেক কিছুই দেখতে পেতেন না। আপনার ভাগ্য ভাল বিদ্যুৎ অফিস এবং গ্রামের কাছের ঘরোয়া পুজো দুটিতেই খিচুড়ি প্রসাদ পেয়েছেন। ধন্যবাদ দাদা আপনার সুন্দর মুহুর্ত শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

প্রথমে তো মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তবুও যে গেলাম।

 2 years ago 

আমাদের বাড়িতে আশেপাশে বেশ কয়েকটা বাবা বিশ্বকর্মার পূজা হয়। এবছরের ঢাকাতে থাকার কারণে সেই রেশ টা একদমই পাইনি। হয়তো এরকম পোস্ট না পেলে বুঝতেই পারতাম না বিশ্বকর্মা পূজো কবে হচ্ছে। আর দাদা আপনার মত আমিও ভোগের খিচুড়ি পেলে লোভ সামলাতে পারিনা একদম। প্রসাদ নিয়ে আসতেই হবে আমাকে 😊। অসুস্থ থাকার পর ভোগের খিচুড়ি দিয়ে মুখে ভালোই রুচি ফিরে এসে গেছে দেখছি 😀।

 2 years ago 

আহা। দারুন লাগলো খিচুড়ি প্রসাদ। রুচি ফিরে আসলো বটে।

 2 years ago 

প্রিয় দাদা আপনার বিশ্বকর্মা পূজোর দিনের ঘুরে বেড়ানোর উদ্দেশ্য দুইটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে আপনার খিচুড়ি খাওয়ার উদ্দেশ্যটি সত্যিই অসাধারণ ছিল। আর বিশ্বকর্মা পুজোর আনন্দের দিনে ঘুরে বেড়ানোর মজাটা তো সব সময় অন্যরকম জমজমাট হয়।

 2 years ago 

পুজোর সময় ঘুরে ঘুরে দেখতে খুবই ভালো লাগে। ধন্যবাদ বিদ্যু দা 🥰

 2 years ago 

দাদা আমারও, যেকোনো পুজোর প্রসাদ ও খিচুড়ি খেতে খুবই ভালো লাগে। গ্রামে যে কারো বাড়িতে পুজো থাকলে আমি অবশ্যই হাজীর। আপনার মাধ্যমে বাবা বিশ্ব কর্মার প্রতিমা দর্শন সহ ভক্তি ভরে প্রসাদ দর্শন করতে পারলাম। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

আমিও চলে যাই। অনেক সময় নিমন্ত্রণ না করলেও খিচুড়ি খেতে যাই 🤪

 2 years ago 

দাদা আমারাও পুজোর প্রসাদ ভোগ সত্যি অনেক ভালো লাগে ৷ আর আপনি সন্ধা বেলা বিশ্বকর্মা ঠাকুর দেখার সাথে একটু হলেও তো প্রসাদ পেয়েছেন ৷ রাতের আলোকচিত্র চমৎকার ছিল ৷ সামনে আসছে মা আনন্দ হবে জাঁকজমক

 2 years ago 

রাতে আরো সুন্দর লাগছিলো। বিশেষ করে ফেরার সময়।

বাবা বিশ্বকর্মার সামনে মাথা ঠুকে। প্রসাদ খাওয়ার আশায় নিয়ে বিদুৎ অফিসের ভেতর চলে গিয়ে হাত পাতলুম।

এই লাইনটা পড়তে পড়তে বেশ কিছু সময় হাসলাম। হা হা হা... ভাগ্যিস বাবা বিশ্বকর্মা প্রসাদের বদলে তোমার হাতে কারেন্টের শক দেয়নি। তোমার পুজোর প্যান্ডেলে যাওয়ার দুটো কারণ থাকলেও আমার কারণ একটাই, তা হল পুজোর খিচুড়ি খাওয়া। মাতাল গুলো যা করে প্যান্ডেলের সামনে তাতে আর যেতে ইচ্ছে করে না আজ কাল।

 2 years ago 

হি হি,আপনার মন্তব্য পড়ে আমার ও বেশ হাসি পেল দাদা।☺️

 2 years ago 

মাতাল দের দেখে আমি তো বেশ মজা পাই। আর খিচুড়ি উপরি পাওনা। 🤪

 2 years ago 

দাদা, বাবা বিশ্বকর্মা পূজার প্রসাদ খেয়ে আপনার শরীর নিশ্চয়ই ভালো হয়ে যাবে।আর যেকোনো পূজার খিচুড়ি প্রসাদের প্রতি আমার অদ্ভুত টান আছে।কি যে ভালো লাগে বলে বোঝানো যাবে না।যাক সন্ধ্যায় বের হয়ে ও আপনার লাভ হয়েছে দুটো কারনই পূরণ হলো।ঠাকুরগুলি খুবই সুন্দর।সামনে শীতকাল আসছে তাই দিন ছোট হচ্ছে দাদা,শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 2 years ago 

অনেকটাই ভালো হয়েছে। 🤪।

খিচুড়ি ইস লাভ।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 62725.26
ETH 3221.94
USDT 1.00
SBD 3.85