"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৩ || স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো সুস্থ আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে নতুন ব্লগ শুরু করলাম।
আজ আমি আপনাদের মাঝে স্কুল জীবনের একটি সুন্দর ঘটনা শেয়ার করব। স্কুল জীবনে এমন ঘটনা প্রত্যেকেরই রয়েছে। তিক্ত ঘটনাগুলো আজীবন মনে থাকে। সে আলোকে আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার স্কুল জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা শেয়ার করলাম।
সম্ভবত ঘটনাটি অষ্টম বা নবম শ্রেণীতে ঘটেছিল। স্কুল জীবনে অনেক দুষ্ট ছিলাম। সারাক্ষণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেক দুষ্টামি করতাম। বিশেষ করে মেয়েদের সাথে অনেক দুষ্টামি করতাম আমি। তারাও আমার সাথে অনেক দুষ্টামি করত। কিন্তু একদিন দুষ্টামির করার সময় একটি মেয়ে আমার সম্পর্কে একজন প্রিয় স্যারের কাছে নালিশ দিল। স্যার এসে আমাকে অনেক বকাঝকা শোনালো। তখন আমার অনেক রাগ হয়েছিল। তখন একটি প্ল্যান করলাম মেয়েটিকে একটি বিপদে ফেলব। কয়েকদিন যাবত আমি তাদের সাথে কথা না বলে চলছিলাম। এক কথায় ভদ্র ছেলের মত।
তখনই একটি মাস্টার প্লান করলাম। মেয়েটিকে বিপদে ফালানোর। দুপুরের সময় যখন স্কুলে বিরতি দিল তখন আসল ঘটনাটি ঘটিয়েছি। তার হাঁটার পথে কয়েকটি কলার চামড়া ফেলেছি। আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী যা চিন্তা করেছি তাই ঘটলো। কলার চামড়া সিলিপ খেয়ে মেয়েটির পড়ে গেল। মেয়েটি পড়ে অনেক চিৎকার চেঁচামেচি করতে লাগলো। ক্লাসের সব ছেলেমেয়ে এক সাথ হয়ে তাকে এসে ধরল। পরবর্তীতে সকল টিচার তাকে দেখতে আসলো ক্লাসের মধ্যে।
প্রথম অবস্থায় আমি যে কলার চামড়া গুলো ফেলেছি তা কেউই জানতো না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওই স্যারটি , আমাকে কলা খেতে দেখেছিল। মেয়েটিকে ক্লাসে আনার কিছুক্ষণ পরেই একটি বেত নিয়ে এসে আমাকে তুমুল গতিতে ফিটাতে লাগলো। পিটাতে পিটাতে সে আমাকে অনেক বকাঝকা করল। তখন আমি আমার অপরাধ স্বীকার করেছিলাম। স্বীকার করার পর আরো বেশি করে পিটাতে লাগলো। ক্লাসের সবগুলো বই এলোমেলো ভাবে ফেলে দিলাম। বারান্দার মধ্যে আমার ব্যাগটি ছুড়ে ফেলে দিলাম। এরপর রাগ করে স্কুল থেকে বেরিয়ে বাড়িতে চলে গেলাম। আমার পুরো শরীর এর মধ্যে দাগ বসে গিয়েছিল।
এরপর বিকেলে স্কুল ছুটির পর প্রিয় স্যার টে আমাকে দেখতে বাড়িতে চলে আসলো। কারণ স্যার আমাকে খুবই আদর করত। তাদের পরিবারের মধ্যে আমি একজন ছিলাম। স্যার আমাকে ছোট ভাইয়ের মতো সবসময় আদর করেছিল। এরপর বাড়িতে এসে আমাকে নিয়ে একটি রিকশায় করে রওনা দিল। আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে একই কাবাব হাউস ছিল। সেখানে নিয়ে প্রথমে কাবাব অর্ডার দিয়ে আমাকে দীর্ঘ দুই থেকে তিন ঘন্টা যাবৎ অনেক কিছু বুঝালো। আমার ভুল ছিল তা বুঝতে পারি, এবং স্যারের কাছে আমি ক্ষমা চাইলাম। ওদিন মেয়েটার একটি হাত ভেঙ্গে গিয়েছিল। এছাড়াও শরীরের অনেক জায়গায় ব্যথা পেয়েছিল। কারণ মেয়েটি যখন পড়েছে তখন দৌড়িয়ে আসতেছিল, এজন্য ব্যথা বেশি পেয়েছিল। বিষয়গুলো শুনে আমার নিজের কাছেও অনেক বেশি খারাপ লেগেছিল।
এরপর থেকে আমি আর ক্লাসের মধ্যে দুষ্টামি করতাম না। ধীরে ধীরে সবার সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে শুরু করলাম। ঐদিন হোটেল থেকে স্যার আমাকে নিয়ে মেয়েটির বাসায় গিয়েছিল। আমি তার কাছেও ক্ষমা চেয়েছিলাম। তার পরিবারের সবাই তা খুব সুন্দর ভাবে মেনে নিয়েছিল। আমি প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম পরিবারের সবাই আমাকেও আবার বকা শোনাবে। আসলেই তা ঘটেনি।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আমার নাম নুরুল আলম রকি। আমার steemit I'd narocky71। আমি বাংলাদেশী নাগরিক । বাংলাদেশে বসবাস করি। তার সাথে সাথে আমি বিশ্বনাগরিক। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি। বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করি। আমি বাংলা ভাষাকে ভালবাসি। আমি ফটোগ্রাফি করতে ও ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে জল রং দিয়ে পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। যখনই আমার সময় এবং হাতে টাকা থাকে তখন ভ্রমণ করতে বেরিয়ে পড়ি। বিশেষ করে আমি ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি অনেক বছর আগ থেকে ফটোগ্রাফি করে থাকি। কিন্তু বিশেষ করে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি বেশি করা হয়। বর্তমানে তার সাথে আর্ট করতে অনেক ভালোবাসি। বর্তমানে আমি বেশি সময় কাটাই আর্ট শিখতে। বর্তমানে আমার স্বপ্ন, আমি একজন ভালো ফটোগ্রাফার, ও একজন ভালো আর্টিস্ট হব। ( ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
তাহলে অবশেষে স্যারের সাথে মেয়েদের বাসায় গিয়ে সব ঠিকঠাক ও ঝামেলা মিটলো। যাক ভালই হল আমি থাকলে মনে হয় অন্য কিছু গড়ত। ধন্যবাদ সবার সাথে তুলে ধরার জন্য।
আসলেই তাই ভাই। অনেক ভয় পেয়েছিলাম। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
https://twitter.com/NARocky4/status/1575352408573890561?t=E_0hDlWdecyQOBjfHfESOg&s=19
ভাই আপনার আসলে কপালটা খারাপ ছিল। আপনি কলা খোসা ফেলেছেন। এটা কেউ দেখলো না দুঃখের বিষয় স্যারটা দেখেছিল যার কারণে একের পর এক বরত দিয়ে আঘাত যার কারণে আপনি ভুল স্বীকার করলেন এবং ভুল স্বীকার করাতে আরও মারতে শুরু করল। যার কারণে আপনি রেগে বাড়ি চলে আসলেন। সত্যিই মারের স্পিড অনেক বেশি ছিল মনে হচ্ছে।
আসলেই ঠিক বলেছেন ভাই একদমই পুরো শরীরে দাগ করে ফেলেছিল। মাইরের কথা মনে হলে এখনো ব্যাথা লাগে। পোস্ট সময় দিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ
মাঝে মাঝে হাসি পায় আবার কষ্ট লাগে। স্যার আপনাকে এভাবে পিটালো! কথাটা যেন মন থেকে মেনে নিতে পারছি না। আসলে ছোটবেলায় অনেক কিছুই হয়ে থাকে বন্ধু বান্ধবীর সাথে। তবে শিক্ষকদের উচিত ছিল এভাবে না মারার কারণ আমার কথা হচ্ছে একজন ভুল করলে আমি কেন ভুল করব সেটা সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। যাই হোক আপনি অনুতপ্ত হয়েছেন মাফ চেয়ে নিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে আশা করি শান্তি ফিরে এসেছিল আপনাদের পরিবেশের মধ্যে।
ভাই আপনি কথাগুলো একদম ঠিক বলেছেন। চাইলে আমাকে প্রথম বিষয়টি বুঝাতে পারতো। এই তিক্ততা এখনো আমার মনে পড়ে ভাই। মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার স্কুল জীবনের ঘটনাটি পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনার ভাগ্য খারাপ তাই কলা খেতে স্যার দেখে ফেলেছে। তার জন্য এত মাইর খেলেন। এবং তা স্বীকার করে নিলেন। তবে মেয়েটির জন্য একটু খারাপ লেগেছে মেয়েটির হাত ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে। যাই হোক পরে স্যার যখন আপনাকে মেয়েটির বাসায় নিয়ে গেল এবং সব মিটমাট করে ফেলল। এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কিন্তু রাগটা আমার থেকে গেছিল। কারণ পচুর মাইর খেয়েছিলাম। আমার পুরো পোস্টে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার স্কুল জীবনের ঘটনাটি পড়ে খুব মজা লাগলো এবং আপনার জন্য দুঃখ হলো। কলা খেয়ে খোঁচা ফেলতে শিক্ষক দেখে ফেললেন। স্বীকার করার পরও আপনাকে অনেক মারলো। রাগ করে আপনি বাড়িতে চলে আসলেন। খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
ঐ দিনের কথা প্রায় সময় মনে পড়তো আমার। কিন্তু যখন এই প্রতিযোগিতা দিয়েছে তখন এই ঘটনাটি আমার মাথায় আসে। ঘটনা কি আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সবচেয়ে বেশি মজার লাইফ হচ্ছে স্কুল লাইফ। আপনি হয়ত ভাবে নাই কলা খোসা আছার খেয়ে মেয়েটি এত বড় ক্ষতি হবে। সেই বয়সে দুস্টামি চলে অনেক কিছু কাজ করে থাকি, তা সারাদিন মনে গেঁথে যায়। আপনার তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করাব জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিযোগিতা জন্য রইল শুভকামনা।
একদম ঠিক বলেছেন আপু। স্কুল লাইফ এর মত মজার লাইফ আর জীবনে আসার কোন সম্ভাবনা নেই। সব ধরনের স্মৃতি জড়িয়ে আছে সেখানে। মন্তব্য করে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
শাসন করা তারই সাজে যে সোহাগ করতে জানে। যাই হোক আপনি আপনার ভুলটি বুঝতে পেরেছেন সাথে শিক্ষাগুরুর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। স্কুল লাইফে এরকম ছোটখাটো চিত্ত অভিজ্ঞতা প্রায় সবাই আছে। এগুলো ছাত্র অবস্থায় ঘরেই থাকে। আপনার কৃতিত্ব অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এখন মনে হয় অনেক বুঝেছি, ঐদিন আসলে আমার ভুল ছিল। মেয়েটির একটি হাত ভেঙে গেছিল এজন্য বেশি খারাপ লাগে। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।