ছোটবেলার মজার স্মৃতি - "গ্রাম্য মেলার কিছু টুকরো স্মৃতি"

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago


কপিরাইট ফ্রী ইমেজ সোর্স Pixabay


ছোটবেলার "মেলার স্মৃতি" অনেক-ই আছে । তবে সবই ছেঁড়া ছেঁড়া, টুকরো টুকরো । কোনটা ছেড়ে কোনটা যে বলি বুঝতে পারছি না । আমাদের গ্রামে যতগুলি মেলা হতো তার প্রায় সবই ছিল হিন্দু ধর্মের নানান ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত মেলা । পয়লা বৈশাখে হতো "বৈশাখী মেলা", শ্রাবণে হতো "রথের মেলা", আশ্বিনে হতো দূর্গা পুজো উপলক্ষে বিশাল "পুজোর মেলা", পৌষ মাসে হতো নাম-সংকীর্ত্তন উপলক্ষে বিশাল এক ধর্মীয় মেলা "নাম যজ্ঞের মিলন মেলা", ফাল্গুন মাসে দোলযাত্রা উপলক্ষে ছোটোখাটো একটি মেলা হতো আশ্রম প্রাঙ্গনে, চৈত্র মাসে হতো দুটি বড় বড় মেলা - এক "বাসন্তী দুর্গোৎসবের মেলা" এবং দুই "চড়ক মেলা" নীল পুজো উপলক্ষে । সারা বছরের মধ্যে আমাদের সবার আকর্ষণ থাকতো এই দুটি মেলার জন্য । এতো বড় মেলা আর তল্লাটে হতো না ।

আজকে কিছু টুকরো স্মৃতি শেয়ার করবো "দূর্গা পুজোর মেলার কথা" । ছোটবেলায় আমরা কেউ-ই বাপ মায়ের সাথে মেলায় যেতাম না । দল বেঁধে নিজেরাই যেতাম পুজোয় পাওয়া নতুন ড্রেস পরে। এক একটা গ্রূপে ভাগ হয়ে । এক একটি গ্যাং । মাঝে মাঝে লেগে যেত গ্যাং লিডারদের মধ্যে । মারামারি বাঁধতো তখন - ধুলোর ঝড় উঠতো । তবে আমাদের গ্রুপ যথাসাধ্য এড়িয়ে চলতাম সংঘাত । কারণ আর কিছুই না । যদি নতুন জামা কাপড়ে ধুলো-কাদা লেগে যেত বা ছিঁড়ে যেত তবে সেদিন বাড়ি ফিরলে আমাদের কানের উপরে বিশাল অত্যাচার আরম্ভ হতো । কান ছিঁড়ে যাওয়ার দশা হতো ।

মেলায় গিয়েই প্রথমে আমরা "ঘষা বরফ" খেতাম একেক জন দু-তিন গ্লাস করে । ঘষা বরফ হলো গোল্লা বরফের-ই মাসতুতো ভাই এক প্রকার । একটি প্রকান্ড বরফের টুকরো ঘষে ঘষে চেঁছে চেঁছে অনেকগুলি বরফের টুকরো বের করা হতো, এরপরে একটি কাঁচের গ্লাসে টুকরো গুলো নিয়ে নানান রকমের রং বেরঙের সিরাপ মেশানো হতো । সব শেষে লেবুর টুকরো দিয়ে আরো স্বাদ অ্যাড করা হতো । তাই-ই আমরা খেতাম কাঠি দিয়ে । আহা এতকাল পরে লিখতে গিয়ে জিভে জল চলে এলো ।

"ঘষা বরফ" খেয়েই অমনি হৈ হৈ করে চলতো মেলায় চক্কর দেয়ার কাজ । প্রথমে আমরা কোনো স্টলেই ঢুঁ মারতাম না, জাস্ট মেলাটা একটি পাক মেরে রেকি করতাম । এরপরে এন্তার পাঁপড় খেতাম সব্বাই । পাঁপড় খেয়ে অমনি আবার জলতেষ্টা পেতো । তো চলো আবার "ঘষা বরফের দোকানে" । এরপর আমাদের স্টল পরিদর্শন শুরু হতো ।

প্রকান্ড এক ঠোঙা "জিলিপি" আর "সেদ্ধ ছোলা মাখা" নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম আমরা স্টল পরিদর্শনে । প্রথমেই যেতাম মাটির তৈরী পুতুল-হাতি-ঘোড়ার দোকানগুলিতে । অসম্ভব টান ছিল আমার এগুলির প্রতি । ঝটপট অনেকগুলি মাটির জীব জন্তু কিনে ফেলতাম, সাথে কিছু পুতুলও । এরপরে সেগুলো দোকানদারের কাছেই জিম্মা রেখে আমরা আবার বেরিয়ে পড়তাম স্টলগুলো দেখতে ।

এর মধ্যে খাওয়া তো চলছেই । মুখ-নাড়া বন্ধ হতো না আমাদের । ছাগলের মতো সারাক্ষন কিছু না কিছু চিবিয়েই যেতাম । জিলিপি শেষ হলে আইস-ক্রিম, ছোলা শেষ হলে সিঙ্গাড়া, বেগুনি, ফুলুরি, চপ এসব । হাত চটচটে হয়ে যেত জিলিপির রসে বা ছোলা-মাখা খেতে খেতে । হাত মোছার এক অভিনব উপায় বের হয়েছিল আমার উর্বর মস্তিষ্ক হতে । ভীড়ে যাকেই পেতাম তার জামায় মুছে নিতাম হাত । ভীড়ের মধ্যে কেউই টের পেতো না এসব।

মাটির হাতি ঘোড়া কেনা হলে আমাদের নেক্সট টার্গেট থাকতো বন্দুক-পিস্তল কিনতে । ছোট্টবেলায় প্রচুর খেলনা বন্দুক-পিস্তল কিনেছি । মাথায় ক্যাপ লাগানো হ্যামার টানা কাঠের বাঁট-ওয়ালা বন্দুক এবং টিনের পিস্তল কিনতাম এন্তার । টিনের পিস্তল গুলো খুবই শস্তা ছিল । বারুদের স্ট্রিপ প্যাঁচানো থাকতো এই টিনের পিস্তলের মধ্যে, ঠাস ঠাস করে গুলি মারতাম । ধোঁয়ায় ঢেকে যেতো চারিপাশ । আর কিনতাম ক্যাপ লাগানো প্লাস্টিকের রিভলবার । গুলি করলে এই ক্যাপ ছুটে বের হতো বারুদের বিস্ফোরণে । এগুলো বেশ দামি ছিল ।

বন্দুক-পিস্তল, গোলা বারুদ কেনা শেষ হলে যেতাম স্পোর্টস এর সরঞ্জাম কিনতে । ফুটবল, ক্রিকেট বল আর ব্যাট, স্ট্যাম্প কিনতাম দুই সেট । এরপরে সবাই হাতে হাতে জিনিসগুলি নিয়ে আবার স্টলগুলো পরিদর্শনে বের হতাম । এরপরে যেতাম ছবি স্টলে । বেছে বেছে কেনা হতো তেন্ডুলকরের, সৌরভের ছবি, আমি এ ছাড়াও কিনতাম রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীব জন্তুর ছবি আর নেতাজী সুভাষ চন্দ্রের কোনো না কোনো একটি ছবি । প্রত্যেক মেলায় নেতাজীর একটি ছবি কেনা হতোই । বন্ধুদের কেউ কেউ হিন্দু দেব-দেবীর ছবি কিনতো । কেউ কেউ আরো একটু সেয়ানা ছিল তারা কিনতো প্রীতি জিন্তা, ঐশ্বর্যা কিংবা কাজল-রানী এই সব বলিউডের অভিনেত্রীদের ছবি ।

এরপরে আমরা মিষ্টির দোকানে ভীড় করতাম । রসগোল্লা, ছানার জিলিপি, রাজভোগ এই সব খেয়ে চিনির ছাঁচের পুতুল কিনতাম অনেক - হাতি, ঘোড়া, রাজঁহাস এই সব । আবার ঘুরতাম স্টলে স্টলে । মেয়েদের সাজসজ্জার হরেক পণ্যের দোকান বসতো মেলার সিংহভাগ জুড়ে । সেসব স্টলেও ঢুঁ মারতাম আমরা । বাড়িতে মা-বোনদের জন্য কেনা হতো আলতা বা নেল পালিশ । আমি মায়ের জন্য নেলপালিশ কিনতাম ৩-৪ টা ।

এরপরে আবার খাওয়া দাওয়া হতো আরেক প্রস্থ । তারপরে একটু খোলা জায়গায় গিয়ে নাগরদোলা দেখতাম । আমি লাইফে কোনোদিনও নাগরদোলায় উঠিনি । ভীষণ ভয় করতো । বন্ধুদের কেউ কেউ উঠতো নাগরদোলায় । কেউ বমি করতো, কেউ কেউ ভয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দিতো । আবার কেউ কেউ আরো খতরনাক কাজ করতো - ভয়ে প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলে ।

পড়ন্ত বেলায় মেলায় গিয়ে ফিরতাম সন্ধ্যা শেষে । মেলা প্রাঙ্গনে পুজো মণ্ডপে বাজতো লতা, হেমন্ত, সতীনাথ আর অনুপ ঘোষালের গান । একটার পর একটা -- "এনেছি আমার শত জনমের প্রেম .....আঁখিজলে গাঁথা মালা....ওগো সুদূরিকা, আজও কী হবে না শেষ
তোমারে চাওয়ার পালা"..... আহা ! কি সব দিন ছিল । মনে পড়লে এখনো মন কেমন করে ওঠে ।


Sort:  
 3 years ago 

স্মৃতিগুলো এখনো খুবই স্পষ্ট। ছোটবেলায় মেলায় গিয়ে গরম গরম জিলাপি খাওয়া ছিল আমার অনেক বড় একটা আকর্ষণ। মেলায় গিয়ে জিলাপি না খেলে অপূর্ণই থেকে যেত । ছোটবেলায় সার্কাস দেখেছি অনেকবার। বড় হয়ে আর যাওয়া হয়নি।

ভীড়ে যাকেই পেতাম তার জামায় মুছে নিতাম হাত ।

ওরে দুষ্টুর ডিব্বা রেেেেে 😅😅

 3 years ago 

দাদা আমি কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম 🤗
প্রথমেই বলি আপনি মেলায় ঘুরে ঘুরে খাবার খাওয়ার গল্প করছিলেন আর আমার জিভে পানি চলে আসছিল 🤭 কি দুষ্টু আর ডানপিটে ছিলেন বোঝাই যাচ্ছে 😄 আর নাগর দোলায় কেউ কেউ উঠে বমি আর ছোট কাজ সেরে ফেলতো ব্যাপারটা ভীষণ মজার ছিল 🤭 আমারও নাগর দোলা বেশ ভয় লাগতো ছোট বেলায় 😄 আমি দু একবার মনে হয় উঠেছিলাম 🤗 আইসক্রিমের কথা মনে করিয়ে দিলেন দাদা। ছোট বেলায় মেলায় গিয়ে মালাই আইসক্রিমটা বেশি খেতাম, ভীষণ ভালো লাগতো।
দাদা আপনার এই পোস্টগুলো আমার ভীষণ ভালো লাগে।
ভালো থাকুন দোয়া সবসময়ই করি 🤲

 3 years ago 

কোথায় যেন হারিয়ে ফেললাম নিজেকে সকাল সকাল, সত্যি দাদা পোষ্টের লেখাগুলো পড়ে পুরনো অনুভূতিগুলো নতুনভাবে জেগে উঠলো আবার। হ্যা, হয়তো আপনার মতো গ্রাম্য মেলাগুলো অতোটা উপভোগ করতে পারি নাই, তবে আমি যেখানে বড় হয়েছি সেখানে বৈশাখী মেলাটা বেশ জমে উঠতো, ঘষা বরফকে আমরা ভিন্ন নামে চিনতাম, যদিও নামটা এই মুহুর্তে মনে আসছে না, তবে আমরা গ্লাসের পাশাপাশি পলিথিনে নিয়ে ঘুরতাম আর তার স্বাদ নিতাম। এছাড়াও নানা রকমের খাবার এর স্বাদ নেয়ার সুযোগ থাকতো। তখন কি আর এতো ভেজাল ছিলো, খোলা খাবারের মাঝেও একটা মান থাকতো! ধন্যবাদ

 3 years ago 

পলিথিনের প্যাকেটে বরফ আর সিরাপ ভরা রং বেরঙের জিনিসটা আমরাও খুবই উপভোগ করতাম মেলায় । আমরা ওটাকে বলতাম "পেপসি" । তখনকার তেলেভাজা বলুন আর মিষ্টি বলুন ভেজাল ছিলো না মোটেও । এখন তো খাঁটি জিনিস পাওয়াই দুষ্কর ।

 3 years ago 

প্রিয় দাদা, ঘুম থেকে উঠেই আপনার এতো সুন্দর একটি পোস্ট চোখে পড়লো, দাদা আপনার পোস্ট পরে আমিও ছোট বেলায় হারিয়ে গিয়েছিলাম, সত্যি আমিও ছোট বেলায় অনেক মেলায় গিয়েছিলাম মেলায় গেলেই আগে আমি টিনের পিস্তল গুলো কিনেছিলাম, এরপর সব বন্ধুরা মিলে সারা রাস্তায় ঠাস ঠাস করে ফুটা তাম, সত্যি দাদা ছোট বেলায় মেলায় কাটানো দিন গুলো অনেক সুন্দর ছিলো, আপনার পোস্ট পরে ছোট বেলার সব সৃত্মি চোখের সামনে ভেসে উঠলো দাদা, আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর সৃত্মিময় একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য, আপনার এবং আপনার পরিবারের অনেক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা রইলো প্রিয় দাদা।

 3 years ago 

হাত মোছার এক অভিনব উপায় বের হয়েছিল আমার উর্বর মস্তিষ্ক হতে । ভীড়ে যাকেই পেতাম তার জামায় মুছে নিতাম হাত । ভীড়ের মধ্যে কেউই টের পেতো না এসব।

😁😁😁😁সত্যিই দাদা আপনি ছোটবেলায় ভারী দুষ্টু ছিলেন । তা না হলে কি কেউ এত বড় সাহস করে!!! আমার হলে জীবনেও এত বড় সাহস হতো না। তবে যাই বলেন দাদা এটা কিন্তু বেশ ভাল একটা বুদ্ধি ছিল। কে বুঝবে কি করে ভিড়ের মধ্যে কার কার সাথে কে লাগে কেউ সেটা বুঝতে পারে!!
মেলায় গেলে আমারও মিষ্টি জাতীয় জিনিস খেতে খুব পছন্দ হয় দাদা ।জিলাপি ,মিঠাই ,রসগোল্লা বিভিন্ন জিনিস। ছোটবেলায় খেলনা পিস্তল দিয়ে আমি অনেক খেলেছি দাদা বেশ ভালো লাগতো। তবে আপনার বন্ধুদের মত আমিও নাগরদোলা চড়তে ভয় পেতাম 😂। সত্যি দাদা ছোটবেলার জীবনটা আসলেই অন্যরকম। তখন খুব হাসি আনন্দে জীবন পার হয়। আমারতো এখনি মনে হয় এটা একটা স্বপ্ন ছিল আমাদের ছোটবেলা টা। আপনার ছোটবেলা অনেক সুন্দর ও মজার ছিল বেশ ভালো লেগেছে দাদা গল্পটি পড়ে। অপেক্ষায় রইলাম আপনার পরবর্তী এমন কোন মজার গল্পের জন্য।

 3 years ago 

দাদা,আপনার পোস্ট টা পড়ে আমার ভালো লাগার পাশাপাশি হাসি পাচ্ছিলো।দাদা আপনার বরফ ঘষার কাহিনি পরে আমার ছোট বেলার বিভিন্ন রঙের পাইপ আইসক্রিম খেতাম আর জিভ রঙিন করতাম।হাত মোছার ব্যাপারটাও বেশ মজার ছিলো।আর নাগর দোলা ও বন্দুকের কথা কি বলবো।ভালো লাগলো কথা আমার ছোটবেলা কিছু মনে পড়ে গেলো।

 3 years ago 

ভীড়ে যাকেই পেতাম তার জামায় মুছে নিতাম হাত । ভীড়ের মধ্যে কেউই টের পেতো না এসব।

দাদা এই কাজটা আমিও কিন্তু ছোটবেলায় করেছি দু একবার। বেশিরভাগ স্কুল লাইফে করেছি। সব বন্ধুরা যখন টিফিন টাইমে খাওয়া দাওয়া করে হাত মোছার সময় হতো তখন সহপাঠী অথবা বন্ধুদের পিঠের উপরে হাত রেখে দিতাম। কোনভাবে হাতটা তাদের জামাই মুছে নিতাম তবে কখনো কখনো তারা টেরও পেয়ে যেত। তবে দাদা আপনারা বন্ধুদের গ্যাং মিলে দূর্গা পূজার মেলায় গিয়ে খুবই মজা করতেন। বিশেষ করে ছাগলের মতো চিবিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা বেশ মজার ছিল। দাদা মজার মজার স্মৃতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

হাত মোছার এক অভিনব উপায় বের হয়েছিল আমার উর্বর মস্তিষ্ক হতে । ভীড়ে যাকেই পেতাম তার জামায় মুছে নিতাম হাত । ভীড়ের মধ্যে কেউই টের পেতো না এসব।

গ্রাম্য মেলায় ঘুরতে গিয়ে আপনি অনেক মজা করেছেন ও আনন্দ করেছেন এটা বোঝাই যাচ্ছে। আসলে ছেলেবেলার সেই শৈশবের স্মৃতি গুলো আজও মনে পড়ে। তবে খাওয়ার পর ভিড়ের মাঝে অন্যের জামায় হাত মোছার অভিনব কায়দাটি কিন্তু দারুন ছিল। আমিও আপনার মত এই কায়দাটি অবলম্বন করেছি অনেকবার। তবে সেটা ভিড়ের মধ্যে বা মেলায় নয়। যখন স্কুলে কোন খাবার খাওয়ার পর হাত মোছার প্রয়োজন হতো তখন কোনো এক বান্ধবীর ওড়না দিয়ে আলতো করে মুছে দিতাম। আজকে আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লেগেছে দাদা। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা মেলায় ঘুরতে যাওয়ার স্মৃতি গুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 3 years ago 

হাত মোছার এক অভিনব উপায় বের হয়েছিল আমার উর্বর মস্তিষ্ক হতে । ভীড়ে যাকেই পেতাম তার জামায় মুছে নিতাম হাত।

দাদা।এই বুদ্ধি টা কিন্তু দারুন ছিল হাত মোছার জন্য ভিড়ের মধ্যে মানুষের কাপড়ে মুছে নিজের হাত পরিষ্কার করে ফেলতেন🤭 দাদা, সত্যি কথা বলতে কি সোনালী অতীত গুলো প্রতিটা মানুষের মনের মধ্যে দোলা দেয়। যেমন আপনার মনের মধ্যে এ পোস্টটি লেখার সময় দোলা দিচ্ছিল আর মন চাইছিল ঐ ছোট বেলার জীবনে ফিরে যেতে তাই না দাদা?
দাদা, ছোটবেলায় আপনি চঞ্চল প্রকৃতির ছিলেন।মেলায় গেলে আপনি হরেক রকমের জিনিস কিনতেন আবার মেয়েদের প্রসাধনীও কিনতেন আপনার মায়ের জন্য খুবই ভালো লেগেছে পড়ে। দাদা, আপনার ছোটবেলার মজার স্মৃতির পুরোটা পোস্ট পড়ছিলাম আর মুচকি মুচকি হাসছিলাম আমাদের প্রিয় দাদা এত চঞ্চল প্রকৃতির মানুষ ছিল যা ভাবতেও অবাক লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা, এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।।

আপনার এই পোস্টে কমেন্ট করতে এসে কিছুটা বিপদে পড়েছি। আসলে কোন বিষয় নিয়ে কথা বলব আর কোনটা ছেড়ে দেবো সেটাই বুঝতে পারছি না। আপনার এই পোস্ট থেকে শৈশবের অনেকগুলো স্মৃতি একসাথে চোখের সামনে ভেসে উঠলো। তবে আপনাদের মেলার কেনাকাটা ছিল রীতিমতো বাদশাহী। দেখছি প্রচুর কেনাকাটা করতেন আপনারা। আর পাঁপড় না খেলে তো মেলায় যাওয়া বৃথা মনে হতো। আমাদের অবশ্য এত কিছু কেনা হতো না। তবে ছোটবেলায় খেলনা কেনার প্রতি ঝোঁক খাদ্য মেলা থেকে। তবে গ্রাম বাংলার যে মেলা গুলি আমরা ছোটবেলা থেকে দেখেছি সেটার অনেক কিছুর সাথে আপনাদের মেলার মিল ছিলো দেখছি। ছোটবেলায় আমিও আপনার মত প্রচুর বন্ধু পিস্তল কিনেছি। বিশেষ করে টিনের পিস্তলের কথা এখনো মনে পড়ে। বারুদের স্ট্রিপ দেয়া থাকতো এবং বেশ শব্দ হোতো গুলি করলে। আমাদের এখানে মেলায় আপনাদের ওই বরফের গোলাটা পাওয়া যেতো না। বাদবাকি সব দেখছি প্রায় একই রকম। আর শেষে আপনি এমন একটা গানের উল্লেখ করেছেন যে গানটা আমার অত্যন্ত প্রিয় একটি গান। এই গানটা যখনি শুনি মনটা জানি কেমন হয়ে যায়। ধন্যবাদ দাদা আপনাকে এতগুলো শৈশবের স্মৃতি একসাথে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.34
JST 0.034
BTC 111531.25
ETH 4309.13
SBD 0.82