মন্তব্য কি গন্তব্য ঠেকাতে পারে?||আমার চিন্তা ভাবনা
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী। আশা করি সবাই ভাল আছেন? আমিও ভালই ছিলাম। কিন্ত কাল একটি নিউজ শোনার পর থেকে কিছু জিনিস আমাকে খুব ভাবাচ্ছে। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথেও জিনিস গুলো শেয়ার করে নেওয়া যাক।
আমরা মানুষ।অন্য প্রানীদের থেকে আমারের এগিয়ে থাকার প্রধান কারন আমাদের মস্তিষ্ক আর আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য ভাষার ব্যবহার।এই ভাষা আর মস্তিষ্ক যেমন নতুন নতুন জিনিস সৃষ্টি করতে পারে তেমনি এর ধ্বংস ক্ষমতাও মারাত্মক।
একটি মুখের কথার কত দাম হতে পারে তা ভালভাবে বোঝার জন্য সাধারণ একটি উদাহরণ দেই।আমেরিকা পৃথিবীর অন্যতম পারমাণবিক শক্তিধর একটি দেশ।প্রেসিডেন্ট শুধুমাত্র লঞ্চ বলার সাথে সাথে পারমাণবিক ওয়ারহেডবাহী মিসাইল ছুটে যাবে টার্গেট এর দিকে।শুরু হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।এখন বুঝুন কথার ক্ষমতা।
এখন আপনাদের মনে হতে পারে, ভাষা নিয়ে এত বকবক করতেছি কেন।কারন আছে,আপনারা সবাই জানেন কিছুদিন আগে এদেশেরই এক দম্পতির বিয়ে অনেক ভাইরাল হয়।এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যদি দম্পতির একজন বিদেশি হত তাও না হয় ভাইরাল হওয়ার কারন ছিল, কিন্তু ছেলে মেয়ে এদেশের তাও কেন ভাইরাল হল?
কারন ছিল, পাত্রীর বয়স পাত্রের থেকে বেশি।ব্যস যেই খবর প্রকাশিত হল সাথে সাথে বাংগালীরা লুফে নিল।কেউ পক্ষে,কেউ বিপক্ষে।কেউ ভাল কথা বলতেছে আবার কেউ ধুয়ে দিচ্ছে।প্রত্যেকটি প্রথমসারির মিডিয়া সংবাদ পত্র এই সংবাদ প্রচার করা শুরু করে।অনেকে তো বিষয় টা কয়েকধাপ এগিয়ে নিয়ে ট্রল শুরু করে।ফলাফল সেই ভদ্রমহিলা আত্মহত্যা করেছেন।
এরপর আত্মহত্যার খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেও মানুষ আবার ২ভাগে ভাগ হয়ে যায়।কেউ ট্রলকারী দের দোষ দিচ্ছে,আবার কেউ তাদের সাপোর্ট দিচ্ছে।সাপোর্টার দের যুক্তি তারা জানেই যে এরকম বিয়ে করলে ট্রল হতে হবে তারপরেও করেছে এখন কথা তো সহ্য করতেই হবে।
এখন আপনার মাথায় প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে দেশের সবার মত প্রাকশের অধিকার আছে।তারা তাদের মত প্রকাশ করেছে উনি কেন আত্মহত্যা করলেন?
হ্যা এটা সত্য যে আপনার মত প্রকাশের অধিকার আছে কিন্তু সেটা অন্যকারো ব্যক্তিগত বিষয়ে করার অধিকার নাই।কে কাকে বিয়ে করল,কার সাথে প্রেম করল সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যপার।সেটাতে আপনার মন্তব্য করার অধিকার নেই। এখানে মন্তব্য করা মানে আপনি অপরাধী।আপনি যদি বলেন তারা তো জানত ট্রলের শিকার হবে তারপরেও করল কেন?
আপনি কেন তার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ট্রল করবেন? আপনার কি অধিকার আছে অন্যকে জাজ করার।তার নিজের জীবনের ডিশিসান তিনি নিজে নেবেন।আপনার করা খারাপ মন্তব্য একজনের জীবন নরক বানানোর জন্য যথেষ্ট।দেখুন এক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু ডেকে আনল।
ঈশ্বর আমাদের মুখ দিয়েছেন তার মানেই যে আমাদের সব নিয়ে মন্তব্য করতে হবে? সবার জীবনের পছন্দ গুলো কেন এক হতে হবে? আমি ব্যতিক্রম সিদ্ধান্ত নিতেই পারি তাই বলে কারো অধিকার নেই আমাকে নিয়ে নেগেটিভ মন্তব্য করার যতক্ষণ না পর্যন্ত তা অপরাধের পর্যায়ে পরে।
আসুন আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর সমাজ গড়ি।যেখানে কোন নেগেটিভিটি থাকবে না।কোন কাজ করার আগে ভাবতে হবে না "লোকে কি বলবে?"। যেখানে মানুষ তার নিজের পছন্দমত জীবন যাপন করতে অস্বস্তি বোধ করবে না।
পরিবর্তন শুরু করতে হবে আপনার আমার থেকেই।আমরা নিজেরা ঠিক,হই পরিবার বন্ধুবান্ধবদের ঠিক করি তবেই একসময় এই সমস্যা থেকে আমরা বেড়িয়ে আসতে পারব।
মুখের কথা কে তুলনা করা হয় বন্ধুকের গুলির সাথে। বলা হয় "মুখের কথা আর বন্ধুকের গুলি বের হয়ে গেলে আর ফেরত আসে না"। তবে আমরা বন্ধুকের গুলির ভয়াবহতা উপলব্ধি করলেও মুখের কথাও যে কারো প্রাণ নাশের কারণ হতে পারে তা হয়তো কখনো উপলব্ধি করতেই পারিনা। বাক স্বাধীনতার নামে কাউকে তো এমন তীব্র বাক্য বাণে জর্জরিত করা যায় না, যা কাউকে তার মুল্যবান জীবনকে নরক বানিয়ে দিতে পারে।
এই ঘটনা থেকে অন্ততপক্ষে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ। আরেকটু সচেতনতার সাথে কারো বিষয়ে সমালোচনা করা উচিৎ।
আমার তো মনে হয় সমালোচনারই দরকার নেই।ধন্যবাদ আপু।সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
অনেক সুন্দর একটি মোটিভেশনাল পোস্ট করেছেন। পড়ে ভালো লাগলো। আমাদের সকলেরই উচিত পরনিন্দা করা থেকে বেরিয়ে আসা। ধন্যবাদ আপনার মোটিভেশনাল পোষ্টের জন্য।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে মোটিভেট করার জন্য।
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, মন্তব্য কখনো কারো গন্তব্য ঠেকাতে পারে না। ধরুন আমার চেষ্টা আছে কিন্তু পাশে পাঁচে লোকে কিছু বলে এমন অনেকেই মন্তব্য করতে পারে কিন্তু সে মন্তব্য দিকে কান দিলে হবে না সত্যিই অনেক জ্ঞানমূলক একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর কমেন্ট করার জন্য
খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছো তোমার মনের কথা গুলো, এই ঘটনা দেখে আমাদের মতো অসভ্য সমাজের লজ্জা হওয়া উচিত, একটা মানুষ তার জীবনকে কিভাবে তৈরি করবে সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার সেখানে কি আমাদের নাক না গলালে চলে না,আমার মনে হয় প্রথম যে এই খবর টি প্রচার করেছে তার সবার আগে শাস্তি হওয়া দরকার, কথা এমন একটা জিনিস যা দিয়ে মানুষকে জুতা মারা যায় কথা খুবই খারাপ জিনিস। ধন্যবাদ।
একদম ঠিক বলেছেন কাকিমা।