নীলসাগর দিঘির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আকর্ষণ
নীলসাগর
নীলসাগর একটি ঐতিহাসিক দিঘি, যা বর্তমানে নীলফামারী জেলা সদর থেকে উত্তর - পশ্চিম কোণে ১৪ কিঃ মিঃ দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত । মনে করা হয়, ঐতিহাসিক বৈদিক রাজা বিরাট এই দিঘি খনন করেন এবং তা বিরাট দিঘি হিসেবে পরিচিত ছিল । পরবর্তীকালে বিন্না দিঘি নামেও পরিচিতি পায় । স্বাধীনতার পর নীলসাগর নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে এবং বর্তমানে এখানে ব্যাপক সংস্কার করে ভ্রমণ পিপাসুদের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে । প্রতি বছর শীত মৌসুমে অসংখ্য অতিথি পাখির সমাগম ঘটে এই নীলসাগরে ।
অবস্থান
সদর উপজেলার জিরো পয়েন্ট চৌরঙ্গী মোড় থেকে উত্তর - পশ্চিম দিকে ১৪ কিঃ মিঃ দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোবাডাঙ্গা মৌজায় ৫৩.৯০ একর জমির ওপর নীলসাগরের অবস্থান । এর জলভাগ ৩২.৭০ একর এবং চারদিকের পাড়ের জমির পরিমাণ ২১ একরের মতো ।
ইতিহাস
আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীর কোনো এক সময়ে এ জলাশয়টির খননকাজ শুরু হয়েছিল । নীলসাগর 'বিরাট দিঘি' ও 'বিন্না দিঘি' নামেও পরিচিত ছিল । হিন্দু শাস্ত্র মতে, খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম হতে নবম শতাব্দীতে পান্ডবরা কৌরবদের চক্রান্তের শিকার হয়ে ১২ বছরের বনবাস ও ১ বছরের অজ্ঞাতবাসে যেতে বাধ্য হন এবং মৎস্য দেশের রাজা বিরাটের রাজধানীর এ স্থানটিতে ছদ্মবেশে বসবাস শুরু করেন । মনে করা হয়, সে সময় নির্বাসিত পান্ডবদের তৃষ্ণা মেটাতে বৈদিক রাজা বিরাট এ দিঘিটি খনন করেছিলেন । বিরাট দিঘির অপভ্রংশ হিসেবে কালক্রমে এ দিঘিটি বিরাট দিঘি, বিল্টা দিঘি, বিন্না দিঘি এবং অবশেষে নীলসাগর নামে পরিচিত লাভ করে । কারো কারো মতে, রাজা বিরাট তাঁর বিশাল গরুর পালের জন্য পানির সংস্থান করতেই এ দিঘি খনন করেন এবং তার কন্যা বিন্নাবতীর নামে এর নামকরণ করেন । পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে নীলফামারীর তৎকালীন মহকুমা প্রসাশক ও অবসর প্রাপ্ত সচিব এম. এ. জব্বার কর্তৃক এই দিঘি পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় ও নীলফামারীর নামানুসারে বিন্না দিঘির পরিবর্তে এর নামকরণ কা হয় নীলসাগর ।
নীলসাগরের আকর্ষণ
প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের জন্যই মূলত নীলসাগর বিখ্যাত । এর পাড়ে রয়েছে নারকেল, বনবাবুল, আকাশমণি, মেহগনি, শিশুসহ অজানা - অচেনা হরেকরকম ফুল ও ফলের সারি সারি বৃক্ষরাজি । শীতকালে বিভিন্ন দেশের রাজহাঁস, মার্কেঞ্জার, মাছরাঙ্গা, ভুবনচিল, সবুজ চান্দি ফুটকি, বাচান নীল ফুটকি ইত্যাদি প্রায় ৬৫ টি প্রজাতির বিদেশি পাখির সমাগম ঘটে এই এতিহ্যবাহী নীলসাগরে । এছাড়াও রয়েছে শিশুদের জন্য ছোট একটি পার্ক । ১৯৯৮ সালে এ এলাকাকে পাির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয় ।
এখানে প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সনাতন (হিন্দু) সম্প্রদায় বারুণী স্নান উৎসবের আয়োজন করে থাকে । দিঘির পাশেই সরকারের অনুদানে একটি রেস্ট হাউজ স্থাপন করা হয়েছে ।
Congratulations @shah95! You have completed the following achievement on the Steem blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Click here to view your Board
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
You got a 65.79% upvote from @brupvoter courtesy of @shah95!
You got a 19.88% upvote from @dailyupvotes courtesy of @shah95!
@dailyupvotes is the only bot with guaranteed ROI of at least 1%
Thanks for using @edensgarden!
You got a 71.43% upvote from @joeparys! Thank you for your support of our services. To continue your support, please follow and delegate Steem power to @joeparys for daily steem and steem dollar payouts!