নীলসাগর দিঘির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আকর্ষণ

in #busy5 years ago

নীলসাগর
নীলসাগর একটি ঐতিহাসিক দিঘি, যা বর্তমানে নীলফামারী জেলা সদর থেকে উত্তর - পশ্চিম কোণে ১৪ কিঃ মিঃ দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত । মনে করা হয়, ঐতিহাসিক বৈদিক রাজা বিরাট এই দিঘি খনন করেন এবং তা বিরাট দিঘি হিসেবে পরিচিত ছিল । পরবর্তীকালে বিন্না দিঘি নামেও পরিচিতি পায় । স্বাধীনতার পর নীলসাগর নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে এবং বর্তমানে এখানে ব্যাপক সংস্কার করে ভ্রমণ পিপাসুদের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে । প্রতি বছর শীত মৌসুমে অসংখ্য অতিথি পাখির সমাগম ঘটে এই নীলসাগরে ।

অবস্থান
সদর উপজেলার জিরো পয়েন্ট চৌরঙ্গী মোড় থেকে উত্তর - পশ্চিম দিকে ১৪ কিঃ মিঃ দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোবাডাঙ্গা মৌজায় ৫৩.৯০ একর জমির ওপর নীলসাগরের অবস্থান । এর জলভাগ ৩২.৭০ একর এবং চারদিকের পাড়ের জমির পরিমাণ ২১ একরের মতো ।

ইতিহাস
আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীর কোনো এক সময়ে এ জলাশয়টির খননকাজ শুরু হয়েছিল । নীলসাগর 'বিরাট দিঘি' ও 'বিন্না দিঘি' নামেও পরিচিত ছিল । হিন্দু শাস্ত্র মতে, খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম হতে নবম শতাব্দীতে পান্ডবরা কৌরবদের চক্রান্তের শিকার হয়ে ১২ বছরের বনবাস ও ১ বছরের অজ্ঞাতবাসে যেতে বাধ্য হন এবং মৎস্য দেশের রাজা বিরাটের রাজধানীর এ স্থানটিতে ছদ্মবেশে বসবাস শুরু করেন । মনে করা হয়, সে সময় নির্বাসিত পান্ডবদের তৃষ্ণা মেটাতে বৈদিক রাজা বিরাট এ দিঘিটি খনন করেছিলেন । বিরাট দিঘির অপভ্রংশ হিসেবে কালক্রমে এ দিঘিটি বিরাট দিঘি, বিল্টা দিঘি, বিন্না দিঘি এবং অবশেষে নীলসাগর নামে পরিচিত লাভ করে । কারো কারো মতে, রাজা বিরাট তাঁর বিশাল গরুর পালের জন্য পানির সংস্থান করতেই এ দিঘি খনন করেন এবং তার কন্যা বিন্নাবতীর নামে এর নামকরণ করেন । পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে নীলফামারীর তৎকালীন মহকুমা প্রসাশক ও অবসর প্রাপ্ত সচিব এম. এ. জব্বার কর্তৃক এই দিঘি পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় ও নীলফামারীর নামানুসারে বিন্না দিঘির পরিবর্তে এর নামকরণ কা হয় নীলসাগর ।

নীলসাগরের আকর্ষণ
প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের জন্যই মূলত নীলসাগর বিখ্যাত । এর পাড়ে রয়েছে নারকেল, বনবাবুল, আকাশমণি, মেহগনি, শিশুসহ অজানা - অচেনা হরেকরকম ফুল ও ফলের সারি সারি বৃক্ষরাজি । শীতকালে বিভিন্ন দেশের রাজহাঁস, মার্কেঞ্জার, মাছরাঙ্গা, ভুবনচিল, সবুজ চান্দি ফুটকি, বাচান নীল ফুটকি ইত্যাদি প্রায় ৬৫ টি প্রজাতির বিদেশি পাখির সমাগম ঘটে এই এতিহ্যবাহী নীলসাগরে । এছাড়াও রয়েছে শিশুদের জন্য ছোট একটি পার্ক । ১৯৯৮ সালে এ এলাকাকে পাির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয় ।

এখানে প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সনাতন (হিন্দু) সম্প্রদায় বারুণী স্নান উৎসবের আয়োজন করে থাকে । দিঘির পাশেই সরকারের অনুদানে একটি রেস্ট হাউজ স্থাপন করা হয়েছে ।

Sort:  

Congratulations @shah95! You have completed the following achievement on the Steem blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

You received more than 4000 upvotes. Your next target is to reach 5000 upvotes.

Click here to view your Board
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

You can upvote this notification to help all Steemit users. Learn why here!

You got a 65.79% upvote from @brupvoter courtesy of @shah95!

You got a 19.88% upvote from @dailyupvotes courtesy of @shah95!

@dailyupvotes is the only bot with guaranteed ROI of at least 1%

You got a 71.43% upvote from @joeparys! Thank you for your support of our services. To continue your support, please follow and delegate Steem power to @joeparys for daily steem and steem dollar payouts!

Coin Marketplace

STEEM 0.29
TRX 0.11
JST 0.033
BTC 63901.15
ETH 3133.40
USDT 1.00
SBD 4.05