Bird Photography Part 007 /পাখির ফটোগ্রাফি পার্ট ০০৭

in #photography6 years ago

হ্যালো বন্ধুরা আবারো নিয়ে আসেছি পাখির ফটোগ্রাফি সপ্তম পার্ট
image
source
আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টিকৌশলের এক মহানিদর্শন অনিন্দ্যসুন্দর ও পরম আকর্ষণীয় পক্ষিকুল। আকাশে ডানা মেলে পাখিরা উড়ে বেড়ায় এবং নিজস্ব ভাষা ও পদ্ধতিতে সৃষ্টিকর্তার গুণগান করে। পক্ষিকুল মানবজাতির উপকারী, পরিবেশবান্ধব এবং পৃথিবীর সৌন্দর্যের একটি প্রতীক। পাখিরা প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষা করে। যখন দল বেঁধে চক্রাকারে পাখিরা আকাশে চক্কর দেয় এবং কিচিরমিচির শব্দ করে ঘুরে বেড়ায়, তখন কলকাকলির এমন দৃশ্যাবলি দেখে মানুষ চরম আনন্দে বিমোহিত হয়। অন্যসব প্রাণীর মতো পাখিরাও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা জানে এবং নিজ নিজ ভাষার পদ্ধতি জ্ঞানে তা পালন করে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘তুমি কি দেখো না যে আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে যারা আছে, তারা এবং উড্ডীয়মান পক্ষিকুল তাদের পাখা বিস্তার করে আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেই জানে তার প্রার্থনার এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার পদ্ধতি। তারা যা করে আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত।’ (সূরা আন-নূূর, আয়াত: ৪১) আল্লাহর নবী হজরত সুলায়মান (আ.)-কে পাখিদের ভাষা শিক্ষা দেওয়ার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘সুলায়মান হয়েছিল দাউদের উত্তরাধিকারী এবং বলেছিল, ‘হে মানুষ! আমাকে পাখিকুলের ভাষা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে...এটা অবশ্যই সুস্পষ্ট অনুগ্রহ।’ (সূরা আন-নাহল, আয়াত: ১৬)
আল্লাহ তাআলা পক্ষিকুলকে বায়ুমণ্ডলে স্থির থাকার মতো করে সৃষ্টি করেছেন। বাতাসে ভর দেওয়া এবং এতে সন্তরণ করে বিচরণ করার জন্য তাদের পাখা বিস্তার ও সংকোচনের মাধ্যমে তিনি বায়ু নিয়ন্ত্রণ করার কলাকৌশলের জ্ঞান দিয়েছেন। বায়ুমণ্ডলের মধ্যে এই যোগ্যতা সৃষ্টি করা, যেমন পাখা তৈরি করা ও ডানার মাধ্যমে বায়ু নিয়ন্ত্রণ করার নৈপুণ্য শিক্ষা দেওয়া, এসব আল্লাহর অপার শক্তিরই ফলশ্রুতি।
তাই উড়ন্ত পাখিকে আকাশে স্থির রেখে এর প্রমাণ তিনি পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তারা কি লক্ষ করে না, তাদের ঊর্ধ্বদেশে পক্ষিকুলের প্রতি, যারা পাখা বিস্তার করে ও সংকুচিত করে? দয়াময় আল্লাহই তাদেরকে স্থির রাখেন; নিশ্চয়ই তিনি সর্ববিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।’ (সূরা মূলক, আয়াত: ১৯)
পৃথিবীতে আল্লাহর অপার মহিমা ও প্রশংসা বর্ণনাকারী অগণিত পাখির বসবাস। নানা বর্ণ ও বহু প্রজাতির পাখির মধ্যে জলচর, স্থলচর এবং উভচর পাখি রয়েছে। কিছু কিছু পাখি বাড়িঘরের আঙিনায় বাস করে; যেমন চড়ুই, টুনটুনি, কবুতর প্রভৃতি। কতক পাখি বাড়ির আশপাশে বন-জঙ্গলে বাস করে; যেমন দোয়েল, কোকিল, শালিক, শ্যামা, বুলবুলি, ঘুঘু, ডাহুক, কাক, চিল, ইগল ইত্যাদি আরও অনেক প্রকার পাখি বিরাজমান। অধিকাংশ পাখিই জলাভূমিতে খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় এবং নদনদীতে ভেসে বেড়ায়। পাখিরা পৃথিবীব্যাপী চলাফেরা করে। পাখিদের কোনো যানবাহনের প্রয়োজন হয় না। আল্লাহ প্রদত্ত শক্তি ও পাখার সাহায্যে সারা দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহর নিদর্শনস্বরূপ পাখি বা বিহঙ্গকুলের কথা বলা হয়েছে, ‘তারা কি লক্ষ করে না আকাশের শূন্যগর্ভে নিয়ন্ত্রণাধীন পাখিদের প্রতি? আল্লাহই তাদের স্থির রাখেন। অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে মুমিন সম্প্রদায়ের জন্য।’ (সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৭৯)
মানুষের জীবন রক্ষার্থে গৃহপালিত পাখিকে জবাই করে খাওয়ার জন্য আল্লাহর নির্দেশনা রয়েছে বটে, কিন্তু বনের পাখিদের অহেতুক কষ্ট দিয়ে লালন-পালন করতে নিষেধ করা হয়েছে। একবার একজন সাহাবি একটি পাখির ছানা হাতে নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে আসেন। ছানাটিকে দেখে মা পাখিটি তার চতুর্দিকে ঘুরতে লাগল। তখন মহানবী (সা.) বললেন, ‘যাও, ছানাটি যেখানে ছিল সেখানে রেখে এসো।’ হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে উল্লেখ আছে যে তিনি বলেন, আমরা কোনো এক সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। এক জায়গায় আমরা একটি চড়ুই পাখিকে দুটি বাচ্চাসহ দেখতে পেলাম। আমরা বাচ্চা দুটিকে হাতে তুলে নিলাম। ফলে মা পাখিটি অস্থির হয়ে আমাদের মাথার ওপর ঘোরাঘুরি করতে লাগল। নবী করিম (সা.) তখন বললেন, ‘বাচ্চা ছিনিয়ে নিয়ে কে তাকে কষ্ট দিয়েছে? তার বাচ্চা তাকে ফিরিয়ে দাও।’ (আবু দাউদ)
বাংলাদেশে নানা প্রজাতি ও নানা রঙের বহু পাখির বাস থাকা সত্ত্বেও ঋতুর বিবর্তনে বিশ্বের শীতপ্রধান দেশ থেকে অসংখ্য অতিথি পাখির আগমন ঘটে। ঝাঁকে ঝাঁকে শীতের অতিথি পাখি ডানা ঝাপটে প্রাকৃতিক জলাশয়গুলোতে ক্ষণস্থায়ী আবাস গড়ে তোলে। প্রচণ্ড শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার এবং জীবন বাঁচানোর জন্য অতিথি পাখিরা খাদ্যের অন্বেষণে এ দেশে আসে। এটাও আল্লাহর কুদরতেরই একটি নিদর্শন। তাই এসব অতিথি পাখির প্রতি ভালোবাসা, সদয়-সুন্দর ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি সেবা প্রদর্শনেরই একটি অংশ। পাখপাখালিকে অহেতুক হত্যা করা বা শিকার করা ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যায় এবং প্রচলিত আইনেও দণ্ডনীয় অপরাধ। পাখপাখালির জীবন রক্ষা করে পাখিদের লালন-পালন প্রশংসনীয় ও পুণ্যের কাজ। মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য হাঁস-মুরগি, কবুতরের গোশত ও ডিম উপাদেয় খাদ্য হিসেবে প্রচুর উপকার সাধন করে। তাই পাখিদের বিশেষভাবে যত্ন নেওয়া এবং তাদের প্রতি উত্তম আচরণ ও সদয় ব্যবহার করা ধর্মীয় অনুশাসনে অপরিহার্য; তবে প্রয়োজনে তাদের ভোগ করা যাবে, যেভাবে ইসলামের দিকনির্দেশনা রয়েছে।
সকল প্রকার সৃষ্টিসহ পাখিদের প্রতি ভালোবাসা, সদয় ব্যবহার ও দয়া প্রদর্শন করা ইসলামের বিধান। যারা অবুঝ-অবলা পাখিদের প্রতি দয়া করবে না, আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করবেন না। অতিথি পাখিদের প্রতি অবিবেচক ও অশোভন আচরণ করলে এবং শিকার বা বধ করলে এর জন্য পরকালে কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। পাখিদের প্রতি সদয় হয়ে তাদের ফরিয়াদ থেকে বাঁচার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় অতিথি পাখিদের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদানসহ আল্লাহর সব সৃষ্টির প্রতি সদয় ব্যবহার এবং দয়া প্রদর্শন করা মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব ও অবশ্যকর্তব্য
source
image
source


👎💜👎
please follow
& upvote @tanisha786

Sort:  

Beautiful picture selections...

You are welcome dear

This post has received a 1.24 % upvote from @booster thanks to: @tanisha786.

Coin Marketplace

STEEM 0.25
TRX 0.11
JST 0.032
BTC 61618.64
ETH 3009.45
USDT 1.00
SBD 3.78