AWESOME STORY: - RAIN WET NIGHT.......,,,,

in #super6 years ago (edited)

ra.1.jpg

বৃষ্টি ভেঁজা রাত.......
লেখাটা কিছুটা কল্পনা প্রসূত এবং বাকিটুকু সত্যি।
পুরা গল্পটা পড়ুন, কথা দিচ্ছি ভালো লাগবেই।...........

বৃষ্টি ভেঁজা রাতের অপরূপ দৃশ্য আপনারা কেও কখনো উপলব্ধি করেছেন? যদি এখনো কেও না করে থাকেন তাহলে একটার বার নিজের চোখে দেখার চেষ্টা করুন. কথা দিচ্ছি ভালো লাগবেই. যদিও বৃষ্টিতে ভিজে যদি আপনার অসুখ হয় তবে সেইজন্য কিন্তু আমি কোনো ভাবেই দায়ী নই. এই রিস্ক টা আপনাদের নিতেই হবে যদি প্রকৃতির আসল সোন্দর্য্য উপভোগ করতে চান.

যাহোক এখন আসি আমার গত রাতের কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করার অভিপ্রায় নিয়ে আজকের এই পোস্টটি লেখা.....
আজ অনেক দিন ধরে তা ও প্রায় তিন বছর এর কাছাকাছি হবে হয়তো একটু রাত হলেই আমি কেন যেন বাসায় থাকতে পারি না. কোনো এক অদৃশ্য শক্তি আমায় জোর করে বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য টানাটানি করে. এভাবেই আমার প্রতিটা দিনের রুটিন সেট করা হয়. সেটা যতই ঝড়, বৃষ্টি, তুফান, ঠান্ডা যাই হোক না কেন রাতে আমার বাইরে থাকতেই হয়. কাল রাতে ও এর ব্যতিক্রম হয়নি......

আজকে দুই মাস ধরে একটা সমস্যায় পড়ে গেলাম. এখন রাতে বের হলে আমাকে একটা না একটা মিথ্যা কথা বলতে হয় আমার একজন নতুন খুঁজে পাওয়া কাছের মানুষকে। যদিও বুঝতে পারছেন নতুন মানুষ খুঁজে পাওয়ার বর্তমানে সবচেয়ে সহজ মাধ্যম কোনটি?
কাল বিকাল চারটা থেকে আমি পরীর সাথে চ্যাট করছিলাম, তার সাথেই চ্যাট করার সময়টাতে মনে হয় সময়টা যেন নরমাল গতিতে না যাইয়া অনেকটা যেন আলোর বেগের চেয়েও দ্রুততটার সাথে শেষ হইয়া যাচ্ছে. আমাদের চ্যাট করার বেশিরভাগ সময় যাই ঝগড়া ঝগড়া করতে. কাল ও তার ব্যতিক্রম হয়নি. সন্ধ্যা ছয়টার পর থেকে আমার আর কোনো ভাবেই মন চাচ্ছিলো না চ্যাট করার জন্য. কিন্তু পরীর ও নাছোড় বান্ধা উপযুক্ত কারণ না দেখিয়ে ছাড়বে না এখনই. তাই আমি ইচ্ছে করেই তার সাথে তুমুল ঝগড়া বাধিয়ে রাগ করে অনলাইন থেকে বার হইয়া যাই. এমনি রোজ রোজ করতে হয়. তখন সেই কল্পনা করে আমি হয়তো রাগ করেই চলে গেছি অনলাইন থেকে. কিন্তু বাস্তবতা হলো তার সাথে ঝগড়া করাটা হলো উছিলা যেন আমি বাইরে চলে যেতে পারি.

ra.3.jpg

কাল রাতে প্রচুর বৃষ্টি হলো ঢাকা শহরে. আমি বৃষ্টির জ্যাকেট পরে আমার প্রিয় বাইকটা নিয়ে বার হলাম বাসা থেকে. আমার বাসাটা অনেকটা পাহাড়ের উপরেই বলা যাই. যদিও ঢাকা শহরে পাহাড় খুঁজে পাওয়ার আর উলুবনে মুক্ত ছড়ানোর মতোই. তবু আমার চোখে আমার বাসাটা পাহাড়ের উপরে. কারণ সেখানে যতই বৃষ্টি হোক না কেন কখনো পানি দেখা যাবে না, বৃষ্টির পানি গুলা নিমিষেই কোথায় যেন হাওয়া হইয়া যাই.
যাহোক আমি আমার বাসার রাস্তা ক্রস করে আসতেই দেখা মিললো আসল ঢাকা শহরের বাস্তব চেহারা। পুরা রাস্তা ঘাট পানিতে থৈ থৈ করছে. মনে হচ্ছে যেন বুড়িগঙ্গা নদীটা হটাৎ করে বড় হইয়া পুরা ঢাকা শহরটা যেন বুড়িগঙ্গা নদী হইয়া গেছে। আমি অবাক হইয়া বুড়িগঙ্গার দৃশ্য কল্পনা করতে করতে রিকশার টুং টুং আওয়াজে আমার হুশ ফিরে আসলো.
আমি এখনো বাইকেই বসে আছি. কোনো দিকে ড্রাইভ করবো বুজতে পারছিলাম না. কারণ পুরা রাস্তা জুড়েই শুধু পানি আর পানি. মনে হচ্ছে একটা নৌকা থাকলে কত মজা হতো. নৌকা চালাতে আমার এমনিতে অনেক ভালোই লাগে. আর যদি ঢাকা শহরের রাস্তায় নৌকা চালানো যেত তবে কতই না মজা হতো.

ra.2.jpg

আস্তে আস্তে বাইকটা নিয়ে সামনে এগোতে থাকলাম এবং মনে মনে ভয়ও পাচ্ছিলাম সামনে যদি কোনো ম্যানহোল এর ঢাকনা খোলা থাকে তবে তো আর রক্ষা নাই, নিশ্চিত ম্যানহোল দিয়া ঢাকা শহরের মাটির নিচ দিয়া ভিন্ন এক শহরে আমাকে মৃত অবস্থায় কল্পনা করতে হবে. তাই খুব খুব সাবধানে রিকশার পিছু পিছু আমিও ড্রাইভ করছি।
রাস্তার এক কোনায় দেখলাম একটা বৃদ্ধ লোক রাস্তা পার হবার চেষ্টা করছে। কিন্তু পানির স্রোধ উনাকে সামনে আগাতে দিচ্ছিলো না. সামনে যাইয়া চাচাকে জিজ্ঞেস করলাম উনি কোথায় যাবেন? চাচা উত্তর দিলো মালিবাগ যাবেন উনার মেয়ের বাসায়. মালিবাগ নামটা শুনেই আমি একটু ভড়কে গেলাম. কারণ মালিবাগ হলো ঢাকা শহরের অভিসপ্ত জায়গা গুলার একটি. যেখানে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তা ঘাট ডূবে একাকার হইয়া যাই.

নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে চাচাকে বললাম আমার বাইকে বসার জন্য. কিন্তু চাচাকে দেখলাম একটু ইতস্তত করতে, হয়তো উনি একটু ভয়ও পাচ্ছিলো বাইকে বসতে. একেতো আমি উনার কাছে অপরিচিত মানুষ, তার উপর বৃষ্টির জ্যাকেট পড়াতে একটু মাস্তান মাস্তান টাইপের ও মনে হচ্ছিলো হয়তো চাচার কাছে. চাচা কে অভয় দিলাম এবং বললাম চাচা আপনি ভয় পাবেন না আমি আপনাকে আপনার মেয়ের বাসায় নামিয়ে দিবো.
এইবার চাচা বাইক এর পিছনে বসলো এবং বসেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো পিছন থেকে. উনার ধরা দেখেই বুঝতে পারলাম চাচা আগে কখনো বাইকে বসেনি. যাহোক, আমি রমনা পার্ক ধরে বাইকে চালানো শুরু করলাম. ঢাকাতে এই একটা জায়গা আছে যেখানে কখনো পানি উঠার চান্স নাই. রমনা পার্ক দিয়া বেইলি রোডের ভিতর দিয়া পোঁছে গেলাম মালিবাগে। চাচার দেওয়ার ঠিকানা বরাবর খুঁজতে খুঁজতে উনার মেয়ের বাসার ঠিকানাতে চলে আসলাম.

ra.4.jpg

চাচা বাইক থেকে নেমেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো, এর মধ্যেই দেখলাম উনার মেয়ে নিচে চলে আসলো চাচা কে নিতে. ওহ একটা কথা তো বলা হয়নি যে মালিবাগে এসে উনার মেয়েকে কল দিয়া বাসাটা খুঁজে নিতে হইছিলো। মেয়েকে দেখে চাচার কান্না থামলো এবং উনার মেয়ে আমাকে অনুরোধ করলো যেন এখন উনার বাসায় এককাপ চা খেয়ে যাই. আমি রাজি হচ্ছিলাম না, কারণ একেতো ভিজা কাপড় তার উপর আমার দেরি হইয়া যাচ্ছিলো। আমার কিছু বন্ধু আমার জন্য অপেক্ষা করছিলো হাতিরঝিলে।উনার মেয়েকে না করলাম কিন্তু চাচা মানলো না. চাচার অনুরোধ ফেলতে পারলাম না. শেষে বাধ্য হলাম যেতে।
উনার বাসায় ঢুকতেই আমি অভাক হলাম এমন সুন্দর পরিপাটি ড্রয়িং রুম দেখে. অনেক বড় ড্রইং রুম এবং খুব গুছালো। আমি রুমে ঢুকে দাঁড়িয়ে রইলাম, কারণ ভেঁজা কাপড়ে সোফায় বসতে মন চাচ্ছিলো না. কিন্তু চাচা জোর করছিলো বসার জন্য. ঠিক তখনি একটা অপরূপ সুন্দরী পিচ্চি মেয়ে তোয়ালে নিয়ে আসলো আমার জন্য. আমি ওর হাত থেকে তোয়ালে নিতেই চাচা পরিচয় করি দিলো সেই উনার নাতনি, ক্লাস ফাইভ এ পড়ে. চাচা ওকে বললো তোমার আঙ্কেল কে সালাম দাও, সে সালাম দিয়া ভিতরে চলে গেলো.

কয়েকটা মুহূর্ত পর্যন্ত ওর চেহারাটা আমার চোখের সামনেই যেন রইয়া গেলো. এমন সুন্দর মিষ্টি চেহারার মেয়ে আমি আগে কখনো দেখিনি. ওই পিচ্চিটার চেহারা এখনো আমি ভুলতে পারিনি. যাহোক সেখান থেকে অনেক কষ্টে বার হইয়া চলে আসলাম হাতিরঝিলে যেখানে আমার বন্ধুদের সাথে প্রতিরাতে আড্ডা দেই. আজকে দেরি হবার কারণটা ওদের কাছে লুকালাম. কারণ ওদের কে বললেই হাজারটা প্রশ্ন করা শুরু করতো।
কাল রাতে ওখানে কিছুটা ঝামেলা ছিল বলে খুব তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে হইছিলো। এমনিতে প্রতিরাতে রাত দুইটার আগে আমি গুমাই না. রাত বারোটার পর থেকে আমার কাল্পনিক পরী অনলাইনে এসে আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকে.

ra.5.m.jpg

ওই সময়টা সেই আমায় না পেলে প্রচন্ড রাগ করে থাকে. কিন্তু আজকে আমার খুব ঠান্ডা লাগছে, মনে হয় এখনই অনেক জ্বর চলে আসবে. আসার সময় একটা চিকেন বার্গার কিনেছিলাম দোকান থেকে সেটা খেয়ে বেড এ শুতেই মনে হচ্ছে পৃথীবির সমস্ত ঘুম আমার চোখে এসে ভিড় করছে.
কেন যেন চোখ ও খুলতে পারবো না একটু পর. তাড়াতাড়ি ল্যাপটপ তা হাতে নিয়ে আমার পরী কে একটা টেক্সট দিয়া জানালাম আমি ওর জন্য ওয়েট করে আছি পারলে যেন এখনই আসে. কিন্তু আমিতো জানি সে রাট বারোটার আগে আসবে না অনলাইনে। তাও ওকে কয়েকটা টেক্সট দিয়া আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। জানি সেই রাতে এসে আমাকে অনলাইনে না পেয়ে অনেক রাগ করবে। তবু আমার কিছু করার ছিল না. যাহোক পরী আমি দুঃখিত, মাঝে মাঝে তোমায় অনেক কষ্ট দিয়া ফেলি। আজকের মতো গল্পটা এখানেই শেষ করলাম. কেমন লাগলো জানাবেন প্লিজ।....

photo;- courtesy of online.

steemit.gif

Coin Marketplace

STEEM 0.30
TRX 0.11
JST 0.034
BTC 66408.70
ETH 3225.39
USDT 1.00
SBD 4.17