"তুমি যে আমার আলো গল্প শেষ পর্ব"
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের মাঝে তুমি যে আমার আলো গল্পের শেষ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমি আমার পোষ্ট লেখাটি শুরু করছি।
প্রথম প্রথম চাকরিতে সবকিছু বুঝে উঠতে সৌরভের কিছুটা সময় লেগেছিল কারণ সবকিছুই নতুন। ভালোই যাচ্ছিল তার চাকরি জীবন। হঠাৎ লাবনী সৌরভ কে বলল বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য তার বাবা চাপ সৃষ্টি করছে। তখন সৌরভ লাবনীকে বলে তুমি কোন চিন্তা করো না। আগে হয়তো আমি কিছুই করতাম না তোমার বাবার সামনে আমি যেতে পারতাম না। কিন্তু এখন আমি এসআই পদে চাকরি করি। এখন আমার যথেষ্ট সম্মান আছে। আমি তোমার বাবার কাছে যে তোমার আমার বিয়ের কথা বলব। লাবনী সৌরভ কে বলে আমি বাবাকে অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু বাবা কোন কথাই বুঝতে চাইছে না। সে চায় তার বন্ধুর ছেলের সাথে আমাকে বিয়ে দিতে। কিন্তু সৌরভ এ কাজটি আমি যে কোনদিনই করতে পারব না। আমি তোমাকে ভালবাসি আর এ জীবনে আমি যদি তোমাকে না পাই তাহলে আমার এ জীবন আমি রাখবো না। তোমাকে ছাড়া আমি অন্য কাউকে এ জীবনে ভালবাসতে পারব না। সৌরভ লাবনী কে সান্তনা দিয়ে বলে যতই কষ্টই হোক না কেন। শত কষ্টের পরেও যদি তোমার বাবা রাজি না হয় তখন আমি তোমার বাবার কাছে আমি তোমাকে ভিক্ষা চাইবো। আমি তাকে আমাদের সম্পর্কের সব কথাই খুলে বলবো। উনি শিক্ষিত মানুষ সমাজে তার নাম ডাক রয়েছে উনি হয়তো অবশ্যই বুঝতে পারবে।
কিছুদিন পর সৌরভ লাবনী দের বাড়িতে যায়। তার বাবাও সেদিন বাসায় ছিল। সৌরভ লাবনী দের বাড়িতে এসে কলিং বেল বাজায়। ওপার থেকে একটি কাজের লোক দরজাটি খুলে দেয়। আর উনি বলে কে আপনি কাকে চাই? সৌরভ তখন বলে আমি লাবনীর বাবার সঙ্গে কথা বলতে চাই।উনি কি আছেন বাড়িতে? কাজের লোকটি বলে হ্যাঁ স্যার উনি বাড়িতেই আছেন। কিন্তু আপনি একটু বাইরে ওয়েট করুন আমি স্যারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আসি। তখন সৌরভ সেই কাজের লোকটিকে বলে তুমি তোমার স্যারকে যে বলবে সৌরভ নামের এক জন ব্যক্তি আপনার সাথে দেখা করতে চায়। যাইহোক পরবর্তীতে কাজের লোকটি লাবনীর বাবার কাছে যায় এবং তার কথা বলে লাবনীর বাবা তাকে নিয়ে আসার অনুমতি দেয়।
সৌরভ লাবনীর বাবার কাছে এসে তার বাবাকে প্রণাম করে। লাবনীর বাবা তাকে বসতে বলে। তারপর তাদের ভিতরে ভালো-মন্দ আলোচনা চলতে থাকে। একটি পর্যায়ে লাবনীর বাবা সৌরভকে বলে। তুমি কি কাজে এসেছো? সৌরভ সোজা ভাষায় উত্তর দেয় সে লাবনীকে বিয়ে করতে চায়। তখন লাবনীর বাবা রেগে গিয়ে বলে তুমি এক্ষুনি আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও। তখন সৌরভ তার দুটি হাত চেপে ধরে বলে স্যার আপনি হয়তো লাবনীর বাবা আপনি যা বলবেন লাবনী তাই করবে আপনার বিরুদ্ধে সে কোনদিনও যাবে না। কিন্তু আপনি তো বাবা আপনি কি চান আপনার মেয়ে আপনার সুখের জন্য আপনার মেয়ে কষ্ট পাক। লাবনীর বাবা সৌরভকে বলে তার মানে তুমি কি বলতে চাও? সৌরভ বলে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। লাবনী আমাকে ভালবাসে আর আমি লাবনীকে ভালোবাসি। আজ আমি একটি সম্মানের চাকরি করছি। এই চাকরিটির করার পিছনে লাবনীর সব থেকে বড় হাত রয়েছে। লাবনী আপনার কাছ থেকে সময় নিয়েছে শুধু একটি কারণে। সে আমাকে এমন ভাবে তৈরি করতে চেয়েছে যেন সমাজে আপনার সম্মান যেন একটুকু ছোট না হয়। আজ সে কাজে সফলতা পেয়েছে।
আমরা একে অপরকে জানি বহু বছর ধরে ওর ভালো-মন্দ সবকিছুই আমি জানি আর আমার ভালো-মন্দ সবকিছু ও জানে আমরা যেন একই আত্মা। তাই আমাদের এক আত্মাকে দু ভাগে ভাগ করবেন না। আপনি যদি আপনার জেদ তাকে একটু পাশে রেখে চিন্তা করেন তাহলে হয়তো আমাদের দুজনের জীবনটা সুন্দর হবে। কথাগুলো শোনার পর লাবনীর বাবা কিছুটা সময় চুপ থাকে। পরবর্তীতে চিৎকার করে লাবনীকে ডাক দেয়। সৌরভ চমকে যায় লাবনী রুম থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে তার বাবার সামনে এসে দাঁড়ায়। লাবনীর বাবা হেসে দিয়ে বলে আমিতো এমন ছেলেই মনে মনে খুঁজছিলাম। আমিও তোমাকে পরীক্ষা নিচ্ছিলাম। যে তুমি আমার মেয়ে লাবনীকে কতটা ভালোবাসো আর আমার মেয়ে তোমাকে কতটা ভালোবাসে। কিন্তু আজ এটাই প্রমাণিত হলো যে তোমরা দুজন দুজনকে খুবই ভালোবাসো তোমরা দুজন দুজনাকে ছেড়ে থাকতে পারবে না। বাবার মুখে এই কথাটি শোনার পর তারা দুজনে বিশ্বাস করতে পারছিল না। তার বাবা বলে আমি তোমাদের খুব ধুমধাম করে বিয়ে দিব। সৌরভ তুমি আজ থেকে অনাথ নও আজ থেকে আমি তোমার বাবা। সৌরভ লাবনী দুজনে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। সেদিনই পুরোহিত ডেকে ভালো দিনক্ষণ দেখে পরবর্তীতে তাদের বিবাহ কাজ সম্পন্ন করে। বাসর রাতে সৌরভ লাবনীকে বলে আমার জীবনে সব কিছুর সফলতার পেছনে তোমার অবদান সবথেকে বেশি তুমি সত্যিই আমার জীবনের প্রদীপ শিখা।
যাই হোক অবশেষে লাবনী ও সৌরভের ভালোবাসা জয় হলো।
এই গল্পের অনেক গুলো পর্ব আমার পড়া হয়েছিল। আর আজকে শেষ পর্ব পড়ে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। কারণ এতো কষ্টের বিনিময়ে অবশেষে সৌরভ এবং লাবণীর ভালোবাসার জয় হয়েছে। প্রকৃত ভালোবাসার জয় হলে সত্যিই খুব ভালো লাগে। তাছাড়া গল্পের হ্যাপি এন্ডিং সব পাঠকেরা পছন্দ করে। এভাবেই সবসময় ভালোবাসার জয় হোক,সেই কামনা করছি। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।