নতুন প্রবীণদের নিয়ে আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পর্ব ১১

in #new27 days ago

মহিলা কলেজের সাতজন ছাত্রী কলেজের পোশাকে ছায়াবাণীতে সিনেমা দেখতে এসেছে। ম্যাটিনি শো। ড্রেস সার্কেলে সামনের সারিতে সাতজন বসেছেন । ছবির নাম 'সুজন সখী' । এই ছবিটি অনেক দিন 'হাউস ফুল' চলছিল । আমরা প্রায় ১০/১২ জন কলেজ ছাত্রীদের দুই সারি পরে বসার সুযোগ পেলাম । গভীর আগ্রহ নিয়ে মেয়েদের চেনার চেষ্টা করছিলাম । কাউকেই চিনতে পারলাম না। আমাদের চেনার কথাও না। কারণ আমরা গ্রাম থেকে শহরে এসেছি। ছাত্রীদের দু পাশে দুটি করে সিট ফাঁকা । হল অন্ধকার হয়ে গেলো । জাতীয় সংগীত বেজে উঠলো । জাতীয় পতাকা উড়তে লাগলো। আমরা দাঁড়িয়ে সম্মান জানালাম। সিনেমা শুরু হলো। তীব্র আলোর ঝলকানিতে খেয়াল করলাম মেয়েদের দু'পাশের সিট খালি নেই । দু'পাশের ছেলে দুটি মেয়েদের গা ঘেঁষে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে আছে।

আমাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হলো। মেয়েগুলো একা নয়, তাদের সাথে ছেলে বন্ধুরা রয়েছে। বিরতির সময় সেভেন-আপ খেতে গিয়ে মেয়েগুলোর সামনে পড়লাম । আমাদের কেউ তেমন পাত্তা দিলো বলে মনে হয়নি। খেয়াল করলাম একটা কালা মোটা বেঁটে মেয়ে বারকয়েক আমার দিকে তাকালো । সিনেমার শো ভাঙলো । আমরা জিয়া হোস্টেলে ফিরে আসলাম । পরদিন দুপুরে ওয়ান মিনিটে সেই কালো মোটা মেয়েটিকে দেখলাম। মেয়েটি দই-মিষ্টি খাচ্ছে আর সামনে বয়স্ক একজন মানুষ বসে আছেন । মেয়েটি আমাকে দেখে মিটমিট করে হাসলো । ওয়ান মিনিটের পাশেই মহিলা কলেজের মেয়েদের হোস্টেল। সেই বয়স্ক মানুষটি মেয়েটিকে হোস্টেল পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। কালীবাড়ী মোড়ে আসলে মাঝে মধ্যে মেয়েটির সাথে দেখা হয়ে যেত । প্রতিবারই সাদা দাঁতের এক টুকরো হাসি পেতাম। তবে আমি কোনো আকর্ষণ বোধ করতাম না । তাকে দেখার জন্য মনটা অস্থির হয়ে পড়তো না । বরং দেখা হওয়ার পরই হৃদয় শীতল হয়ে পড়তো। ভাবতাম এমন মেয়ে যার বউ হবে তার কত বড় কপাল !

IMG_6583.jpg

কামাল সাহেব অবসরে গেছেন ছাব্বিশ বছর আগে। তিনি উচ্চ পদস্থ সরকারি চাকুরে হিসেবে সাঁইত্রিশ বছর কাজ করেছেন । বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন। স্ত্রী পারভীন স্মৃতিক্ষয়জনিত রোগ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত। স্ত্রীকে সামলানো অনেক কঠিন। কাউকে চিনতে পারে না। কারণে অকারণে রেগে যাচ্ছেন। যেখানে সেখানে পায়খানা করে দেন । শুধু অভিযোগ নালিশে ব্যস্ত । পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে তখন তিনি একটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষিত সেবাকর্মী নিতে মনস্থির করলেন।

সেবা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁরা কামাল সাহেবের উত্তরার বাসায় আসেন । ভিডিও কলে আমেরিকায় অবস্থানরত পুত্রকন্যার সাথে সেবা প্রতিষ্ঠানের সুলতানার সাথে কথা হলো। সুলতানা কামাল সাহেবের ছেলে মেয়েকে পুরো পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করলো । সিদ্ধান্ত হলো কামাল সাহেব আর তাঁর স্ত্রীর জন্য চব্বিশ ঘন্টার প্রশিক্ষিত সেবাকর্মীর সেবা গ্রহণের । মিতব্যয়ী কামাল সাহেব প্রশিক্ষিত সেবাকর্মীদের বেতনের কথা শুনে চিন্তিত হয়ে পড়লেন। স্ত্রীর কথা মনে করে শেষপর্যন্ত রাজি হলেন। মনে মনে ভাবলেন, जী স্কুলে চাকরি করেছেন, আয় রোজগার করেছেন। এখন তাঁর জন্য টাকা খরচ করে উন্নত সেবাগ্রহণ না করা অন্যায় হবে। কামাল সাহেব ভবিষ্যত বিপদ আপদের আশংকায় টাকা পয়সা জমিয়েছেন। ছেলে মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। তাঁরাও পিতার মত মিতব্যয়ী। ছেলে আমেরিকান মেয়ে বিয়ে করেছেন এবং নিঃসন্তান । মেয়ে আমেরিকান ছেলে বিয়ে করেছেন। তাঁদের এক ছেলে এক মেয়ে ৷ কামাল সাহেব আর তাঁর স্ত্রী দু'জনেই আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়েছেন 1 আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব কারো সাথে সম্পর্ক রেখে স্বস্তি পাচ্ছেন না কামাল সাহেব । এঁরা নানান বিষয় সামনে এনে টাকা পয়সা চায়। মানুষের দুঃখ দুর্দশা, অভাব অনটন আর পরকালের নাজাতের কথা শুনতে শুনতে কামাল সাহেবের কান ঝালাপালা হয়ে গেছে। পারতপক্ষে কারো ফোন

Sort:  

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @fxsajol,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

Coin Marketplace

STEEM 0.24
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 67287.17
ETH 3516.64
USDT 1.00
SBD 3.16