প্রকৃতির প্রকৃত উপলব্ধি নিয়ে যত কথা || Original Photography by @hafizullah

in আমার বাংলা ব্লগ16 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো থাকার চেষ্টা করছি। সত্যি বলতে প্রকৃতি ও পরিবেশ অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খুব একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ তৈরী হবে না। কারন আমরা যার যার অবস্থান হতে যেভাবে পেরেছি প্রকৃতি ও পরিবেশের বারোটা বাজানোর চেষ্টা করেছি, হয়তো প্রকৃতি এখন সেটার শোধ নিচ্ছেন আমাদের বারোটা বাজানোর মাধ্যমে। যেমন গতকাল পত্রিকায় পড়লাম বিগত ৪৩ বছরের বেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে বৈশাখ মাসে কালবৈশাখী ঝড় না হয়ে।

কি আশ্চার্যজনক বিষয় না? একটা সময় আমরা প্রার্থনা করতাম যেন কাল বৈশাখীর ঝড় না হয়, যেন অনাকাংখিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয়, ইত্যাদি ইত্যাদি। বৈশাখ মাস আসলেই দেখতাম সকলের মাঝে কেমন জানি একটা আতংক বিড়াজ করতো, কখন জানি কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়ে যায়, কখন জানি আমার আম গাছের সবগুলো মুকুল ঝড়ে যায়, জমির পাকা ফসল নষ্ট হয়ে যায়, ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো কিন্তু মুখের কথা নয় বরং বাস্তব অভিজ্ঞতা হতে বললাম, যেহেতু এই বিষয়গুলো আমাদের সম্মুখেই ঘটেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর আকাশ মেঘলা হলেই সকলের অনুভূতি কেমন জানি পাল্টে যেতো, একটা ভয় শুরু হয়ে যেতো।

IMG_20240412_170623.jpg

আর আজকে আমরা হিসাব করছি কেন কম হলো? কেন আগের মতো বেশী হচ্ছে না? কি হলো পরিবেশের, কালবৈশাখী কোথায় গেলো? কারন প্রকৃতির ভালো মন্দ আমরা তখন বিবেচনায় রাখতাম না বরং আমাদের লাভ ক্ষতির হিসেব কষতাম শুধুমাত্র। আর আজকে আমরা উপলব্ধি করছি কি ক্ষতি আমরা নিজেরাই নিজেদের জন্য করেছি প্রকৃতি ধ্বংস করে। সবুজ প্রকৃতি ধ্বংস শুধু প্রকৃতির জন্য ক্ষতিকর হয়েছে তা নয় বরং তার চেয়ে ক্ষতি হয়েছে আমাদের। আজকে বাড়িতে বাড়িতে অসুস্থতা, নানা ধরনের সমস্যা এবং অস্থিরতার চরম আতংক, সবই সবুজ প্রকৃতি নষ্ট করার ফল। তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, আমরা বিষয়টি এখন উপলব্ধি করতে শুরু করেছি, কিন্তু সেটাও অনাকাংখিতভাবে। না হলে সঠিক সময়ের অপেক্ষায় থেকে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে গাছ লাগানোর বিষয়টি আমাদের মাথায় আসছে না কেন?

IMG_20240412_170526.jpg

IMG_20240412_170647.jpg

যাইহোক, সমস্যা আছে-সমস্যা থাকবে এবং এর মাঝেই কিছু সমস্যার সমাধান হবে আবার কিছু সমস্যা নতুন করে তৈরী হবে। এটাই জীবন এবং এভাবেই গতিশীল থাকবে জীবনের নিয়ম নীতি। তবে আমরা যদি বিষয়গুলো সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারি এবং সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি তাহলে হয়তো সকল কিছু উপভোগ্য থাকবে, আর না হলে সব কিছু হতাশাজনক হয়ে যাবে বর্তমান সময়ের মতো। যেমন আমরা বলে থাকি পকেটের অবস্থার উপর নির্ভর করে সময়গুলো কতটা সুন্দর ও চঞ্চল থাকবে, ঠিক তেমনি সবুজ প্রকৃতির অবস্থার উপর নির্ভর করে প্রকৃতি কতটা শীতল ও উপভোগ্য হবে। এখন আমরা যদি নিজের সাধ্যমতো, নিজের সীমানায় সবুজায়নের মাধ্যমে প্রকৃতির অবস্থা পরিবর্তন করার চেষ্টা করি, তাহলে হয়তো সেখানে সার্থকতা ফিরে আসবে।

IMG_20240412_170430.jpg

IMG_20240412_170442.jpg

IMG_20240412_170743.jpg

আর যদি না পারি? তাহলে আর কি, পরিবেশ যেমন আছে তার চেয়ে আরো বেশী খারাপের দিকে যাবে। আর হ্যা, আরো একটা কঠিন বিষয় আছে যেটা নিয়ে আমরা কেউ কথা বলছি না, সেটা হলো উন্মুক্ত জলাশয় বা জমির পানির লেয়ার ধরে রাখার কথা। ইট, বালু ও কংক্রিটের আস্তরের কারনে পানি নিচের দিকে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না যার কারনেও কিন্তু সমস্যা হচ্ছে। সবুজ পার্ক বা বনায়নের মাঝেও এখন কংক্রিটের ঢালাই দেয়া হচ্ছে বানিজ্যিক মুনাফা বাড়ানোর জন্য, বাড়ির আঙ্গিনা হতে শুরু করে চারপাশটাও ঢেকে দেয়া হচ্ছে কংক্রিটের আস্তরের মাধ্যমে, অতীতে এমনটা ছিলো না। এগুলোর পরিবর্তন আনতে হবে, আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন জরুরী। আশা করছি আজকের ফটোগ্রাফিগুলো উপভোগ করেছেন সবাই।

IMG_20240412_171101.jpg

IMG_20240412_171126.jpg

তারিখঃ এপ্রিল ১২, ২০২৪ইং।
লোকেশনঃ সিঙ্গাইর, মানিকগঞ্জ।
ক্যামেরাঃ রেডমি-৯ স্মার্টফোন।

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  
 16 days ago 

বৈশাখ মাসে কালবৈশাখী ঝড় না হওয়ার ব্যাপারটা সত্যি অনেক আশ্চর্যের। সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই বদলে যাচ্ছে। সেই সাথে প্রকৃতি তার ভিন্ন ভিন্ন রূপ প্রদর্শন করছে। সত্যি ভাইয়া প্রকৃতির এই ভয়ংকর রূপ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আরও বেশি ভয়ংকর হয়ে দাঁড়াবে। আপনার লেখাগুলো পড়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 16 days ago 

এইতো কয়েক বছর আগেও বৈশাখ মাস আসলেই দেখতাম পুরানো ঘর গুলো মেরামত করতে যেনো ঝরে পরে না যায় কিন্তু রিসেন্ট কয়েক বছর তা আর দেখছি না।চালের ফুটা দিয়ে পানি পরবে তাই ঠিক করতে হবে সেটাও আর দেখছি না প্রকৃতি কতো নিষ্টুর হয়েছে।আর হবেই বা না কেনো আমরাই তো করেছি নিষ্ঠুর।

 16 days ago 

আপনি ঠিকেই বলেছেন ভাইয়া, প্রকৃতির এই অগ্নিরুপের জন্য আমরাও দায়ি। আমাদের দেশের মানুষদের পরিবেশ বিয়য়ে সচেতনতার বড্ড বেশি অভাব। তা না হলে পাহাড়-জঙ্গল-জলাশয়,নদী-নালা ধবংস করি আমরা! একটি প্রবাদ বাক্যের কথা মনে পড়লো জঙ্গলেই মঙ্গল। আজকের দিনে জঙ্গল কত দরকারি তা হাড়েঁ হাড়েঁ টের পাওয়া যাচ্ছে।আপনার সাথে একমত হয়ে সবার উচিত সবুজায়ন করা। ফটোগ্রাফি গুলো লেখার সাথে মাননসই ও সুন্দর হয়েছে। সময়োপযোগি সচতনতা মূলক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 16 days ago 

আপনার পোস্টে বৈশাখী ঝড়ের কথা পড়ে একটা বিষয় মনে পড়ে গেল।আগে পশ্চিম আকাশে কালো মেঘ দেখলে আনন্দ হতো যে ঝড় হবে আবার মনের মধ্যে একটা ভয়ও কাজ করতো। কিন্তু আপনার পোস্ট টা পড়ে আফসোস হচ্ছে কতদিন ঐ পশ্চিম আকাশে কালো মেঘ দেখি না। আমাদের একটা কথা আমার দারুণ লেগেছে। আমরা কেমন আছি সেটা নির্ভর করে পকেটের অবস্থার উপর হা হা।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 16 days ago 

যেমন গতকাল পত্রিকায় পড়লাম বিগত ৪৩ বছরের বেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে বৈশাখ মাসে কালবৈশাখী ঝড় না হয়ে।

এই নিউজটা আমি ইউটিউবে দেখেছি ভাই। আগে বৈশাখ মাসে কোথাও বের হওয়ার সময় কালবৈশাখী ঝড়ের জন্য কতো হিসাব নিকাশ করতাম। কারণ কালবৈশাখী ঝড় তো যখন তখন শুরু হয়ে যেতো। যাইহোক প্রকৃতির উপর আমরা যতটুকু অত্যাচার করেছি,সেই হিসেবে প্রকৃতি আমাদের উপর প্রতিশোধ কমই নিচ্ছে। আমাদের উপর যদি এতো অত্যাচার করা হতো,আমরা এর চেয়ে আরও বেশি প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করতাম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে উপযুক্ত সময় বুঝে গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। বাড়ির ছাঁদে বা আশেপাশের ফাঁকা জায়গায় যতটুকু সম্ভব গাছ লাগাতে হবে। তাছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধিটা আমাদের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই পরিবার পরিকল্পনা করাটাও জরুরী। যাইহোক ফটোগ্রাফি গুলো বেশ উপভোগ করলাম ভাই। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 16 days ago 

কিছুই না আমরা শুধু আমাদের কর্মের ফল ভোগ করছি। কথায় বলে না "চোর গেলে বুদ্ধি বাড়ে " তেমনি বন জঙ্গল উজাড় করার সময় আমাদের মাথায় ছিল না কিন্তু এখন যা হবার হয়েই গিয়েছে এখন আমাদের মাথায় এসেছে গাছ লাগাতে হবে। যাই হোক , ছবি গুলো বেশ সুন্দর হয়েছে ভাইয়া।

 16 days ago 

বর্তমানে যে পরিমাণে গরম পড়ছে সেটি আসলে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। শুধু যে আমি অস্বস্তির মধ্যে আছি তা নয় বাংলাদেশের সবাই এই অস্বস্তির মধ্যে আছে।বর্তমানে গরম বাড়তেছে আর এটার একটা মাত্র কারণ হচ্ছে সবুজ প্রকৃতি ও গাছপালা নিধন । সবাই যার যার বসত ভিটা তৈরি করার জন্য গাছপালা কেটে বাড়ি ঘর করছে। বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় এরিয়া সব গাছ কেটে ধ্বংস করে সেখানে কলকারখানা তৈরি করছে। ধীরে ধীরে যত বন জঙ্গল আছে সবগুলো কেটে বিভিন্ন রকম ঘরবাড়ির প্ল্যানিং চলছে। আর এভাবেই মূলত প্রকৃতি চিরতরে বিনাশ হচ্ছে।তাই আমাদের সবার উচিত অন্তত ঘরের আশেপাশে হলেও গাছ লাগানো। ধন্যবাদ ভাই সমসাময়িক একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।

 15 days ago 

প্রকৃতিকে নিয়ে আমরা উপলব্ধি করি কিন্তু সেই উপলব্ধি পর্যন্তই।আমরা কিন্তু উপলব্ধির ভিত্তিতে কাজ করিনা।এটা খুব সত্যি কথাই বৈশাখ মাস এলেই ঝড়ের কথা মনে হলে ভয় কাজ করতো মনে।আর উঁচু ভবনে থাকলে তো আরো বেশী ভয়ের।কিন্তু এ বছর কোন কিছুই হলো না।প্রকৃতির এই ভয়ংকর রুপ সত্যি আমাদের কাম্য ছিলনা।প্রকৃতির উপর আমরা এতোটা অত্যাচার করেছি।যার ফলশ্রুতিতে আজ আমাদের এই অবস্থা। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রকৃতিকে ভালোবাসতে হবে সবাইকে।বরাবরের মতো প্রকৃতির ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার লেগেছে।ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.26
TRX 0.13
JST 0.031
BTC 61699.33
ETH 2887.31
USDT 1.00
SBD 3.47