নতুন প্রবীণদের নিয়ে আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পর্ব ০৫
তখন বয়স আমার চোদ্দ। নবম শ্রেণিতে পড়ি। সারাদিন কাটে খেলাধুলা আর সাঁতার কেটে । পড়াশোনায় একদম মন নেই । তখন একটা কবিতা আমার খুব মনে ধরেছিল। তার একটি লাইন হলো— তোমরা না হয় শিখছ পড়া মানুষ হওয়ার জন্য আমি না হয় পাখি হবো পাখির মতো বন্য । আমার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত পরিবারের সদস্যদের চাপের মুখে স্কুলে যেতে শুরু করলাম। স্কুলের শিক্ষকদের কঠিন তদারকি আমাকে অস্থির করে তুললো । স্কুল পালানোর জন্য মনটা আকুল হয়ে উঠলো 1 এ রকম এক জটিল সময়ে স্কুলে নতুন অতিথি আসলো। সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হলো । মেয়েটির নাম আলেয়া আকতার পাখি ।
গ্রামের জীর্ণশীর্ণ হাইস্কুলটি যৌবনে ফিরে এলো। ছাত্র-শিক্ষক সবাই উৎসুক হয়ে উঠে পাখির স্কুলে যাওয়া-আসার সময়। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ছাত্রদের পোশাক-আশাক, চলন-বলন বদলে যেতে লাগলো। আমি পাখির প্রেমে পড়লাম। মাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে চাল-ডাল-পাট-মরিচ বেচে দুটো শার্ট বানালাম আর দুটো লুঙ্গি কিনলাম । পাখির দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য স্কুলের খেলাধুলা-নাটক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সক্রিয় থাকলাম । বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম হলাম । পুরস্কার নিয়ে আসার সময় পাখি আমাকে দেখে হাসলো। ছুটির পর বুঝতে পারলাম স্কুলের দশ-বারোজন ছেলে পাখির সাথে প্রেম করতে চায়। আমি হতাশ হলাম। কারণ, আমি মোটামুটি গরিব আর দেখতে শুনতেও ভালো না। পাখির মন পেতে যে লড়াই চলছে তাতে আমি হারবো নির্ঘাত । সমবয়সী এক ফুফুকে পাখির কথা বললাম। ফুফু আমাকে বললো, তোর পিঠের ছাল তুলে ফেলবে পাখির বাপ। বামন হয়ে চাঁদের দিকে হাত বাড়াস না। সারাক্ষণ পাখির কথা মনে পড়তো। কীভাবে পাখিকে পাবো সেই চিন্তা করতে থাকতাম ৷