দিদির ছেলের অন্নপ্রাশন
কেমন আছেন সবাই ?বৃষ্টির মেজাজটা এখন আমি বড্ড মিস করছি। তাই বলতে পারেন আমার মনটা একটু খারাপই আছে ।যেভাবে টানা কিছুদিন বৃষ্টি হল, শরীরে এনার্জি পেয়ে গিয়েছিলাম। আবার গতকাল থেকে একটা উটকো গরম পড়েছে, কোন কাজে মন বসতে চাইছে না । বৃষ্টি হলে ঠান্ডা ঠান্ডা ওয়েদার থাকে, মাথাও ঠান্ডা থাকে আর ঠান্ডা মাথায় কাজও ঠান্ডা ঠান্ডা হয়।
যাইহোক আজকে আপনাদের সাথে অক্ষয় তৃতীয়ার আগের দিনের কথা শেয়ার করছি। অর্থাৎ ৯ তারিখ মে মাসের। একটা অন্নপ্রাশনের দিনের কথা।
আমার পিসতুতো দিদির বহু বছর পরে ছেলে হয়েছে। প্রায় কুড়ি বছর পর সন্তান হওয়াটা ঈশ্বরের উপহার নয়তো কি বলবো। সন্তান হচ্ছিল না দেখে দিদি একটা সময় পড়ে আমাদের কৃষ্ণনগরের জেলা হাসপাতাল- শক্তিনগর হাসপাতাল থেকে একটা ছোট্ট মেয়েকে এডপ্ট করে নেয়। বেশ কিছু বছর আগের কথা সেটা। তারপরে সেই মেয়ে এখন প্রি প্রাইমারিতে পড়ে।
আর এই মুহূর্তে হঠাৎই আগের বছর দিদি প্রেগন্যান্ট হয়। যে মানুষটির সন্তান হওয়ার কথা ছিল না ,হঠাৎ করেই সন্তান যখন পেটে আসে ,ডাক্তার পর্যন্ত অবাক হয়ে গিয়েছিল। আসলে কিছু কারণ আমরা নিজেরাও খুঁজে বার করে উঠতে পারি না। এও যে একটা ভগবানের লীলা খেলা এবং এটা বিরাট বড় উপহার ,তা যে শুনবে, সেই আমার সাথে একমত হবে।
সে ছোট বাচ্চাটা দেখতে দেখতে প্রায় ছয় মাসের হয়ে গেছে ।তাই ওর অন্নপ্রাশন ছিল। ন তারিখ আমার একটা পরীক্ষা ছিল কলেজে। পরীক্ষা দিয়ে নিয়ে তারপরে আমি আমাদের গাড়ি করে দিদির শ্বশুর বাড়ির দিকে গিয়েছিলাম। ওর শ্বশুর বাড়ি একটু গ্রামের দিকে। নবদ্বীপ যেতে ,জায়গার নাম সেবগ্রাম।
এর আগে আমি ওর বাড়িতে সেরমভাবে যাইনি, গেলেও ছোটবেলায় দু তিনবার। আসলে নানান ব্যস্ততায় সেরকমভাবে কোথাও যাওয়া হয়ে ওঠে না। আর যে সমস্ত জায়গায় আমাদের গেলে মন ভাল লাগে, আমরা আশেপাশের সমস্ত কিছু ছেড়ে সেসব জায়গাতেই বারে বারে যাই। মা বাবা যদিও মাঝেমধ্যে ওখানে যায়। কারন আমার মা নিজে একজন গ্রামে বড় হওয়া মেয়ে। আমার মামার বাড়ির দেশের বাড়ি পুরোপুরি গ্রামে। তাই আমারও গ্রাম ভালো লাগে।
গাড়ি থেকে নামতেই কি সুন্দর রাস্তা ।আর চারিপাশে কত গাছ আর গাছ। এর আগেও আমি আপনাদের বলেছি আমার এবং আমার মায়ের গাছ কত ভালো লাগে। সারাদিন এই গাছ নিয়ে টানাটানি লেগেই থাকে। আমার বাবার কারখানায় যে সকল কর্মচারী আছে, তাদের মধ্যে দুজন রয়েছে যারা গাছ বিষয়ে বেশ পটু। আর আমার মা মাঝেমধ্যেই তাদেরকে ডেকে নিয়ে এসে গাছের পরিচর্যা করায়। তারা একটু বিরক্ত হলেও কিছু বলতে পারে না কারণ আমার মা এমন ভাবেই আবদার করে।
যাইহোক গাড়ি থেকে নামতেই আমি বাঁদিকে পাতি লেবু গাছের সারি দেখেছি। আমার এত ভালো লাগলো ।গাছের মধ্যে গোল লাইটের মতো পাতিলেবুগুলো ঝুলছিল। আর এদিকে, বেশ কিছুদিন হল পাতিলেবু নিয়ে আমি আর আমার মা পাগল ।অবশেষে বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসেছে বাবা। আর দিদির বাড়ি এসে দেখি কত পাতি লেবু।
তাহলে আপনিই বলুন , যে এটা ঠিক গ্রামের মানুষজন সহজেই ফল সবজি পেয়ে যায়। যাইহোক তখন তো আবহাওয়া ভীষণ ভালো ছিল। আকাশে নামমাত্র মেঘ ও ছিল না। যাওয়ার সাথে সাথে নিলয়ের সাথে দেখা। নিলয়ের গল্প আমি আপনাদের সাথে বলেছি ।নিলয় আমার পিসতুতো দাদার ছেলে। ওউ অনেক বছর পরে হয়েছিল। ওর কারণেই তো আমাদের জামালপুর বাবা বুড়ো রাজ মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়া হয়েছিল। আশা করি আপনারা মনে করতে পারছেন। আমি এ নিয়েও পোস্ট লিখেছিলাম। যাইহোক আমি আর ঈশান মিলে নিলয়কে একটু আদর করে ভেতরে ঢুকে গেলাম।
তারপরের মজার ঘটনাটা পরের পোস্টে জানাবো। আজকে এখানেই শেষ করলাম। এখানেই শেষ করছি বলে আবার আমার ওপর রাগ করে বসবেন না কেউ। কারণ এই সংক্রান্ত মজার গল্পটা এখানে বললে সাসপেন্স টা হারিয়ে যেত।
সকলে ভালো থাকুন।
TEAM 5
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator08.তোমার পোস্টটা পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো। গ্রাম আমারও খুব ভালো লাগে। বড় হয়ে গেলে সবাই নানান ব্যস্ততার মধ্যে পড়ে যায়।। তাই কোন আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি যাওয়া হয়ে ওঠে না। তুমি তো পড়াশোনা কর তোমার পক্ষে সম্ভবই নয়। তাও চেষ্টা করবে যাবার তাহলে সবার ভালো লাগবে। ভালো থেকো ।এই ভাবেই এগিয়ে যেও।
আমি খালি তোমার কমেন্ট পড়ছি, আর দেখছি তুমি কি সুন্দর করে সবকিছু শিখে গেছো। আমার যে কি ভালো লাগছে তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না। এত সুন্দর করে কমেন্ট লিখছো। ভাষাগত দিক দিয়ে এত সুন্দর হচ্ছে। খুব খুব ভালো। বেশি দিন আর বাপের বাড়ি থেকো না, এবার তাড়াতাড়ি ফিরে এসো।