মেলায় ঘোরাঘুরি
আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আমিও ভালো আছি ।কিন্তু বিগত কিছুদিন ধরে শরীরটা ভালো ছিল না। তাই একটু প্রবলেমে ছিলাম। এখন আবার সুস্থ আছি ঠাকুরের আশীর্বাদে।
অনেকদিন আগে মেলায় ঘুরতে যাওয়ার অনেকগুলো ছবি আমি তুলে রেখেছিলাম। কিন্তু এই নিয়ে পোস্ট লেখা হয়নি। মেলার সংক্রান্ত ব্যাপারে আপনাদের সমস্ত কিছু বলেছিলাম। কিন্তু ঘুরতে যাওয়ার ব্যাপারে আর বলা হয়নি। তাই ভাবলাম কি কিনেছি আর ঘোরাঘুরির ব্যাপার নিয়ে আজকে একটু লিখি। সাথে গ্যালারিতে ঘাটতে ঘাটতে এই ছবিগুলো বের হয়ে আসলো। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলে এলাম।
বারোদোলের মেলা এখন তো আর নেই। এই ১৯ তারিখে হয়ে শেষ হলো।আমি বোধহয় তিন দিন গিয়েছিলাম। আমার ঠিক খেয়ালও পড়ছে না। আমার মায়ের ইচ্ছা ছিল একবার আমার সাথে যাবে ।কিন্তু মায়ের নানান ব্যস্ততায় সেগুলো সম্ভব হয়ে ওঠেনি ।আসলে কৃষ্ণনগরের সবথেকে বড় মেলা। সকলেই একটা আশা নিয়ে থাকে ।মেলা আসলেই সবাই অন্তত একবারের জন্য হলেও যাওয়ার ইচ্ছা রাখে।
কিন্তু এবার আমার মায়ের বেশ দুঃখ ,কারণ মা-এর এবার মেলা ঘুরতে যাওয়া হয়নি। মা শুধুমাত্র পুজোর তিনটে দিনের মধ্যে প্রথম দিন মেলায় গিয়েছিল শুধু পুজো দিয়েই চলে এসেছিল। তারপর আর মা র যাওয়া হয়নি।
আর এটাও ঠিক যে আমি যদি মায়ের আশায় বসে থাকতাম ,তাহলে আমারও এবার আর মেলা দেখতে হতো না। সকাল থেকে নানান কাজে ব্যস্ত থাকার পরে বিকেল বেলার সময়টায় আর মা বেরোতে চায়না ।মা ভীষণ ক্লান্ত থাকে। সচরাচর আমার মা বেরোয় না ।আমি যেমন খুব ঘুরতে ভালবাসি ।মা সেরকম ঘুরতে ভালোবাসে না।।
তবে মেলায় কাপ প্লেট কেনার জন্য আমার মাএর যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। আসলে মেলায় বড় বড় কিছু স্টল হয়। যেমন বিগ বাজার ,ডিসকাউন্ট বাজার- এরকম কিছু কিছু বড় মার্কেট বসে ।যেখানে খুব ভালো ভালো জিনিস পাওয়া যায়।
মেলার মাঠে সাধারণত কম দামের এবং ভেজাল জিনিসই বিক্রি হয়। কিন্তু আমাদের এই বারো দোলের মেলাতে তিনটে মার্কেট একটু অন্য ধরনের হয়ে থাকে। আর বাকি মার্কেটগুলো নরমাল ধরনের হয়। অর্থাৎ যেমন অন্য মেলাতে থাকে।
আমরা ছোটখাটো ওই সমস্ত দোকান আর ঘুরে সময় নষ্ট করতে যাই না ,সোজা ঢুকে পরি বিগবাজার না হলে ডিসকাউন্ট বাজারের ওই বড় মার্কেট গুলোতে। ওখানে বেশ বড় বড় ভালো ভালো স্টল খোলা থাকে। সবথেকে আকর্ষণীয় লাগে চিনেমাটির দোকান গুলো।তারপর হস্তশিল্পের কত ধরনের জুয়েলারি এবং ব্যাগের দোকান থাকে। এইগুলো আমার চোখ ভীষণ পরিমাণে কেড়ে নেয়।
মা যাবে যাবে বলে যখন যাওয়াই হলো না। তখন আর কি করা যাবে ।তবে আমি ভাগ্যিস আমার পাশের বাড়ির বৌদিদিকে নিয়ে ঘুরে এসেছিলাম। এতদিনে হয়তো মৌসুমী বৌদির সাথে আমার সম্পর্কটা আপনাদের কাছে খুবই ভালোভাবে ক্লিয়ার হয়ে গেছে। ও আমার খুব কাছের একজন মানুষ ।ও কোন কিছুতেই না বলে না, আমি যখনই ঘুরতে যেতে চাই। এখন আমার ঘুরতে যাওয়ার সঙ্গী হিসেবে ওই আছে। সব থেকে বড় কথা আমার বাড়ির লোকজনও বেশ চিন্তামুক্ত থাকে বৌদি থাকে বলে।
প্রথম দিন আমার মনে আছে আমি, বৌদি আর আমার এক বন্ধু গিয়েছিলাম। সেদিনকে কেনাকাটা বলতে শুধু দুটো ব্যাগ কিনেছিলাম। আর সেরকম কিছুই কেনা হয়নি ।তারপরে দই ফুচকা, লস্যি ,আইসক্রিম এসব খাওয়া-দাওয়া করেছিলাম ।সেদিন সমস্ত মেলাটা খুব ভালোভাবে দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছিল এবং ভেবে রেখেছিলাম পরেরবার এসে আরো অনেক কিছু কিনে নিয়ে যাব।
তার পরেরবার যখন আসলাম ।তখন আমি, ঈশান আর বৌদি এসেছিলাম। সেদিনকে আমি পছন্দমত আমার একটা কাপ কিনেছি আর ঈশানের খেলনা আর এই ফ্যানটা দেখে আমার ভীষণ ভালো লেগেছিল। এগুলো সাধারণত মেকআপ সেটিং এর জন্যই ব্যবহার করা হয় ।এত গরমে বাইরে বেরোলে মুখে মেকআপ রাখলে তবে এই ফ্যানগুলো ঠিকঠাক। কিন্তু আমি তো মেকআপ করি না সেরকম।তাই এই ফ্যান কিন্তু আমি কিনিনি ।আমার ভাই এত ছোট একটা ফ্যান দেখে লোভ সামলাতে পারল না। ও খুব জেদ করতে লাগলো।
তাই ওকেই আমি ফ্যানটা কিনে দিয়েছি। সেদিনকেও আমরা দই ফুচকা আইসক্রিম এসব খেয়েছিলাম ।সাথে বাড়ি ফেরার পথে জিলিপি, বাদাম ভাজা আর মায়ের জন্য আইসক্রিম নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম।
যেদিন লাস্ট গেলাম সেদিন ভেবেছিলাম মাকে পরের বার নিয়েই আসবো। কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠেনি।
মার সাথে থাকলে আমি হয়তো আরো জিনিস কিনতে পারতাম। আসলে বাড়ির জিনিসপত্র যখন কিনতে যাই, তখন মা সাথে না থাকলে ঠিক সাহস পাই না। মাকে জিজ্ঞেস করে করেই সাধারণত আমি জিনিসপত্র কিনে থাকি। আমি বাইরে একা বেরোলেও মাকে ভিডিও কল করে দেখিয়ে জিনিস নিই।
এখনো নিজে নিজে অত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস পাই না ।তাই জন্য মেলার মাঠে অনেক কিছু পছন্দ হলেও বাড়ির জন্য আমি কিনতে পারিনি। আবার পরের বছর এই মেলা বসবে। তখন অবশ্যই মাকে আগে নিয়ে যাব।।
বারো দোলের মেলা নামটা শুনতেই তো কেমন অন্যরকম লাগছে। আপনার ফটোগ্রাফি দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেলায় কত আনন্দ করেছেন। আপনারা আসলে মেকআপ ফ্যান গুলো আমি নিজেও দেখেছিলাম। আপনার মত করেই আমি তেমন একটা মেকআপ করি না, তাই কেনা হয়নি।
মেলায় যাবেন আর ফুচকা খাবেন না এটা তো আর হতে পারে না। আমাদের মেয়েদের সবচাইতে প্রিয় খাবার হচ্ছে ফুচকা। যেটা আমরা যে কোন জায়গায় গেলে দেখলে আর সামলাতে পারি না। আপনার ভাইয়ের জেদ অনুযায়ী ফ্যান এবং বেশ কিছু জিনিস আপনি কিনেছেন। ধন্যবাদ মেলায় ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্তটা আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
TEAM 2
Congratulations! This post has been voted through steemcurator05. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য।
TEAM 2
Congratulations! This post has been voted through steemcurator05. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.আমারা মেলায় ভালোই ঘুরেছি। অনেক আনন্দ করেছি।আর অনেক কিছু কেনাকাটা ও করেছি। তোমার পোস্ট টা খুব ভালো লাগলো।