আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-৫৭||প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর বিপর্যয়ের থিম ঘুড়ি।
♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।
আজ হাজির হয়ে গেলাম একটা ডাই পোস্ট নিয়ে। যদিও এটি মূলত কন্টেস্ট উপলক্ষেই তৈরি করা।আর এটি হলো ঘুড়ি তৈরি। আসলে, এটা মূলত ছোট বেলার একটা স্মৃতি। যদিও এই ঘুড়ি উড়ানোর বিষয়ে ছেলেদের অভিজ্ঞতাই বেশি। তবুও চেষ্টা করতে ক্ষতি কি। ছোট বেলায় একবার প্লাস্টিকের একটা ঘুড়ি বানাতে চেয়েছিলাম, যদিও খুব ভালো হয়নি,বাতাসে কিছুক্ষণ উড়ানোর সাথে সাথে সুতা ছিড়ে গিয়েছিল। যাইহোক সেইসব কথা বলতে গেলে শেষ হবে না।
তবে আজকের ঘুড়িটার বিষয়ে কিছু কথা শেয়ার না করলেই নয়। এটা হলো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সমসাময়িক অবস্থা নিয়ে তৈরি করা।দেখুন একপাশে সবুজ গাছপালা,পাখি,সবকিছু সতেজতায় ভরা।আর এটাই ছিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। কিন্তু এই প্রকৃতি এখন বিরূপ প্রভাব ফেলছে,ডান পাশের অংশে সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।মানে পৃথিবীটা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। গাছপালা নিধন,পরিবেশের বিপর্যয় হতে হতে দেখা যাবে সবকিছু মৃত হয়ে যাচ্ছে,সজীবতা নেই,চারদিকে আগুনের ফুলকির মত তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে।
জ
যাইহোক আশা করি আমার ঘুড়ি তৈরির মূল থিম আপনারা বুঝতে পেরেছেন।এজন্যই আমি এর নাম দিয়েছি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর বিপর্যয়ের থিম ঘুড়ি। যেটা কিনা প্রকৃতির ২টি রূপ প্রকাশ করে দিচ্ছে।
উপকরণসমূহ |
---|
রঙিন কাগজ
সাদা কাগজ
আঠা
কাঁচি
রঙ
তুলি
শলাকাঠি
টেপ
সুতা
প্রথম ধাপ |
---|
প্রথমে বড় একটা সাদা কাগজ নিলাম। তারপর এটি বড় মাপে বর্গাকার আকৃতিতে কেটে নিলাম। তার পাশাপাশি পরিমাণ মতো শলাগুলো ভেঙে নিলাম।
দ্বিতীয় ধাপ |
---|
এভাবে শলা গুলোকে চার কোনা ভাবে আমি বসিয়ে নিলাম। তারপর এক এক করে প্রতিটা জয়েন্টে সুতা দিয়ে বেঁধে দিলাম।
তৃতীয় ধাপ |
---|
প্রতিটা জয়েন্টে পূর্বে কেটে রাখা কাগজ টি লাগালাম। তারপর টেপ দিয়ে এগুলো আবার মাঝখান বরাবর জোড়া লাগিয়ে দিলাম। আসলে যাতে এটি ভালোভাবে একসাথে এঁটে যায় সেজন্যই টেপ দিয়ে জোড়া লাগালাম।
চতুর্থ ধাপ |
---|
এই ধাপে অপর পিঠে আমি মাঝ বরাবর মার্কার দিয়ে একটা দাগ টেনে নিলাম। এই দাগের একপাশে হবে সবুজ প্রকৃতি আর অন্যপাশে খাঁ খাঁ মরুভূমির মত, যেখানে দাউদাউ করে আগুন জ্বলার মত অবস্থা।
পঞ্চম ধাপ |
---|
এখন হলুদ রঙের কাগজ কেটে নিলাম গাছের আকারে। তারপর এটা মার্কার দিয়ে দেয়া দাগের বাম পাশে আঠা দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দিলাম। এভাবে আরো কয়েকটা শাখা প্রশাখা কেটে গাছের মতো আকার তৈরি করে নিলাম।
ষষ্ঠ ধাপ |
---|
এভাবে সবুজ রঙের একটা কাগজ ভাঁজ করে নিলাম। তারপর অনেকগুলো পাতার ডিজাইনে এঁকে নিলাম। তারপর পাতাগুলো কাঁচির সাহায্যে কেটে নিলাম।
সপ্তম ধাপ |
---|
এখন আবার কালো রঙের একটা কাগজ থেকে গাছের ডিজাইনে কাগজ কেটে নিলাম। শাখা প্রশাখা গুলো কেটে নিলাম। তারপর কালো দাগের ডান পাশে এগুলো আরেকটা মৃত গাছের মতো বসিয়ে দিলাম।
অষ্টম ধাপ |
---|
এই ধাপে পূর্বে কেটে রাখা পাতাগুলোকে আঠার সাহায্যে বাম পাশের হলুদ রঙের গাছটার মধ্যে লাগিয়ে দিলাম।
নবম ধাপ |
---|
এখন নীল রঙের একটা কাগজ থেকে অর্ধবৃত্তাকার একটি অংশ কেটে নিলাম। ঠিক একইভাবে একই মাপে কালো রঙের একটা অর্ধ বৃত্ত কেটে নিয়েছি। আর এই দুটো অংশ জোড়া লাগিয়ে ঘুড়ির নিচের দিকের অংশে লাগিয়ে নিলাম।
দশম ধাপ |
---|
এখন হলুদ রঙের কাগজ থেকে আগুনের মত ডিজাইন করে একটা শেপ এঁকে নিলাম। তারপর এটা কালো অংশের উপরে লাগিয়ে দিলাম।
একাদশ ধাপ |
---|
এখন সবুজ রঙের কাগজ থেকে কিছু প্রজাপতি কেটে নিলাম। আর কালো রঙের কাগজ থেকেও আরো কিছু প্রজাপতি কেটে নিলাম।
দ্বাদশ ধাপ |
---|
এখন প্রজাপতি এর মাঝ বরাবর আঠা লাগিয়ে সুতা দিয়ে আটকে দিলাম। এভাবে ছয়টি প্রজাপতি দিয়ে একটি সুতা তৈরি করে নিলাম। সবুজ এবং কালো প্রজাপতি দিয়ে দুই লতা তৈরি করলাম।
ত্রয়োদশ ধাপ |
---|
এই ধাপে বাম পাশের গাছের পাতাগুলোতে সবুজ রং দিয়ে এঁকে নিলাম।যাতে করে পাতাগুলো উজ্জ্বল দেখা যায়।
চতুর্দশ ধাপ |
---|
এইখানে নীল রঙের অংশ যেহেতু পৃথিবী তাই এর মাঝে সবুজ রঙ দিয়ে কিছু অংশ রঙ করলাম।তারপর সবুজ রঙের কিছু পাতা কেটে নিলাম। তার পাশাপাশি আবার ঝরকার মত করে কিছু অংশ লম্বালম্বিভাবে কেটে নিলাম। পাতাগুলো আবার নীল রঙের কাগজের নিচে লাগিয়ে দিলাম। আর সবুজ ঝরকাগুলোকে ঝুলন্তভাবে লাগিয়ে দিলাম।
পঞ্চদশ ধাপ |
---|
সবুজ রঙের ঝরকার মত কালো রঙের কাগজ কেটে ঝরকা তৈরি করলাম এবং আঠার সাহায্যে সবুজ রঙের পাশের কালো অংশে লাগিয়ে দিলাম।
ষোড়শ ধাপ |
---|
এইধাপে আগুনের মত করে শেপ কেটে নিলাম। এখানে সবগুলো ছোট ছোট করে কেটে নিয়েছি।
সপ্তদশ ধাপ |
---|
এখন আঠার সাহায্যে আগুনের ফুলকি গুলো এক এক করে ডান পাশের অংশে লাগিয়ে দিলাম। বড় সাইজের ৩কোনে ৩ টা আর ছোটগুলো মাঝখানে লাগিয়ে দিলাম।
অষ্টদশ ধাপ |
---|
এখন পাশের দুই অংশে প্রজাপতির লতাগুলো লাগালাম।সবুজের পাশে সবুজ প্রজাপতি আর কালোর পাশে কালো কাগজের প্রজাপতি।
ফাইনাল আউটলুক |
---|
এইতো তৈরি করে ফেললাম থিম ঘুড়ি।যেটা কিনা বর্তমান এবং অতীত পরিস্থিতিকে জানান দিচ্ছে।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সত্যি আপু অসাধারণ। আপনার ক্রিয়েটিভির প্রশংসা না করে পারছি না। কী চমৎকার করেছেন কাজটা। অন্যদের মতো আপনি শুধু ঘুড়ি তৈরি করেন নি। ঘুড়ির উপর প্রকৃতির দুইটা অবস্থা সম্পর্কে আর্ট করেছেন। এককথায় অসাধারণ। চমৎকার ছিল আপনার কাজটা। আপনাকে ধন্যবাদ আমাদের সাথে এইরকম একটা ক্রিয়েটিভ ঘুড়ি শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া খুব সুন্দর মতামত দিয়েছেন। আসলে ঘুড়ি তৈরিতে এক্সপার্ট না হলেও চেষ্টা করেছিলাম এভাবে ফুটিয়ে তোলার।
অসাধারণ একটা থিম নিয়ে ঘুড়ি টা তৈরি করেছেন আপু। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আমাদের সুন্দর এই প্রকৃতি এখন আসলেই বিপর্যয়ের পথে। প্রকৃতির এই বিপর্যয়ের কারণে বর্তমানে এতটা গরম পড়ছে। আপনার তৈরি ঘুড়িটা বেশ সুন্দর লাগছে দেখতে। প্রজাপতিগুলো দেওয়ার কারণে ও বেশ ভালো লাগছে। শুভকামনা রইল আপু।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যটা দেখে, ভালো থাকবেন।
প্রথমেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছি প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণ করার জন্য।খুবই ইউনিক একটি ঘুড়ি তৈরি করেছেন আপু।আপনার বুদ্ধির জবাব নেই।দারুন হয়েছে আপনার তৈরি করা ঘুড়ি টি খুবই আকর্ষণীয় লাগছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হাহাহা মজা পাইলাম আপু। বুদ্ধি খুঁজে খুঁজে বের করে ফেলেছি আর কি। যাই হোক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রথমে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। সত্যিই আপু ঘুড়ি বানানো অনেক কষ্টের একটি বিষয়। যদিও আমরা গ্রামে ছোট বেলায় খুব সহজেই ঘুড়ি তৈরি করে নিতে পারতাম। কিন্তু আমাদের জন্য সেটা তখন খুবই ইজি ছিল। আর গ্রামীণ পরিবেশে থাকলে একটু সহজ হয়। কিন্তু অনেক ইচ্ছে ছিল ঘুড়ি তৈরি করার কিন্তু সম্ভব হলো না এই শহরের পরিবেশে তাছাড়া একটু ব্যস্ত ছিলাম তাই। তবে আপনার সুন্দর একটি ঘুড়ি তৈরি করা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি।
হ্যাঁ আপু আমি বাড়িতেই ছিলাম।মূলত বাড়ির পাশে জমিতে গিয়ে ঘুড়ি উড়াতে পেরেছিলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু।