১ম পর্ব || শ্যামাঙ্গনা

in আমার বাংলা ব্লগ21 days ago

01-05-2024

১৮ বৈশাখ , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼


book-4133988_1280.jpg

copyright free image from pixabay

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে চলে এলাম আপনাদের সাথে একটি গল্পের প্রথম পর্ব শেয়ার করার জন্য। আপনারা জানেন যে আমি প্রায়ই গল্প লিখে থাকি। গল্প লেখাটা অনেকটা কবিতা লেখার মতোই। তবে আপনার কাল্পনিক চিন্তাধারার সাথে বাস্তবিক কাহিনীর সংমিশ্রণে একটি গল্প তৈরি হয়। আমি যেহেতু কনটেন্ট রাইটিং প্রফেশনাল কোর্স করেছি। সে হিসেবে আমি জানি কিভাবে একটি গল্প লিখতে হয়। কিভাবে একটি চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে হয়। যাইহোক, আজকে গল্পরে প্রথম পর্ব লিখলাম। আশা করি আজকের পর্বটি উপভোগ করতে পারবেন।

মা মরা মেয়ে কাজল। ছোট থেকেই বাবার কাছে বড় হয়েছে কাজল। কিন্তু কাজলের মা মারা যাওয়ার পর মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিয়ে করেছিল রফিক সাহেব। কিন্তু রফিক সাহেব তার আগের মতো স্ত্রী পাচ্ছিল না। অর্থাৎ কাজলের মায়ের মতো। যে কি না শ্যামবর্ণের হলেও, কাজল কালো চোখ, দেখে যে কেউ মায়ায় পরে যেত। কাজল ঠিক তার মায়ের মতো দেখতে হয়েছে। রফিক সাহেব অঢেল ধনসম্পদের মালিক।। ঢাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাট আছে। একটি মেয়ের থাকার জন্য এটা হয়ে যাবে। নতুন বিয়ে করলে মেয়েকে নিয়েই থাকবে। যেহেতু রফিক সাহেবের টাকার অভাব ছিল না তাই অনেক মহিলাই বিয়ে করতে রাজি। রহমান ঘটকের সহায়তায় একজন মহিলাকে পায়। যার নাম জোবায়দা বেগম। রফিক সাহেব ঘটককে আগেই বলে দিয়েছিল যাকে আবার বিয়ে করবে সে যেন কাজলকে দেখাশোনার পুরো দায়িত্ব নেয়। কোনো রকম ঘাটতি যাতে না হয়। অবেশেষে জোবায়দা বেগমের সাথে রফিক সাহেব বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়!

বিয়ের পর সব যেন উল্টো হয়ে যায়। জোবায়দা বেগম ঠিকমতো কাজলের দেখাশোনা না করিয়ে উল্টো তাকে দিয়েই ঘরে সব কাজ করাতো। রফিক সাহেব জোর গলায় কিছু বলতেও পারে না। মা মরা মেয়ে কাজল তার বাবার কাছে এসেই সব বলতো। তার সৎ মায়ের অমানসিক নির্যাতন আরও বেড়ে যায় যখন সৎ মায়ের ঘরে মায়ার জন্ম হয়। মায়া হয় কাজলের সৎবোন। সৎবোন হলেও কাজল তাকে আপন বোনের থেকেও বেশি আদর করতো। কিন্তু তার সৎমা কিছুতেই মায়াকে কাজলের সাথে মিশতে দিতো না। কাজলকে দিয়ে সব কাজ করালেও তার মেয়েকে দিয়ে কোনো কিছুই করাতো না। কাজল কোনোভাবে এইস এস সি পাশ করে শুধুমাত্র তার বাবার সাপোর্টের কারণে। তারপর আর পড়াশোনার সুযোগ হয়নি কাজলের! সৎ বরং তাকে পড়াশোনা করতে দেয়নি। এদিকে মায়াকে ঠিকই ভালো স্কুলে পড়াশোনা করিয়েছে। দুজনের বয়সে ব্যবধান চারবছর হলেও দুজনই একইভাবে বেড়ে উঠেছে!

মায়া আবার কাজলকে পছন্দ করতো। সে বোনের মতোই ভালোবাসতো কাজলকে! মা শাসন করবে তাই লুকিয়ে লুকিয়ে কথা বলতো মায়া। মায়ার খুব মায়া হয় তার বড় বোনের জন্য। কিন্তু তার দাজ্জাল মায়ের জন্য কিছু করতেও পারে না! মায়া ভার্সিটিতে উঠার তার দাজ্জাল মা ঠিক করে মায়াকে বিয়ে দিয়ে দিবে। কিন্তু ঐদিকে কাজলের যে বয়স বেড়ে যাচ্ছে সে খেয়াল নেই দাজ্জাল মায়ের। তার কিছুদিন পর বিয়ের সম্বন্ধ আসে মায়াকে দেখতে! বিয়ের পাত্র ভালো একটা কোম্পানিতে জব করে। ছেলে দেখতেও মাশাআল্লাহ। কিন্তু ঝামেলা হলো ছেলের পরিবার যখন মায়াকে দেখতে আসে তখন মায়াকে পছন্দ না করে তার বড় বোন কাজলকে পছন্দ করে ফেলে! বিপত্তি হয়ে যায় সেখানেই। তার সৎভাবে তখন বিয়েটাই ক্যান্সেল করে দেয় এবং পাত্রপক্ষের লোকদেরকে অপমান করে বাসা থেকে বের করে দেয়!

তারপর থেকে কাজলের সৎ মা কাজলের সাথে আরও খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। বাসার কাজের মেয়ের মতো খাটায় কাজলকে। তারপরেও ছেলেপক্ষ এসে কাজলকেই চয়েস করে ফেলে! এ নিয়ে রফিক সাহেবের সাথে প্রায়ই ঝগড়া হয়। রফিক সাহেব জোবায়দা বেগমের কথা শুধু শুনে। তার মেয়ের কোনো দোষ নেই। সে ইচ্ছে করেই কাউকে তো বলে না! ছেলেপক্ষই এসে তাকে চয়েস। এতে তারই বা দোষ কিসের! কিছুদিন পর আবারো একটা পাত্রের সন্ধান পায় জোবায়দা বেগম। মায়াকে বিয়ে দিতে যেন মরিয়া। যেকোনো মূল্যে হোক বিয়ে দিতে হবে। পাত্র এবার সরকারি চাকরি করে। কোনোভাবে বিয়েটা গুছাতে পারলেই হলো।

মায়া পাত্রপক্ষের সামনে বসে আছে! মাথায় ঘোমটা নেই! ইতোমধ্যেই কানাকানি শুরু করে দিয়েছে পাত্রপক্ষের ছোটবোন রিমি! পাত্রী দেখতে এসে মাথায় ঘুমটা নেই তা কি করে হয়! তখনই জোবায়দা বেগমের চোখের ইশারা। পাত্রপক্ষের মাকে পায়ে ধরে সালাম করার জন্য। মায়া তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে পাত্রপক্ষের মায়ের পায়ে সালাম করে। পাত্রপক্ষের মা, থাক থাক মা, বেচেঁ থাকো বলে সম্বোধন করে। ঠিক তখনই পাত্রপক্ষের মা মায়াকে দেখে প্রশ্ন করে বসলো -

" তা মা তোমার পুরো নাম কি? "

" মেহরুমা আফরোজ মায়া! "

" বাহ! ভারী মিষ্টি নাম তো! "

পাত্রপক্ষের মায়ের কথাশুনে মায়া হাসলো। মায়াকে দেখতে ছেলের ছোটবোন, ফুফু ও মা এসেছে। মেয়ে পছন্দ হলে আজই বিয়ের কাজ সেরে ফেলবে!

চলবে,,,,,



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG-20211205-WA0092.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  
 21 days ago 

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 70118.25
ETH 3744.50
USDT 1.00
SBD 3.84