কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। পোস্টের টাইটেল পড়ে বুঝে গেছেন বরশি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দঘণ এক মুহূর্ত আপনাদের মাঝে ব্যক্ত করতে চলেছি। ইতো পূর্বে আপনারা প্রথম পোস্ট দেখতে পেরেছেন, এখন আমি আবারো উপস্থিত হয়েছি বরশি দিয়ে মাছ ধরার দ্বিতীয় বা শেষ পর্ব নিয়ে। আর এই মাছ ধরার কনটেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনজন। সেখানে আপনাদের সুপরিচিত দুই ইউজার এবং তাদের খালাতো ডাক্তার ভাই। তাহলে চলুন শেষ পর্ব শুরু করা যাক।
হামজা ভাইয়ার পরে দশ মিনিটের জন্য সুমন ভাইয়া বড়শি হাতে নিলেন। যেহেতু ময়দা দিয়ে মাছ ধরা চলছিল। উনি খুব ভালোভাবে ময়দাটা মাখিয়ে নিলেন। বললেন দেখুন কত মাছ ধরি আমি। এরপর সে বড়শি ফেলা শুরু করে দিল। বড়শি ফেলার সাথে সাথে মাছ ধরে ফেললেন। বড় একটি তেলাপিয়া মাছ উঠল। ঠিক এভাবে আবারও বসিয়ে ফেললেন একটি এক কেজি সাইজের পাঙ্গাস মাছ উঠল। এরপর আবারো উঠল একটি তেলাপিয়া মাছ। এতে বেশ আনন্দ হচ্ছিল মাছ ধরার তালে তালে। হামজা ভাইয়া তো সুমন ভাইয়ার মাছ ধরা দেখে আবার রেডি হয়ে পড়লেন,তার আর দেরি সইছেনা। কখন তার পর্ব আসবে।
| |
দেখতে দেখতে দুইজনার মাছ ধরা দিয়ে বেশ কিছু মাছ জমা হয়ে গেল ঝাল গাছের গোড়ায়। এরপর সুমন ভাইয়ের দশ মিনিট পার হয়ে গেল। উনি দুইটা তেলাপিয়া আর একটি পাঙ্গাস মাছ ধরলেন। এবার পর্ব আসলো আমার ছেলের আব্বুর। হামজা ভাইয়া যেহেতু আমাদের অতিথি। তাই সে হামজা ভাইয়াকে আবার ১০ মিনিটের সুযোগ দিলেন। এবার হামজা ভাইয়া মাছ ধরতে শুরু করে দিল।
| |
পশ্চিম আকাশে সূর্য এমন ভাবে চোখমুখে লাগতে থাকলো বড়শিতে মাছ না উঠুক কিন্তু গায়ের ঘাম ঠিকি ঝরে পড়ছে। আর এভাবে হামজা ভাইয়ার বিরক্তিকর ৫ মিনিট পার হয়ে গেল। তবে কোন মাছের দেখা তিনি পেলেন না। পানি অতিরিক্ত গরম থাকায় মাছ যেন বড়শির পাশে আসছে না। আশেপাশে মাছ ঠিকই খাবার খেতে এসেছে নড়ছে কিন্তু বড়শিতে মুখ লাগাচ্ছেন না। তারপরেও কপালগুণে লাস্টের দশ মিনিটে দুইটা মাছের দেখা পেলেন। তবে এতে যেন উনি সন্তুষ্ট হবেন না। কারণ উনার আশা ছিল দেড় কেজি ওজনের একটি পাঙ্গাস ধরবো। আর এতে হামজা ভাইয়া অতিরিক্ত বিরক্তি হয়ে খাবার দেওয়া মাচা থেকে চলে আসলেন। এরপর আমার ছেলের আব্বুর পালা ছিল। তিনি বললেন সুমন ভাইয়াকে আবারো ১০ মিনিট টাইম দেওয়া হোক পরবর্তীতে সে একবারে বিশ মিনিটের জায়গায় মাত্র ১৫ মিনিটে মাছ ধরে দেখিয়ে দিবে। কিন্তু সুমন ভাইয়া রাজি হলেন না। তিনি বললেন আমি শেষেই ধরবো।
এরপর আমার ছেলের আব্বু মাছ ধরতে শুরু করলো। তিনি মাচার উপর না গিয়ে, মাটিতে বসে পড়লেন আসন গেড়ে। কারণ ওখানে গেলে মাথায় রোধ লাগবে। এরপর সে মাচার নিচে মাছের খাবার ফেলতে থাকলো। বসে বসে ছোট ছোট তেলাপিয়া একটার পর একটা ধরতেই থাকলো। এতে হাসাহাসি হতে থাকলো। এত ছোট ছোট তেলাপিয়া মাছ ধরে লাভটা কি। এরপরেও সে বলতে থাকলো মাছ তো ধরে দেখাচ্ছি। আসলে কথা এটাই। আর যাই হোক সে ছোট বা বড় মাছ তো ধরছে।
ঠিক এভাবে নির্ধারিত ১৫ মিনিটের মধ্যে সে মাছ ধরে ফেলো এগারোটা। তার মধ্যে দুইটা মাছ বেশ বড় ছিল। সম্ভবত প্রায় দেড় কেজি হবে মাছগুলো। এরপর আসলো সুমন ভাইয়ের পালা। তিনি বরশি নিয়ে মাচার উপর গেলেন এবং পুকুরে বড়শি ফেললেন। সাথে সাথে দেড় কেজি ওজনের একটি পাঙ্গাস মাছ বেঁধে গেল। অর্থাৎ দীর্ঘক্ষণ রাজের আব্বু বসে থেকে যত তেলাপিয়া ধরল না কেন, একটি পাঙ্গাস মাছ তার চেয়ে বেশি ওজন হবে। এতে যেন আরো হাসাহাসি বৃদ্ধি পেতে থাকলো। অবশেষে সুমন ভাইয়া আরও একটি বড় তেলাপিয়া মাছ ধরল। মোট তেলাপিয়া মাছের মধ্যে এটাই ছিল সবচেয়ে বড় তেলাপিয়া মাছ। হিসেবে রাজের আব্বু যে মাছগুলো ধরেছে সংখ্যায় বেশি হতে পারে, তবে কারোর মন সন্তুষ্ট করতে পারিনি। কারণ মাছগুলো ছিল অতিশয় ছোট। এদিকে সুমন ভাইয়া ৪-৫টা তেলাপিয়া আর বড় বড় দুইটা পাঙ্গাস মাছ ধরে সবাইকে সন্তুষ্ট করে ফেলেছে। সকলের তেলাপিয়া মাছ এক পাল্লায় ওজন করলে যা হবে না হবে, সুমন ভাইয়ের মাত্র দুইটা পাঙ্গাস মাছ ওজন করলে তার বেশি হবে। আর এভাবেই আমাদের আনন্দঘন এক মাছ ধরার মুহূর্ত শেষ হলো।
ধন্যবাদ সকলকে
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন বরশি দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। আসলে বরশি দিয়ে মাছ ধরার মজাই আলাদা। আর সেটা যদি হয় প্রতিযোগিতামূলক তাহলে তো আর ও বেশি মজা পাওয়া যায়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
একদম ঠিক বলেছেন আপনি।
বড়শি দিয়ে মাছ ধরার মজাই আলাদা। গতবছর আমরাও এরকম একটা প্রতিযোগিতা করেছিলাম । অনেক ভালো লাগে যখন বরশি ফেলানোর সাথে সাথে মাছ ওঠে । আর যদি মাছ না পাওয়া যায় সত্যিই অনেক খারাপ লাগে। প্রতিযোগিতাটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। পুকুরে অনেক মাছ আছে দেখছি । সবাই কম বেশি মাছ পেয়েছে ভালো লাগলো । এই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক কাজ অনেক আনন্দ দিয়ে থাকে।
হ্যাঁ বিরক্ত চলে আসে যদি মাছ না পাওয়া যায়।