জেনারেল রাইটিং ✍️ক্ষমতা ।

২৪বৈশাখ , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।

বহুল আলোচিত একটি বাক্য ক্ষমতা তখনই দরকার হয় যখন অন্যের উপর বল প্রয়োগ করা বা খারাপ কিছু করতে চাওয়া হয়। অন্যথায় কিন্তু ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু জয় করে নেয়া যায়। মানুষ প্রতিষ্ঠিত হতে চায় সমাজে নিজের স্থান ধরে রাখতে চায়। আর নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করে রাখতে মানুষ ক্ষমতা অর্জন করতে চায়। আর ক্ষমতা অর্জন করতে চাই এজন্য যেন মানুষের উপর দাম্ভিকতা দেখাতে পারে। আমাদের সমাজের বেশিরভাগ মানুষের পরিস্থিতি এখন এরকমটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আত্ম সম্মান বলতে এদের মধ্যে কোন কিছু নেই। এরা শুধু নিজের শক্তিমত্তা অন্যের উপর প্রয়োগ করে নিজেকে শক্তিশালী বা পাওয়ারফুল মানুষ বলে দাবি করতে চায়। এজন্যই বিশিষ্টজনেরা বলে যেখানে বুদ্ধি দিয়ে সফলতা অর্জন করা যায় সেখানে কেন শক্তি দিয়ে কাজ করতে হবে। একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যদি মানুষের ভালোবাসা অর্জন করা যায় তাহলে কিন্তু সেখানে আরো বেশি ভালো থাকা যায়। মানুষের ভালোবাসা নিয়ে সম্মানের সাথে থাকা যায়। বল প্রয়োগ করে কিন্তু বেশিদিন মানুষের উপর কর্তৃত্ব দেখানো সম্ভব হয় না। যুগে যুগে কত শক্তিধর ব্যক্তি পৃথিবীতে এল আর গেল হিসাব নেই। কেউ কিন্তু মানুষের উপর অন্যায় অত্যাচার করে চিরস্থায়ী ভাবে পৃথিবীতে থেকে যেতে পারে নাই। এজন্য মানুষকে ভালোবেসে যতটা সফলতা অর্জন করা যায় মানুষের উপর অন্যায় অত্যাচার করে তার কাছেও যাওয়া যায় না। আর কিছু বাস্তবতা তুলে ধরব আমার পোষ্টের মাধ্যমে আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

আপনি কেমন মানুষ হতে চান বা জনগণকে কতটা আপন করে পেতে চান সেটা কিন্তু আপনার ওপরেই নির্ভর করবে। জীবনে বেঁচে থাকতে হলে অর্থ করি বা ক্ষমতার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে সম্পদ আর ক্ষমতা কিন্তু কোন মানুষের চিরস্থায়ীভাবে থাকে না। আপনি হয়তো পৃথিবীতে থেকে যাবেন কিন্তু সম্পদের ক্ষমতা একদিন আপনার কাছ থেকে চলে যাবে। যে সম্পদ এবং ক্ষমতার জোরে আপনি মানুষের উপর অন্যায় অবিচার করছেন এমনও তো হতে পারে অন্য কারোর দ্বারা আপনি একসময় এর থেকে বেশি অপমানিত হবেন। আবার এমনও কিন্তু নয় ক্ষমতা থাকলে মানুষ খারাপ হয়। অনেক মানুষ আছে যাদের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তারা কিন্তু মানুষকে ভালোবেসে আপন করে নিয়েছে। আর এটাই হলো একজন নেতা বা প্রকৃত ভালো মানুষের কাজ। আপনি ক্ষমতা দেখাতে পারেন যেখানে অন্যায় অবিচার হচ্ছে তার বিরোধিতা করতে পারেন। ভালো কাজে শক্তিমত্তা দেখান তাহলে দেখবেন জনগণ আপনাকেও ভালোবেসে কাছে টেনে নেবে।

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিটা অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। এক নেতার ছত্র সেয়াই থেকে হাজারো মানুষ খারাপ কাজে জড়িত। নেতার শক্তিতে সবাই বলিয়ান। সবাই মিলে সাধারণ মানুষের উপর অন্যায় অবিচার করছে জুলুম করছে মানুষের হক মেনে দিচ্ছে। আর আমার কাছে মনে হয় তাদের নেতৃত্ব দেয়ার মত ন্যূনতম কোন গুণাবলী নেই। হয়তোবা তাদের জানা নেই একজন আদর্শ নেই তাহলে কি কি গুণাবলী তার মধ্যে থাকা উচিত। জনগণের কাছাকাছি যেতে হলে জনগণের সাথে কেমন কথা আচরণ করতে হবে। আপনার পরিকল্পনা যদি থাকে আপনি ক্ষমতা অর্জন করে মানুষের উপর অন্যায় অবিচার করবেন তাহলে হয়তো আপনি সেটাই করছেন। একজন পরিবারের প্রধানও কিন্তু ক্ষমতাধর ওই পরিবারের উপর। কখনো কি আপনি ভেবে দেখেছেন যে আপনার পরিবারের উপর আপনি অন্যায় অবিচার করছেন কিনা।

এবার আসি কিছু সত্য এবং বাস্তব ঘটনা নিয়ে কথা বলা যাক। এখন কিন্তু সারা বাংলাদেশে উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের অঞ্চলেও হচ্ছেন নির্বাচন। দেখেছি ভোটের আগে যে সকল নেতাকর্মীরা মানুষের উপর অন্যায় অত্যাচার জুলুম করেছে। তারা এখন এসে মানুষের হাতে পায়ে ধরছে কান্নাকাটি করছে ভোটের জন্য। ভোটে বিজয়ী হলে আবার তারা সেটাই করে। কিন্তু বোকা জনগণ বারবার ধোকা খায় আর জুলুমের শিকার হয়। আবার কত নেতাকে দেখলাম ওপেনে মানুষকে শাসিয়ে যাচ্ছে। আমাকে ভোট না দিলে এটা করব ওটা করব। আসলে আমার ভোট আমি দিবো যাকে খুশি তাকে দিব। সরকার তো আমাকে ভোটের অধিকার দিয়েছে আমাকে তো স্বাধীন করে দিয়েছে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে। তাহলে কেন আমাকে অন্যের কথা শুনতে হবে। আমি তো যোগ্য দেখে পক্ষ নিতেই পারি। কিন্তু দেখছি জনগণের উপর বল প্রয়োগ করে ভোটার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আবার বলা হচ্ছে আমাকে ভোট না দিলে যেন ভোটকেন্দ্রে তোকে না দেখি। তাহলে কিন্তু আমরা বুঝতেই পারছি যে ব্যক্তি এ ধরনের কথাবার্তা বলছে সে কিন্তু মানুষের উপর জুলুম করার জন্যই ক্ষমতা অর্জন করতে চাচ্ছে। আসলে ক্ষমতা এমনই একটা জিনিস হয় মানুষের খারাপ বানিয়ে দিবে না হয় মানুষকে ভালো বানিয়ে দেবে

একজন ক্ষমতাসীন ব্যক্তির কেমন হওয়া উচিত? যদি আপনি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চান তাহলে চলে যান পনেরশো বছর আগে মদিনার শাসক হযরত ওমর এ জীবনেতে। তিনি অর্ধ পৃথিবী শাসন করেছেন খেজুর পাতার পার্টিতে বসে। তিনি অর্ধ পৃথিবীর খলিফা হওয়া সত্বেও নিজের খাবারের জোগাড় নিজে কামলা কেটে দিয়েছে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করেছে। এমনকি নিজের পরিবারের মানুষ অন্যায় অত্যাচার বা খারাপ কাজ করলে তাৎক্ষণিক তাদের উপর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি এমন একজন শাসক ছিলেন এমনও সময় গিয়েছে যে একদিন দুদিন তার ঘরে কোন খাবার নেই। তিনি রাতের আঁধারে বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করতেন এবং জনগণের খবর নিতেন। কি করলে মানুষ ভালো থাকবে এই চিন্তায় সবসময় মগ্ন থাকতেন। অর্ধ পৃথিবীর শাসক থাকা অবস্থায়ও কোনদিন কোন জনগণ তার উপরে আঙুল তুলে কথা বলতে পারে নাই। কেননা তিনি এমন একজন শাসক ছিলেন যার কোন তুলনা হয় না। তিনি সার্বক্ষণিক আল্লাহকে ভয় করতেন তার ক্ষমতার ব্যাপারে। কেননা মানুষের অর্থ সম্পদ এবং ক্ষমতা এটা আল্লাহ দিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য। আর সেটি পেয়ে যদি আপনি ভালোভাবে ব্যবহার না করতে পারেন অবশ্যই আপনাকে জবাবদিহিতা নেওয়া হবে। হযরত ওমর এমন একজন শাসক ছিলেন যিনি রাখালকে পর্যন্ত সম্মান করতেন। নিজে উটের রশি টেনে রাখালকে উঠে বসিয়ে যেতেন। এত নেতা হতে হলে তার মধ্যে কোন অহংকার থাকা যাবে না। মানুষকে মানুষের মতো ভাবতে হবে। আর নিজের কাজ এবং কৃতকর্ম সম্পর্কে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। যখনই আপনি জবাব দিই তার বাইরে চলে যাবেন তখনই আপনি খারাপ কাজের জড়িয়ে যাবেন স্বাভাবিক। বর্তমানে শাসক এবং হযরত ওমরের শাসনামলের কথা চিন্তা করলে মানুষ অনেক কিছু ভেবে পায় না। কতটা আল্লাহ ভীতি এবং জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক চিন্তা ভাবনা থাকলে ওই ব্যক্তি অর্ধ পৃথিবীর খলিফা থাকা অবস্থাতেও নিজের ঘরে ঠিকমতো খাবার থাকে না। যাইহোক ভাই আজকের পোষ্টের মধ্যে অনেক কথা বলে ফেললাম আসুন আমরা আমাদের সবার স্থান থেকে ভালো হই। পার্থ পক্ষে কারোর উপর তিল পরিমাণ জুলুম না করি। কেননা এমনও হতে পারে আমার ছোট একটু জুলুমের কারণে অন্যের বড় একটা ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। এবং এর কারণে শেষ বিচারের দিন সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের জবাবদিহিতা দিতে হবে।