হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলে ঠুস। তবু তো ভাই কারওই নাই একটু খানি হুস- গানটির কথা তো আপনারা সবাই জানেন, তাই না? কিন্তু তাতে কার কি যায় আসে। মানুষের হাব ভাব দেখলে তো মনে হয় সে চিরকাল পৃথিবীতে থাকার জন্যই এসেছে। আমার তো মনে হয় পৃথিবীর কিছু মানুষের হিংসার নিঃশ্বাস গুলো এমন করে প্রকৃতির মাঝে যেয়ে ছড়িয়ে পড়ে যে, যা প্রকৃতিকে করে তুলে বিষাক্ত। আর তাই তো আমাদের চারপাশের প্রকৃতি এত বিষাক্ত হয়ে উঠেছে।

প্রতিদিনের মত করে আজও কিন্তু আবার চলে আসলাম। চলে আসলাম বক বক করে আপনাদের মাথাটিকে একটু গরম করে দিতে। প্রতিদিন দুই একবার আপনাদের মাথা গরম না করলে কিন্তু আমার চলেই না। চলে না আপনাদের মাঝে একবার না আসলেও। তাই তো আবার আজ নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের কাছে আসলাম। আপনাদের হয়তো মনে আছে যে আমি গত দুই সপ্তাহ যাবৎ সুবর্ণ গ্রাম ভ্রমনের পর্ব শেয়ার করেছি। আজ চলে আসলাম সুবর্ণ গ্রাম ভ্রমনের তৃতীয় পর্ব নিয়ে। আশা করি আমার আজকের পোস্টেও আপনারা মজা খুঁজে পাবেন।

তো আমরা সেদিন সুইমিং পুল দেখে আস্তে আস্তে সেদিকেই এগিয়ে যাওয়া শুরু করলাম। একটি সুন্দর প্রকৃতির মধ্য দিয়ে সুইমিইং পুলের ভিতর ঢুকতে হয়। দুই দিকে সবুজ প্রকৃতি। আর মাঝে পিচ ঢালা পথ। কিছু দূর হাটলেই সুইমিং পুলে ঢোকার রাস্তা। আমরা ধীরে ধীরে সেখানে গেলাম। ভিতরে ঢোকার আগেই চোখে পড়লো যে সুইমিং পুলে গোসল করতে হলে ৪০% ডিসকাউন্টে সুইমিং করতে পারবে। কারন সুবর্ণ গ্রামের এই সুইমিং পুলটি নতুন করা হয়েছে।তো আমরাও বেশ আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে গেলাম।

ভিতরে প্রবেশ করেই আমরা প্রথমেই ক্যাশ কাউন্টারে কথা বললাম। ওমা একি অবস্থা ক্যাশে টাকা জমা না দিয়ে নাকি সুইমিং পুলের সামনে যাওয়া যাবে না। সেখানে কয়েকজন সিকিউরিটিও দাঁড়িয়ে ছিল। যাতে করে কেউ ভিতরে যেতে না পারে। কিন্তু ভাবনার বিষয় হলো যদি সুইমিং পুলে সুইমিংই না কাটি তাহলে টাকা দিয়ে টিকেট কেটে লাভ কি। আর সুইমিং যে করবো আমি তো আর এক্সটা কোন ড্রেস নেয়নি। কারন জানতামই তো না যে সেখানে এমন সুইমিং পুল আছে। এবারও চিন্তায় পড়ে গেলাম কি করবো ভেবে ভেবে।

কিছু ফটোগ্রাফিও করা দরকার। আবার সেখানে গোসল করতে গেলে নাকি তাদের কাছে কসটিউম ও পাওয়া যায়। তাই সিদ্ধান্ত হলো যে আমাদের সাথের দুজন পুরুষ মানুষই সুইমিং পুলে গোসল করবে। আর আমাদের জন্য ফটোগ্রাফি করবে। তাই ৩০০/- টাকা করে দুটো টিকেট করে নিলাম। তারপর তাদের জন্য কসটিউম এর চার্জ ও দিলাম। সেই ফাঁকে দেখলাম আমার ছোট ভাই সেখানে একজনের সাথে বেশ খাতির জমালো। কি করে যে এমন খাতির জমালো যে আমাকে ভিতরে যেয়ে ফটোগ্রাফি করার ব্যবস্থা সেই লোকটি করে দিলো।

বাহ্ ভিতর টা তো বেশ সুন্দর। অনেক অনুরোধ করার পর ছোট বোন কেও ভিতরে নেওয়ার সুযোগ পেলাম। যাই হোক ভিতরে যেয়ে তো দেখি বেশ সুন্দর জায়গা। বসার জন্য খুব সুন্দর সুন্দর কিছু টেবিল রয়েছে। যেখানে বসে যে কেউ সুইমিং পুলের সৌন্দর্য অনেক কাছ হতে উপভোগ করতে পারে। আমরাও বসলাম সিটের মধ্যে আর উপভোগ করতে লাগলাম সুইমিং পুলে গোসল করা মানুষ গুলোর আনন্দ। ততক্ষনে আমাদের হ্যান্ডসাম পুরুষেরা নেমে গেল তাদের আনন্দ উপভোগ করতে। আর আমরা দুজন বসে বসে তাদের পোশাক পাহাড়া দিলাম এবং ফটোগ্রাফি করলাম।

তার সাথে সাথে উপভোগ করতে লাগলাম সুইমিং পুলে গোসল করা সব মানুষ গুলোর আনন্দ। কারও বাবা নেমেছে বাচ্চা কে নিয়ে মা উপর থেকে সেই আনন্দের মূহূর্তটুকু নিজের মোবাইলে ক্যামেরা বন্দী করছে। কেউ কেউ সুইমিং পুলে নেমে টিকটকের ভিডিও বানাচ্ছে। কেউ কেউ নতুন বিবাহিত নিজেরদের আনন্দের মূহূর্তটুকু ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। সব কিছু দেখে যে আমার কাছে এ এক অন্য রকেরম পৃথিবী মনে হলো। আর সুইমিং পুলের পানি তো বেশ নীল রং এর যা দেখলে মনে হয় সত্যি সত্যি সমুদ্রের ভেসে বেড়াচ্ছি। যাই হোক সুইমি পুলে অনেকটা সময় পার করার পর আমরা বের হয়ে গেলাম আমাদের পরবর্তী মিশনের জন্য। আর পরবর্তী মিশন কি সেটা জানার জন্য চোখ রাখুন আমার পোস্টের দিকে। হি হি হি

আসলে মানুষের আনন্দ যে কোথায় তা কেউ বলতে পারবে না। তাই তো হাজারও মানুষ নিজেদের আনন্দটুকু ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য দৌড়ে আসে এমন সুন্দর প্রকৃতি ঘেরা জায়গা গুলোতে । যাতে করে কিছুটা সময় জীবনের দুঃখ গুলো কে দূরে সরিয়ে রাখা যায়।

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে।