স্মৃতিচারণঃস্মৃতির পাতা থেকে বন্ধুদের সাথে আম চুরি করার গল্প //পর্ব-২

in আমার বাংলা ব্লগ23 days ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

গ্রীষ্মকালে বন্ধুদের সাথে হাজারো গল্প জানো আমাদের জীবনে রয়েছে। আসলে গ্রীষ্মকালে আম, লিচুর সময়, আর এই আম লিচু অনেকেই আমরা চুরি করে খেয়েছি। আসলে বন্ধুদের সাথে নিয়ে চুরি করে খাওয়ার মধ্যে একটা অন্যরকম অনুভূতি রয়েছে। কারণ আমাদের গাছে যদি আম থাকে তারপরে বন্ধুদের সাথে অন্যের গাছ থেকে চুরি করে এই আম খাওয়ার মুহূর্ত গুলো সত্যি অন্যরকম ছিল। আসলে আমাদের আমের গাছ ছিল অনেকগুলো, তারপরে অন্যের গাছ থেকে বন্ধুদের সাথে নিয়ে আমপাড়ার মুহূর্ত আনন্দে ছিলো। ছোটবেলার প্রত্যেকের জীবনে এই ঘটনাগুলো হয়ে থাকে, তো বন্ধুরা আপনাদের সাথে ছোটবেলার আপ চুরির গল্প শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি, আশা করছি এই পড় পড়ে আপনাদের ভালে লাগবে।


আসলে আমার বন্ধুর রনি গাছ থেকে পড়ে গিয়ে হাঁটুতে অনেক বেশি ব্যথা পেয়েছিল। তাই আমি আর বড় ভাই মাঠের ভিতরে রনিকে নিয়ে এসে অনেকক্ষণ পানি ঢাললাম। আর পানি ঢালার পরে ওর ব্যথাটা কমে গেল। অনেকটাই কমে গিয়েছে, এবং তখন বড় ভাই বলল ওকে নিয়ে বাড়ি যা। বাড়ি আসার বাড়ি আসবো তখনই দেখতে পেলাম, স্কুলের এক কোণে আমার বন্ধু যে আম নিয়ে পালিয়েছিল,সে চুপ করে বসে রয়েছে। আসলে ও অনেক বেশি ভয় পেয়েছিলো,মনে হয়েছিল আজকে ধরা পড়বে, আর ধরা পড়লে ওকে তো গাছপালা মারবে, বেশি ভয় পাওয়ার কারণ ওর বাবা এগুলো পছন্দ করেনা। চুরি করতে গিয়েছিল এটা জানে ওকে অনেক বেশি মারধর করবে।

hands-2847508_1280.jpg

Source

আসলে আমার বন্ধু যে পালিয়ে ছিল, ওর বাবা মাস্টার, আর মাস্টার মানুষের ছেলে চুরি করবে এটা কখনোই মেনে নেবে না। এর আগে একবার অন্য কারও গাছ থেকে যেন লিচু চুরি করেছিল, তখন ওর বাবা ওকে গাছের সাথে বেঁধে অনেক পিটিয়ে ছিল। যার কারণে ও কোনদিন আর চুরি করতে যায়নি। কিন্তু আমাদের সাথে এবং রনির কথা মতো চুরি করতে যেতে রাজি হয়।আর যার কারণে ও খুব ভয় পেয়েছিলো।আর ওর ভয় করা দেখে আমারও অনেক বেশি ভয় হয়েছিল। যদি জানে তাহলে আমাদেরও খবর করে দিবে, কিন্তু প্রথমে রনি বলল যে বেইমান বন্ধু আমাদের রেখেই চলে গেল, কিন্তু ও বেইমান না ও যথেষ্ট আমাদের সাথে মিলেমিশে থাকে, কিন্তু ওর বাবার কথা মনে হয়েছিল যার কারণে বসে অনেক ভয়ে পালিয়ে যায়,ও স্কুলের পাশে বসে কান্না ও ভয়ে কাঁপতেছিলো।


তারপর বড় ভাই বলল তোরা তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যাহ,সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আমিও চলে গেলাম। তখন বড় ভাই চলে গেল আমরা তিন বন্ধু মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছি। রনি বলল বন্ধু তুই খুব ভয় পেয়েছিস, আসলে আমার জন্যই তোর এই ভয়টা হলো। তুই যেতে চাসনি, তখন বলল যে আমি বাবার জন্য খুব ভয় পেয়েছিলাম। যে গাছওয়ালা হয়তো আমাদের দেখেছে, আর বাবাকে বলে দিলে, তো আমার অবস্থা খারাপ করে দিবে তাই খুব ভয়ে পালিয়ে এসেছি।তখন রনব বললো কোন সমস্যা নেই। ঐটা বড় ভাই ছিল, আর বড় ভাই আম চুরি করে, তুই কোন চিন্তা করিস না। চল আমাদের বাড়িতে যাই, বাড়িতে গিয়ে বলবো আমি ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ে ব্যথা পেয়েছি।


তারপরে সেই আমগুলো নিয়ে আমরা রনির বাড়িতে আসলাম। রনি বাড়িতে আমরা তিনজনই আসলাম, রনির মা বলল আমার রনির কি হয়েছে, বল রনি বলল যে আমি ফুটবল খেলতে গিয়ে ব্যথা পেয়েছি। আমরা কিছুই বললাম না,রনিই বলল যে সন্ধ্যার সময় খেলতে গিয়ে আঘাত লাগছে। তখন আমাদের হাতে আম ছিল, রনির মা বলল যে ফুটবল খেলা গিয়ে ব্যথা পায়ছোস নাকি আম চুরি করতে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছিস সত্যি কথা বল।রনি মিথ্যা দিয়ে ডাকতে চাইলে কিন্তু আমার যে বন্ধু ভয় পেয়েছে, সে বলল যে আসলে আন্টি আমরা আম চুরি করতে গিয়েছিলাম। আর রনি আম গাছে উঠেছিল, আর সেখান থেকেই পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে। এ কথা শুনতে পেয়ে রনির মা রনিকে টাশ করে গালে একটা থাপ্পড় মেরে দিল। বলল যে চুরি তো করেছিস আবার মিথ্যা কথা বলছিস, তোকে না চুরি করতে না করেছি।


তারপরের রনি বুদ্ধি করে নিজের কান ধরে মাকে বলল, যে মা আমি আর কোনদিন চুরি করবো না, আমার আজকে শেষ মাপ করে দাও। এই কথা শুনে, আসলে মায়ের মন্ত্র নরম, রনির মা অল্পতেই নরম হয়ে গেল এবং বলল ঠিক আছে আর কোনদিন যেন চুরি করতে না দেখি। তারপরে রনির তার মাকে বলল যে মা এই আমগুলো বানিয়ে দাও কাঁচা মরিচ দিয়ে, কিন্তু রনির মা বললো চুরি করা আম আমি বানিয়ে দিতে পারব না। তোরাই তিনজন বানিয়ে খাহ।তারপর আমরা তিন বন্ধু আম মাখানোর জন্য সকল রকমের লবণ এবং বিট লবণ নিলাম আর কাঁচা মরিচ দিয়ে এই আম মাখা তৈরি করতে লাগলাম।



তারপর আমরা তিন বন্ধু মিলে রনির বাড়িতে রনির রুমে এই আম মাখা তৈরি করলাম। আসলে ঝাল বেশি হয়েছিল,আর ঝাল বেশি হওয়াতে আম মাখা খেতে খুবই মজাদার হয়েছিল। আজকে তাই সেই স্মৃতিময় দিনের গল্প চোখে সামনে ভাসতে ছিল। কারণ কাঁচা আম দেখলেই যেন আমার এই স্মৃতিময় গল্পটির কথা মনে পড়ে যায়। তাই আপনাদের মাঝে আমার এই স্মৃতিময় গল্পটি শেয়ার করলাম।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 23 days ago 

আপনার যে বন্ধু পালিয়ে ছিল সেই বন্ধু মাস্টারের ছেলে ।মাস্টারের ছেলে হয়ে চুরি করবে এটা কখনো মেনে নেওয়া যায় না ।এর আগে আপনার বন্ধু লিচি চুরি করছিল বলে তার বাবা তাকে গাছে বেঁধে মেরেছিল। এত সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 22 days ago 

আসলে বন্ধুদের সাথে আম চুরির গল্প আমাদের প্রত্যেকেরই জীবনে রয়েছে। এই চুরি করে আম খাওয়ার মুহূর্ত গুলো যেন অসাধারণ হয়ে থাকে। আপনার গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো। তবে আপনার বন্ধু কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ভয় পেয়েছিল, তার বাবার জন্য, আসলে আমাদের সমাজে যারা মাস্টার তারা সন্তানদের এইসব কাজ থেকে বেশিরভাগই বিরত রাখতে চাই। যাই হোক আপনাদের গল্পটি আমার কাছে ভালো লেগেছে, শেষমেষ আপনারা আমগুলো খেয়েছিলেন যেনে ভালো লাগছে।

 22 days ago 

আপনাদের তিন বন্ধুর আম চুরির চমৎকার শৈশবের কথাগুলো জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে এরকম স্মৃতি আমাদের সকলের জীবনেই জড়িয়ে রয়েছে। আর চুরি করা আম ঝালের গুড়া ও লবণ দিয়ে মাখিয়ে খেতে অসাধারণ মজাদার লাগে। যাহোক আম চুরির চমৎকার একটি শৈশবের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 22 days ago 

আসলে ছোটবেলার স্মৃতিগুলো অনেক মধুর হয়ে থাকে যা মনে করতেও ভালো লাগে ।আবার পড়তেও ভালো লাগে। আজ আপনার ছোটবেলার আম চুরির ঘটনাটা পড়ে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো। চুরি করার ক্ষেত্রে মা-বাবার বকুনি তো খেতেই হবে ।যাই হোক শেষমেষ সবাই মিলে চুরি করা আম মাখিয়ে খেয়েছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 70434.55
ETH 3761.18
USDT 1.00
SBD 3.84