বইপোকাদের বুকমার্ক 🔖(১০% @shy-fox এর জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগlast year
তারিখ-২৫.০৫.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালোই আছি।আচ্ছা আমার মত কে কে আছেন বলুন তো যারা বই পড়তে ভীষণ ভালোবাসেন। যদিও এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, এই মোবাইলের যুগে, ইন্টারনেটের যুগে পাতা উল্টে বই পড়ার লোক খুব কম। আর যারা বই পড়েনও তারা কিন্ডেল ভার্সন অথবা পিডিএফ ভার্সান পড়েই কাটিয়ে দেন। তবে আমি কিন্তু সেই পাতা উল্টে বই পড়া লোকেদের মধ্যেই একজন। আমাদের সময় যখন ইন্টারনেট, মোবাইল কিছুই ছিল না। মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবো অর্থাৎ স্কুল ফাইনাল যাকে বলে, তার এক মাস আগেও পড়ার বইয়ের ভিতরে গল্পের বই লুকিয়ে অনেক পড়েছি। এখনকার বাবা মায়েরা যেমন মোবাইল ঘাঁটাঘাটির জন্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যাধিক অ্যাক্টিভ থাকার জন্য বকাবকি করেন।(যদিও বেশিরভাগ মা বাবা এখন ছেলে মেয়ের সঙ্গে ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে দিয়ে নিজেরাও সোশ্যাল মিডিয়াতে ততটাই একটিভ থাকেন।)তবে আমাদের সময় কিন্তু গল্পটা অন্য ছিল।পড়ার বইয়ের ভেতরে মাঝেমাঝেই বাবা-মা এসে চেক করে যেত, গল্পের বই আছে কিনা। আর যেদিন ধরার পড়তাম যে পড়ার বইয়ের ভিতরে গল্পের বই ঢুকিয়ে পড়ছি, সেদিন আর রক্ষে নেই।তবে আমাদের মা-বাবারা এখনকার মা-বাবাদের হয়রানি দেখে খানিকটা হলেও স্বস্তি বোধ করে। কোথাও তাদের মনে হয়, "যাক! আমাদের ছেলেমেয়েরা অন্ততঃ বই-ই তো পড়েছে।"

346163471_990298565474605_5689938747458568279_n.jpg

যাই হোক মোদ্দা কথায় আসি। যেহেতু বই পড়তে ভালোবাসি। তাই মাঝে মাঝেই বইয়ের পৃষ্ঠা হারিয়ে ফেলি।সেই কারণে বুকমার্ক নিয়ে এলাম।

এর আগে একবার আপনাদের মাঝে অন্যরকম বুকমার্ক নিয়ে এসেছিলাম। আজকে আবার নিয়ে এলাম আর একরকম বুকমার্ক। ঘরে অনেকগুলো পুরনো রঙিন আর্ট পেপার পড়েছিল। পুরোনো মানে অত্যাধিক পুরনো। যখন আমি স্কুলে পড়তাম সেই সময়ে আমার মায়ের যত্ন বেশি থাকার কারণে সেই সব কাগজও এত বছর পরেও ঠিক রয়েছে। ভাবলাম কাগজগুলো ফেলে দেওয়ার চেয়ে প্রয়োজন এর কিছু জিনিস বানানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ আমাদের এক স্যার বলেছিলেন,"তুমি তোমার সারা জীবনে যত কাগজ বাঁচাতে পারবে, মনে রেখো মাত্র একটা গাছ বাঁচাতে পেরেছ।"এই কথাটা মাথায় গেঁথে নিয়েছিলাম । তাই অপ্রয়োজনীয় ভাবে আমি কাগজ নষ্ট করতে পারি না।সেই ভেবেই বুকমার্ক বানালাম। কেমন লাগলো আপনাদের জানাবেন।
***নিচে উপকরণ এবং প্রণালী আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম।***

🌼উপকরণ🌼

🍁রঙিন আর্ট পেপর
🍁আঠা
🍁কাঁচি
🍁রং
🍁পেন্সিল
🍁স্কেল
🍁কম্পাস

🌼প্রণালী🌼

প্রথম ধাপ

পুরনো কাগজ গুলোকে একসাথে নিয়ে নিলাম।

349085878_1198427314203834_5228995794764854702_n.jpg

দ্বিতীয় ধাপ

এবার প্রত্যেকটা কাগজকেই তিনটে ফোল্ড করলাম। যাতে বুকমার্কটা একটু মোটা হয়।

349503589_1883627845342026_627810701975807251_n.jpg

তৃতীয় ধাপ

আঠা দিয়ে তিনটে ফোল্ড কে লাগিয়ে দিলাম।আমি একটা কাগজ দিয়েই দেখিয়েছি। বাকিগুলো একই ভাবে ভাজ করেছি।

349503589_1883627845342026_627810701975807251_n.jpg

চতুর্থ ধাপ

এবার কাগজগুলোকে কেটে কিছুক্ষণ রেখে দিলাম আঠাগুলো শুকানোর জন্য।

349308197_278902121201465_2273912189789550541_n.jpg

পঞ্চম ধাপ

তিনটে কাগজ কাটার পরে একই মাপের করে নিলাম। কাগজগুলোকে কাঁচি দিয়ে কেটে।

346173235_897522784644181_3688251646466224925_n.jpg

ষষ্ঠ ধাপ

এইবার তিনটে কাগজে তিন রকম কার্টুন ক্যারেক্টার আঁকলাম।একটাতে একটা বিড়াল আঁকলাম, একটাতে একটা রাক্ষস আর আরেকটাতে পিকাচু আঁকলাম।

349209015_262547846182555_7729532156670191054_n.jpg

সপ্তম ধাপ

এবার আঁকাটাকে মাপ বরাবর কেটে নিলাম। কাগজটা তিন ভাগ করাতে একটু মোটা হয়ে গিয়েছিল। তাই আমার কাটতে একটু অসুবিধা হয়েছে। আপনাদের কাছে যদি মোটা কাগজ থেকে থাকে, তাহলে আপনারা ফোল্ড না করে এমনি বানাতে পারেন।তাতে করে কাটতে অসুবিধা হবে না।

349232431_539602424856411_2388755964028392750_n.jpg

অষ্টম ধাপ

এইবার কাটাকাটি হয়ে গেলে রং করার পালা। নিজের মতো করে যা খুশি রঙ করতেই পারেন।আমিও আমার মত করে রং করেছি।

349321555_3115992418693877_5018285386161316026_n.jpg

নবম ধাপ

রং করার পরে ফাঁকা জায়গাটাতে নিজের মনকে উৎফুল্ল করার মত বা নিজেকে মোটিভেটেড রাখার মত কিছু কোটেশন লিখতে পারেন ইন্টারনেট থেকে নিয়ে। আমিও ইন্টারনেট থেকে কিছু কোটেশন নিয়ে সম্পূর্ণ কাজটাকে শেষ করেছি।

349423818_145705471828062_365121349864699769_n.jpg

আজ এখানেই শেষ করছি। কেমন লাগলো আবারো অনুরোধ করছি অবশ্যই জানাবেন। আপনারা উৎসাহ দিলে কাজ করতে আরও ভালো লাগে। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। সকলে খুব ভালো থাকবেন।

🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸

330c68fa-d267-405f-8d9e-8f34533fedc4.jfif

পরিচিতি

250c6bf5-0fab-4e98-b28b-2299d4f6bc0f.jfif

আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।

Facebook
Instagram
YouTube

330c68fa-d267-405f-8d9e-8f34533fedc4.jfif

Vote @bangla.witness as a witness

d3bda13e-40b1-47f0-ae6e-12bd9e3cafa7.jfif

OR

Set @rme as your proxy

79210fdd-a2bc-44f9-b76d-6aa43122ce75.jfif

4HFqJv9qRjVeVQzX3gvDHytNF793bg88B7fESPieLQ8dxHasrbANgiURdsJZbqzojRuxTqrn8BwVMhvjW2bszpJVcHcPW7rxPZLtrPVi9FWSiNoAnyKt4P3qfRidjbh5nr88gtri9qE2ohuC3tavoQ5nX9ihXXuBCWz.jfif

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ছোটবেলার লুকিয়ে লুকিয়ে কত গল্পের বই পড়েছি তার কোন ঠিক নেই। ঠিকই বলেছেন আপু এখনকার বাচ্চা যেমন মোবাইলের প্রতি আসক্ত আগেকার দিনে আমরা গল্পের বইয়ের প্রতি আসক্ত ছিলাম। তাছাড়া গল্পের বই পড়তে গেলে এরকম বুকমার্কের খুব প্রয়োজন হতো। আপনি রঙিন কাগজ দিয়ে খুব সুন্দর একটি বুকমার্ক তৈরি করেছেন। এরকম বুকমার্ক বইয়ের পাতার ভিতরে রাখলে দেখতেও ভালো লাগে।

 last year 

আসলে আমাদের সময় আমরা বউয়ের ভেতরে লুকিয়ে অনেক গল্পের বই এবং বিভিন্ন রকমের বই পড়তাম। ঠিকই বলেছেন এখন ছেলে মেয়েরা যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় সারাক্ষণ একটিভ থাকে তেমনি মায়েরাও একই সাথে তাল মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটিভ থাকে। বই পড়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে তিনটি বুক মার্ক তৈরি করেছেন রঙিন কাগজ ব্যবহার করে। যেগুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো।

 last year 

ধন্যবাদ দাদা সহমত পোষণ করার জন্য।

 last year 

বই পড়তে ভালোবাসেন এজন্যই মাঝে মাঝে বইয়ের পাতা হারিয়ে ফেলেন আর সেই কারণেই বুকমার্ক তৈরি করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনার তৈরি করা বইপোকার বুকমার্ক গুলো খুবই কিউট লাগছে। একদম ঠিক কথা বলেছেন এখন ইন্টারনেটের দিনে কেউ বইয়ের পাতা উল্টেও দেখেনা। আপনার মা-বাবা এখনকার মা-বাবাদের দেখে একটু স্বস্তি পায় জেনে খুবই ভালো লাগলো। আর তারা স্বস্তি পাওয়ারও কথা কারণ তখনকার বাচ্চাদের আর এখনকার বাচ্চাদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। বুকমার্ক তৈরি করার প্রতিটি ধাপ খুবই সুন্দরভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।

 last year 

একদমই ঠিক। ধন্যবাদ দিদি।

 last year 

আমিও বইয়ের পাতা উল্টিয়ে পড়ার লোকের মধ্যে একজন। এখনকার স্কুল থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত শিট আর ডিজিটাল মাধ্যমে পড়াশোনা করানো হয়। যাই হোক আপনি খুব সুন্দর একটি বুকমার্ক তৈরী করেছেন। দেখতে সিম্পল হলেও অনেক কিউট লাগছে দেখতে। কোটেশন গুলো পড়ে ভালো লেগেছে এবং এই আইডিয়াটা দারুন হয়েছে। ধন্যবাদ দিদি।

 last year 

অনেক ধন্যবাদ দাদা। সময় যা দ্রুত হারে এগোচ্ছে। এরপর না মানুষ হাওয়ায় হাত নাড়িয়ে পড়শোনা করে। 😀

 last year 

চাইনিজ টিভি সিরিজ এ দেখেছি ইশারায় বইয়ের পাতা উল্টিয়ে পড়তে তাও একসাথে কয়েকটি বই হা হা হা।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 71138.51
ETH 3842.89
USDT 1.00
SBD 3.48