মথুরা বিলে ঘোরাঘুরি (১০% @shy-fox এর জন্য)
তারিখ-০২.০৬.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদ আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন।আমিও বেশ ভালোই আছি। আজকে আমি আপনাদের কাছে একটা অন্যরকম পোস্ট নিয়ে এলাম। আমাদের এলাকাটা বলা যায় একটা শহরতলি। মানে যাকে এক কথায় কলোনি বলা যেতে পারে।ঠিক গ্রাম ও নয় আবার পুরোপুরি শহরও নয়। সব রকম সুযোগ সুবিধা তো আছে তবে একদম বাড়ির কাছেই নয়। সেটার জন্য একটু দূরে যেতে হয়।আবার গ্রামটাও যে বাড়ি থেকে একদম কাছে বা বাড়িটা যে একদম গ্রামে সেটাও নয়। গ্রামে যেতে গেলে ওই সাইকেল চালিয়ে কুড়ি পঁচিশ মিনিট যেতে হবে। কালকে অফিস ছুটি ছিল। সেই কারণে ভাবলাম গ্রামে গিয়ে ঘুরে আসি।
আমাদের গ্রামে মথুরা বিল বলে একটা বিল আছে। সে বিল টা বর্ষাকালে অনেকটাই জলে ভরা থাকলেও এখন যেহেতু প্রচন্ড গরম,তাই জল নেই। তবে প্রচুর পদ্ম ফুল ফোটে কচুরিপানার সাথে সাথে। এখন যদিও পদ্ম ফুলের দেখা কেউ পাবে না। কারণ এটা পদ্মর সময়ও নয়। তবে গাছগুলো রয়েছে। আর জল শুকিয়ে গিয়ে কচুরিপানা ঘিরে অনেকটা সবুজ মাঠের মতো লাগছে দেখতে। ভাবলাম রোজ শপিংমল, সিনেমা হল করে কংক্রিটময় জীবনে ছুটি না কাটিয়ে,একটু গ্রামের মুক্ত হাওয়ায় সময় অতিক্রান্ত করে আসি।
এখন সঙ্গী বলতে সবাই কমবেশি জানে শম্পা ছাড়া আর আমার সেরকম কেউ নেই সে কারণে ওকেই বললাম চল মথুরা বিলে যাব। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সাইকেল নিয়ে দুজনে রওনা দিলাম।প্রথমে স্কুটিতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মনে হলো যে একটু সাইকেল চালালে শারীরিক কসরতটাও ভালো হবে। আর বেশ ঘোরাও হয়ে যাবে।সেই কারণে আমি ঠিক করলাম সাইকেল নিয়েই যাব। ও রাজি হয়ে গেল। এরপরে সাইকেল চালিয়ে গ্রামের ভেতরের দিকে গেলাম। গিয়ে বিলের কাছে যাব পদ্ম বাগান দেখতে, আরেক সমস্যায় পড়লাম।দেখলাম রাস্তার মধ্যে যেহেতু ফ্লাইওভার তৈরি হচ্ছে, সেই কারণে প্রচন্ড জল কাদায় ভরে রয়েছে। কারণ কিছুক্ষণ আগেই বড় বড় গাড়ি দিয়ে রাস্তায় জল ছিটানো হয়েছে। অতিরিক্ত ধুলোর কারণে জল দেওয়া হয়েছে ফলে চারিদিক কাদা কাদা হয়েছিল। অনেক কষ্টে কাদা পার করে তারপরে ঢুকলাম সরু গলি ধরে। ছেলেরা দেখলাম বাইক নিয়েও ঢুকে গেছে। তার মধ্য থেকে অনেকে দেখছি সেই কচুরিপানার মাঠে শুয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছেন।সত্যি বলতে এই মাঠ কিন্তু ঘাসের মাঠের মতো নয়। যতবারই পা ফেলছি ততবারই মনে হচ্ছে নরম গালিচার উপরে পা ফেলছি। এরপর পৌঁছে গেলাম পদ্মা বাগানের কাছাকাছি।
যথেষ্টই আকর্ষণীয় লাগছিল। তবে ফুল ফুটলে আরো বেশি ভালো লাগতো। পরিবেশ দেখছিলাম আর ভাবছিলাম সত্যিই এখানে না আসলে এত কাছ থেকে গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারতাম না। ছোটবেলায় যখন স্কুলে ভর্তি হইনি তখন একবার পিসির সাথে গিয়েছিলাম ওখানে।তাই কোন কিছুই সেরকম মনে নেই। আবার এই কালকে গেলাম।লোকাল অনেক মহিলা ওখানে বসে ছিলেন।
তাদের সঙ্গে বসে খানিকক্ষণ গল্প করলাম।তারা জিজ্ঞাসা করলো- বাড়ি কোথায়? তখন বলল-"তোমরা এদিকে এই প্রথম এলে?"আমিও বললাম যে হ্যাঁ কোনো কারণ ছাড়া তো আর আসা হয় না।তাও ভাবলাম একটু ঘুরে আসি ছুটির দিনে।
তারপরে সন্ধ্যেবেলা আজানের সুর শোনা গেল। ধীরে ধীরে অন্ধকার বাড়ছিল। কিছু পদ্ম পাতা তুললাম কারণ পদ্ম পাতার উপরে ভাত খেতে বেশ ভালো লাগে। তুলে নিয়ে আর কিছু ছবি তুললাম। তারপরে ধীরে ধীরে বাড়ির পথে এগোলাম। ফিরে আসার মন একদমই করছিল না। মনে হচ্ছিল ওখানে বসে থেকে ভীষণ উপভোগ করি পরিবেশটা। কিন্তু উপায় তো ছিল না। অত নিরিবিলি জায়গাতে রাতের বেলা বা সূর্য ডোবার পরে থাকাটাও নিরাপদ নয়। সেই কারণে ধীরে ধীরে ফিরে এলাম। তবে কথা দিয়ে এসেছি প্রকৃতি মায়ের কাছে সুযোগ পেলেই আবার যাবো।
কেমন লাগলো আজকের ছোট ঘোরাফেরার গল্প? জানি বিশেষত্ব কিছুই নেই।তবে আমার কাছে ভীষণ বিশেষ এই সময়টা ছিল।আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। সকলেই খুব ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মথুরা বিলে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন সেটা আপনার ফটোগ্রাফি দেখে বুঝতে পারছি। অনেক ধন্যবাদ আপু আমাদের মাঝে এই অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ দাদা
আসলে সবসময় শপিং মল এবং ইট পাথরের দেয়ালে বন্দী না থেকে, মাঝে মধ্যে এমন খোলামেলা জায়গায় ঘুরাঘুরি করতে খুব ভালো লাগে। এই ধরনের জায়গায় সময় কাটাতে সত্যিই খুব ভালো লাগে। ফটোগ্রাফি গুলোও এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ দাদা
আপনার বান্ধবী শম্পার সাথে মথুরা বিলে ঘোরাঘুরি করার দারুন মুহূর্তটুকু খুবই চমৎকার ভাবে আপনি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার এ পোষ্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। সত্যিই পদ্ম পাতার উপর ভাত রেখে খেতে খুবই ভালো লাগে। চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ দাদা।