|| জেনারেল রাইটিং : অবশেষে শান্তির বৃষ্টি ||

in আমার বাংলা ব্লগ15 days ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

বিগত বেশ কিছুদিন ধরে কলকাতায় প্রচন্ড গরমে জনজীবন একেবারে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। যারা ঘরে বসে কাজ করে কিংবা এসির ভিতরে বসে কাজ করে তাদের ব্যাপার গুলো আলাদা। কিন্তু যারা এই প্রচন্ড রোদে বাইরে কাজ করে তাদের অবস্থা প্রচন্ড পরিমাণে খারাপ হয়ে গেছিল। আমাদের বনগাঁতে কলকাতা তুলনায় গরম একটু কম পড়ে। তারপরও এতটা গরম লাগছিল যে রাতের বেলা ঘুমানো অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছিল আমাদের জন্য। আপনারা হয়তো বলবেন যে বৃষ্টি তো হয়েছে কলকাতায় আরো কয়েকদিন আগে তাহলে আজকে কেন পোস্ট করছি। আসলে যেহেতু জেনারেল রাইটিং সপ্তাহে একটাই পোস্ট করি এজন্য একটু দেরি হয়ে গেল আর কি। যাইহোক আসল কথায় ফিরে আসি।

person-5843476_1280.jpg

সোর্স

আসলে মাঝখানে আমাদের কলকাতায় এত পরিমাণে গরম পড়েছিল এর ফলে প্রচুর অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। বিশেষ করে যারা বয়স্ক মানুষ ছিল তাদের অনেকেই মাথা ঘুরে পড়ে গেছে এবং অনেকে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে হসপিটালেও ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকজন মারা গেছে শুনেছি। এইতো কয়দিন আগে শুনছিলাম যে ট্রেনের ভিতর দুইজন মানুষ অসুস্থ হয়ে ট্রেনের ভেতরেই মারা গেছে। এই সমস্যার সমাধান স্বরূপ আসলে আমরা সকলেই চাচ্ছিলাম যে যত দ্রুত সম্ভব একটু বৃষ্টি হোক। গত সোমবার দুপুর নাগাদ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল এবং সেই অপেক্ষা নিয়ে আমরা সবাই বসে ছিলাম, যে কখন বৃষ্টি হবে। কিন্তু দুপুরে বৃষ্টির কোন আভাস পাওয়া গেল না, তবে মেঘ ছিল বেশ ভারী। মোটামুটি বিকেল নাগাদ পুরো আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গেল এবং চারিপাশ ঠান্ডা করে দিয়ে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ল। বিকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল এবং বলতে গেলে প্রায় সারারাত আমাদের এখানে বৃষ্টি হয়েছিল। আমার মনে হয় বিগত কয়েক মাসের ভিতর ওই দিনই আমি অনেক শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছিলাম।

সোমবারের পর থেকে এই কয়দিন আসলে আরো বেশ কয়েকবার বৃষ্টি হয়েছে। এতে করে প্রকৃতি অনেকটাই শান্ত হয়েছে আগের তুলনায়। এই অতিষ্ঠ গরমে আসলে সব থেকে বেশি ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছিল দিন মজুররা তবে তারাও কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। কিছুদিন আগেও হয়তো বলেছিলাম যে প্রচন্ড গরমের কারণে আমাদের এখানে জলের খুব সমস্যা হচ্ছে, সেটাও কিছুটা সমাধান হয়েছে এখন। সব মিলিয়ে পুরো পরিস্থিতি বা পুরো প্রকৃতি এখন মোটামুটি নরমাল ধরে নেওয়া যায়। আমাদের এখানে বেশ কিছু পুকুর ছিল যেগুলো রোদে শুকিয়ে গেছিল সেগুলো দেখলাম এখন অনেকটাই জলে ভরে গেছে এবং দেখতেও অনেকটা ভালো লাগছে। কাজে অনেকটাই উদ্যম এসেছে। আগে যেমন প্রচন্ড গরমে কাজ করতে অনেকটাই খারাপ লাগতো এখন বেশ স্বাচ্ছন্দের সাথে কাজ করতে পারি।

যাই হোক এই করতে করতে যদি বর্ষাকালটা চলে আসে তাহলে হয়তো এই প্রচন্ড গরম আমাদের আর সহ্য করতে হবে না। তবে প্রকৃতির বিপর্যা বা প্রচন্ড গরম পড়ার পেছনে কিন্তু পুরোটাই আমরা দায়ী। আমরা যে পরিমাণে গাছপালা কেটে ফেলেছি কিংবা প্রকৃতির উপর অত্যাচার করছি তাতে এরকম ওয়েদার স্বাভাবিক ছিল। আমরা যদি এখন থেকে নিজেদের সচেতন না করি, তাহলে সুদূর ভবিষ্যতে আমাদের পরবর্তী জেনারেশন অনেক বেশি বিপদের সম্মুখীন হবে। প্রতিবছরই প্রায় এক ডিগ্রি করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে যদি নিয়মিত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে চিন্তা করে দেখুন আজ থেকে ১০ বছর পর কি অবস্থা হবে আমাদের। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত প্রকৃতিকে তার নিজের মতো করে চলতে দেওয়া এবং অপ্রয়োজনে গাছ না কেটে তার পরিবর্তে প্রতি বছর কিছু কিছু গাছ লাগানো। এতে করে প্রকৃতি তার আগের অবস্থায় ফিরে আসবে এবং আমরাও স্বস্তির সাথে বসবাস করতে পারবো।


পোস্ট বিবরণজেনারেল রাইটিং

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।





🪔আমার পরিচয়🪔

InShot_20240217_224020693.jpg

আমি পূজা ঘোষ(রাজশ্রী)। বনগাঁতে বসবাস করি। আমি বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, বিজ্ঞান বিভাগে ।পাশাপাশি কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করেছি। বর্তমানে আমি ফার্মাসিতে অধ্যায়নরত । ভবিষ্যতে এইগুলো নিয়ে ভালো কিছু করার আশায় এগোচ্ছি। কবিতা আবৃত্তি করতে আমি খুবই ভালোবাসি। ছোটো বয়েস থেকেই কবিতা আবৃত্তি শিখছি। এছাড়া ছবি আঁকতে,ঘুরতে যেতে,নতুন নতুন খাবার খেতে,গান শুনতে,ফোটোগ্রাফি করতে আর মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি।

🎯 সমাপ্ত🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 14 days ago 

কলকাতায় প্রচন্ড গরম পরে তা আমি গিয়ে দেখে এসেছি দিদি।যাই হোক আমাদের মতো আপনারা ও খবর শুনে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।অবশেষে বৃষ্টি এসে পরিবেশ শীতল করে দিয়ে গেলো।আপনাদের সারারাত বৃষ্টি হলো।তবে তো বেশ ভালোই তাপ কমে গেছে।বর্ষা কাল আসার আগে থেকেই আমাদের গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে।এতে আমাদেরই ভালো থাকা নিহিত হবে।

 12 days ago 

আপনিও দেখছি কলকাতায় এসে এখানকার বীভৎস গরম উপভোগ করে গিয়েছেন আপু। হ্যাঁ আপু,এখন থেকে গাছ লাগালে হয়তো আমাদের ভবিষ্যৎ টা একটু হলেও সুন্দর হবে। পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 14 days ago 

একদম ঠিক বলেছেন আপু, এই যে কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে এজন্য মূলত সবাই অনেক স্বস্তি পাচ্ছি। তীব্র গরমে অনেক মানুষ মারা গিয়েছে হিট স্ট্রোক এর জন্য। আর যে পরিমাণ তীব্র গরম এই পরিমাণ তীব্র গরম যদি আরো কয়েকদিন থাকতো তাহলে অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে যেত। তবে এটা ঠিক বলেছেন এর জন্য দায়ী আমরা মানুষরাই। এর জন্য যদি পদক্ষেপ এখন থেকে না নেয়া হয় তাহলে আগামী বছরগুলো আরো বেশি খারাপ হতে চলেছে আমাদের জন্য। ভালো লাগলো আপনার সুন্দর একটা জেনারেল রাইটিং পোস্ট পড়ে।

 12 days ago 

হ্যাঁ আপু, এইভাবে গরম যদি আরও বেশ কয়েকদিন ধরে পড়তো তাহলে মানুষের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যেত। বৃষ্টির জন্য আমরা একটু স্বস্তি পেয়েছি। তবে ভবিষ্যতে এরকম গরমের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমাদের অবশ্যই এখন থেকে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সুন্দর একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 13 days ago 

আসলেই দিদি, বেশ কয়দিন ধরে আমাদের কলকাতায় যে পরিমাণ গরম পড়েছিল, সেটা বলার বাইরে। তবে গত সোমবার বৃষ্টি হওয়ার কারণে পরিবেশটা একটু ঠান্ডা হয়েছে। তাছাড়া এই গরমে মানুষ অসুস্থ হয়ে যাওয়া এবং ট্রেনে দুইজন মারা যাওয়ার ঘটনা আমিও শুনেছিলাম। যাইহোক, বৃষ্টি হওয়ার পর থেকে আপনি যে স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে পারছেন, এটা শুনে খুব খুশি হলাম। তাছাড়া এই কথাটা একেবারেই ঠিক যে, প্রকৃতির এই বিপর্যয়ের জন্য পুরোপুরি আমরাই দায়ী। আমরা যতদিন না সচেতন হব, ততদিন এই সমস্যার সমাধান হবে না।

 12 days ago 

হ্যাঁ ভাই,আমরা নিজেরা সচেতন না হলে আসলে কোনো কিছুই সম্ভব না। প্রকৃতির আর কি দোষ! মানুষই তো এই সব কিছু বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 12 days ago 

একেবারেই সঠিক একটি কথা বলেছেন আপনি। আসলে এখন যেভাবে প্রতিনিয়ত চারপাশে সব জায়গায় গরমের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে এর ফলে আমরা সকলেই অনেকটাই কষ্টে ভুগছি৷ এই কষ্ট নিরসনের জন্য সকলেই বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিল এবং শেষ পর্যন্ত যখন বৃষ্টি হলো তখন পরিবেশ পরিস্থিতি একেবারেই সুন্দরভাবে আবারও তার নিজের রূপ প্রকাশ করলো৷ ধন্যবাদ এই সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য৷

 12 days ago 

হ্যাঁ ভাই অনেকদিন পর বৃষ্টি হওয়ার ফলে আমরা আবার সবাই একটু স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে পেয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 68799.09
ETH 3831.96
USDT 1.00
SBD 3.63