গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খড়ের পালা

in Steem For Tradition8 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম

আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি গ্রামাঞ্চলে একটি ঐতিহ্যবাহী জিনিস নিয়ে পোস্ট করতে যাচ্ছি। আমি যে বিষয়ের উপর পোস্ট করবো সেটি হলো খড়ের পালা। তো চলুন শুরু করা যাক।
Picsart_23-09-13_17-33-54-051.jpg
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের বেশীরভাগ মানুষই কৃষির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। আর ধান হলো এই কৃষিপ্রধান দেশের প্রধান ফসল। কেননা ধান থেকেই চাল হয় আর চাল থেকে ভাত। বাঙালির প্রধান খাদ্য হলো ভাত। তাই প্রতিবছর প্রচুর চালের প্রয়োজন হয় মানুষের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে। এজন্যই বাংলাদেশের মানুষ বেশী বেশী করে ধান চাষ করে। প্রতিবছর এদেশে দুই মৌসুমে ধান চাষ করা হয়। আর প্রচুর ধান চাষ করার ফলে প্রচুর পরিমান খড়ও জমা হয়ে থাকে যেগুলো মানুষের বিভিন্ন কাজে লাগে। যেমন - ঘরের চালা ছাউনি দেয়া, জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা, গরুকে খাওয়ানো, শীতের সময় গরু-ছাগলের থাকার ঘরে খড় বিছিয়ে দিলে একটু গরম থাকে ইত্যাদি। এতোসব কিছু করার পরও অনেকগুলো খড় অবশিষ্ট থাকে। সেগুলো গ্রামের মানুষ একটা জায়গায় পালা করে রাখে।

Picsart_23-09-13_17-34-44-199.jpg
Picsart_23-09-13_17-35-35-071.jpg
Picsart_23-09-13_17-36-13-031.jpg
Picsart_23-09-13_17-36-54-613.jpg

প্রতিটি গ্রামেই এইরকম খড়ের পালা দেখা যায়। মানুষ খড়ের পালা থেকে আস্তে আস্তে যতোটুকু প্রয়োজন ততোটুকু খড় বের করে নিয়ে যায় এবং সেটা ব্যবহার করে। ধান কাটার পর সেগুলো মাড়াই করে ধান ও খড় যখন আলাদা আলাদা হয়ে যায় তখন ধান শুকানোর পাশাপাশি মানুষ খড়ও শুকায়। তারপর খড়গুলো শুকানোর পর এক জায়গায় পালা করে রাখে। খড়গুলো পালা করে রাখলে অনেক অল্প জায়গার মধ্যে অনেকগুলো খড় রাখা যায়, বৃষ্টি আসলে পালার উপরে একটা পলিথিন দিলেই সব খড় পানিতে ভেজা থেকে বেচে যায়। গ্রামাঞ্চলে এই খড়ের পালাগুলো অনেক বেশী দেখা যায়। ছোটবেলা থেকেই আমি আমাদের এলাকায় এই ধরনের খড়ের পালা দেখে আসছি।

Picsart_23-09-13_17-37-17-432.jpg
Picsart_23-09-13_17-38-08-215.jpg
Picsart_23-09-13_17-38-48-630.jpg
ছোটবেলায় যখন লুকোচুরি খেলতাম তখন খড়ের পালার পিছনে লুকাতাম, অনেক সময় আবার একজনকে খড়ের পালার মধ্যেই ঢেকে রাখতাম। এতে করে যার খড়ের পালা সে যদি দেখতো তাহলে আমাদের অনেক বকাবকি করতো। কিন্তু আমরা তবুও পরের দিন একই কাজ করতাম। গ্রামে এই ধরনের খড়ের পালা ১২ মাসেই দেখা যায়। ছোটবেলায় বৃষ্টির দিনে খড়ের পালায় দৌড়ে গিয়ে ডিগবাজি দিতাম। আর পরের দিন খড়ের পালার মালিক আমাদের ঠ্যাংগানি দিতো। খড়ের পালাগুলো গ্রামের সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে। যে বাড়িতে গরু থাকে সেই বাড়িতে খড়ের পালা থাকবেই। বেশীরভাগ খড়ের পালাই মানুষ বাড়ির বাইরে দেয়।

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি এ ১৩
ক্যামেরা৫০ মেগাপিক্সেল
লোকেশনজমির হাট, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr673527MWFPCsxERaZquGbUkHMV9WZ5MJwmXkTuv41F5Tq4AiFtFdLYgppcpWVNLwb...45PzVWAMcnH3yQBxf5fXNb4aF4ANTTkpXKaNkmtZGTkGBuPWrd7E3SfVFzVaxiHJgeTsGASc2ZrWcbGiPkcj8D1MPwYnifrMpkxFpyc2eASgEzhaJ8suX7YJTg.png

তো বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভূল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে


Vote for @bangla.witness

Sort:  
 8 months ago 

খড়ের পালার মধ্যে আগে লুকোচুরি খেলতাম সবসময় এ। তবে আমাদের গ্রাম অঞ্চলে এটি সব জায়গায় দিয়ে থাকে। সাধারণ গরুর জন্য ও শীতকালে বা বর্ষাকালে আগুন ধরানের জন্য। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।

 8 months ago 

ধন্যবাদ ভাই

 8 months ago 

ঐতিহ্যবাহী খড়ের পালা নিয়ে আপনি দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। খড়ের পালায় ঘর শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা যায়। প্রত্যেক ইরির সিজনে আমরা খড় শুকিয়ে থাকি। খড় শুকানো খুবই কষ্টকর একটি কাজ। তবে এই খড়গুলো পরবর্তীতে আমাদের কাজে লাগে। এগুলো বাড়ির গবাদি পশুকে খাওয়ানো হয়। তাছাড়া এগুলো দিয়ে মাটির চুলায় ভাত রান্না করা যায়। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে খড়ের যথেষ্ট উপকারিতা রয়েছে। তাই খড় ভালোভাবে রাখার জন্য খড়ের পালা তৈরি করা হয়। গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতেই এই খড়ের পালা দেখা যায়। আমাদের বাড়ির বাইরেও একটি খড়ের পালা রয়েছে। আপনি দারুন কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনার ঐতিহ্য মূলক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 8 months ago 

ধন্যবাদ আপু

 8 months ago 

গ্রামের কৃষকরা ধান কাটার পর ধান ঘরে তোলার পর যে অবশিষ্ট অংশগুলো থাকে সেগুলো হচ্ছে সেই খরগুলো রোদে শুকিয়ে রাখা হয়। এরপর সেগুলো একটি স্তুপ আকারে দীর্ঘদিন ধরে রাখার জন্য একটি পালা দিতে হয়। এই পালাকেই আমরা আঞ্চলিক ভাষা পূজ বলে থাকি। এমন খরের স্তূপ আমাদেরও রয়েছে। আমরা প্রতি বছর ধান কেটে ধান মাড়াই করার পর এভাবে রেখে দেই। গরুর খাবার হিসেবে গরু এই খর খেয়ে থাকে। খড় গরুর খাবার সহ বাড়ির জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে এগুলো। অনেক কাজে আসে এগুলো এখন বেশ ভালো দামে বিক্রি করা হয়। আমন ধানের খড় বেশি দামে বিক্রি হয় তখন খড় শুকাতে হয় না ধান কেটে আটি করে এক জায়গায় রেখে দেওয়া হয় সেগুলো পরে ভালো টাকায় বিক্রি করা যায়। বর্ষাকালে যে ধান কাটা হয় সেই ধানের খড় এভাবে রাখতে হয়। তখন খড় শুকিয়ে নিয়ে রাখতে হয় তা না হলে এগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই কাজগুলো খুব বেশ কষ্টের এই কাজগুলো সহজে করা যায় না। এই কাজগুলো কাজের মহিলা নিয়ে করতে হয়। আমাদের প্রতি বছর কাজের মহিলা নিয়ে এরকম খর শুকিয়ে রাখতে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে বেশ চমৎকার কিছু ছবি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।

 8 months ago 

ধন্যবাদ ভাই

 8 months ago 

গ্রামে এমন খড়ের পালা সব জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়।বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ।আপনি অনেক সুন্দর করে করে উপস্থাপন করেছেন খড় দিয়ে কিকি কাজ করতে হয় বা কি কাজে লাগানো যায়।আমারও ছোট বেলার স্মৃতি মনে পরে গেলো আমিও ছোট বেলায় নানা দাদা বাড়িতে গেলে এভাবে লুকোচুরি খেলতাম।আপনার পোস্ট এর উপস্থাপনা সুন্দর হয়েছে।ছবি গুলো সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 8 months ago 

ধন্যবাদ আপু

 8 months ago 

গ্রাম অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খড়ের পালা সম্পর্কে সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া। এরকম খড়ের পালা গুলো আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। সেই যুগ যুগ ধরে এরকম খড়ের পালা দেখে আসতেছি। এরকম করে খড়ের পালা দিয়ে রাখলে খর গুলো অনেক সুরক্ষন থাকে। এবং এক ধানের মৌসুম থেকে আরেক মৌসুম পর্যন্তই খর গুলো গরু খেয়ে থাকে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 8 months ago 

ধন্যবাদ ভাই

 8 months ago 

চমৎকার একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ তাদের বাড়িতে গৃহপালিত পশু হিসেবে গরু পালন করেন। আর গরু পালনের জন্য খড়ের ভূমিকা অনেক। প্রতিবছর ধান কাটার পর খড়গুলো এভাবে পালা করে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। সংরক্ষিত খড়গুলো কখনো জ্বালানি ও কখনো গো খাদ্যের জন্য ব্যবহার করা হয়। খড় যেন বৃষ্টি পানিতে পচে না যায় তাই উপরে পলিথিন ব্যবহার করা হয়। সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 8 months ago 

ধন্যবাদ আপু

 8 months ago 

গ্রাম অঞ্চলের ঐতিহ্য হলো এই খরের পালা। গ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা গবাদি পশু পাখিকে খাওয়ানোর জন্য এই খরগুলোকে সংরক্ষণ করে রাখে এই পদ্ধতিতে যাতে করে সেগুলো নষ্ট না হয়। গ্রাম অঞ্চলের প্রত্যেকটা বাড়িতে কমবেশি এই ঘরের পালা গুলো আছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 8 months ago 

ধন্যবাদ ভাই

খড়ের পালা সম্পর্কে খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। গ্রামাঞ্চলে যারাই, চাষাবাদ করে এবং গৃহপালিত পশু পালে তাদের বাড়িতে এরকম খড়ের পালা দেখা যায়। মূলত গরু, মহিষ কে খড় খাওয়ানো জন্য পালা করে রাখা হয়। খড়ের পালা সম্পর্কে আপনি খুব সুন্দর লিখেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে ভাই । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 8 months ago 

ধন্যবাদ ভাই

 8 months ago 
DescriptionInformation
plagiarism-free
#steemexclusive
Ai Content - free

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.

 8 months ago 

ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.13
JST 0.033
BTC 62772.18
ETH 3032.07
USDT 1.00
SBD 3.67