★দুষ্টুর ডিব্বা★

in #life6 years ago

টিভি, ল্যাপটপ, ফোন কোথাও পাচ্ছি না। কেমনটা লাগে। গেলো কই সব।
:- আম্মু, ও আম্মুউউউ
:- কি হয়েছে? ঘুম থেকে কখন ওঠলি? কিছু লাগবে তোর? (মা)
:- আরে বাপ!! আগে তো শোনো আমি কি বলি।
:- আচ্ছা বল। কিছু খাবি?
:- ধুর!!!! আমার ফোন, ল্যাপটপ, টিভি এইগুলা কই?
:- জানিনা আমি
:- মিথ্যা বলবা না একদম। বলো তাড়াতাড়ি।
পাশের থেকে ভাইয়া এসে বললো,
:- আমি বলছি। টিভি, ফোন, ল্যাপটপ এইগুলো এখন সব বন্ধ।
:- কেন, আমার অপরাধ কি?
:- অপরাধ তো অনেক কিছু, তবে এখন কিছু বলবোনা আগে সুস্থ হও তারপর বলবো।
:- কিন্তু আমি ঘরে একা বসে করবোটা কি?
:- আমি তোমার ফ্রেন্ডদের ফোন দিচ্ছি, ওদের সাথে আড্ডা দাও।
:- ওদের কি পড়াশোনা নাই যে, সারাক্ষণ আমার কাছে এসে বসে থাকবে।
:- তাহলে গল্পের বই পড়বে।
:- ভাইয়া, এইটা কিন্তু ঠিক হচ্ছেনা। টিভিটা তো দাও।
:- না
:- কেন?
:- টিভিতে এইসব গান-টান দেখার কারণে তোমার আজ এই অবস্থা।
:- আজব তো! টিভির সাথে আমার পড়ে যাওয়ার সম্পর্কটা কি?
:- তুমি নাচতে নাচতে সিড়ি থেকে পড়ে গেছো। রাইট?
:- হুম (নিচুস্বরে)
:- সো, কথা কম। খেয়ে, ওষুধ খাবা। ভালো না লাগলে শুয়ে শুয়ে গল্পের বই পড়ো।
.
:-কি বোরিং লাইফে পড়লামরে বাবা। সময় কিছুতেই কাটেনা। একটু গান শুনবো তারও কোনো উপায় নেই। কিভাবে যে একটা মানুষ এতটা নিষ্ঠুর হয়।
:- তানিশা, দেখ কে এসেছে। (আম্মু)
:- আমি কি সং সেজে বসে আছি যে, আমাকে দেখতে আসবে কেউ।
:- আরে দেখনা, হৃদয় এসেছে। ওর সাথে গল্প কর, আমি চা নিয়ে আসি।
:- এখন কেমন আছো? (হৃদয়)
:- ভালো খারাপ দুইটাই।
:- কেন?
:- জানিনা।
:- রাগ করছো
:- কার ওপর?
:- কারো ওপর না। (নিচুস্বরে)
:- মতলবটা কি আপনার? হঠাৎ আমার কাছে কেন এসেছেন?
:- না, এমনি তোমাকে দেখতে এসেছি।
:- আমাকে দেখার কি আছে? আগে কখনো দেখেননি?
:- তুমি তো অসুস্থ তাই।
:- আমি তো অসুস্থ না।
:- তাহলে?
:- আমার পা অসুস্থ
:- হিহিহি, তুমি এত দুষ্টুমি যে কি করে পারো।
:- আচ্ছা এবার কি বলবেন, অনুগতা কে?
:- অনুগতা আমার জিএফ। ওর সাথে ঝগরা করেই আকাশ ভাইয়াদের বাড়িতে এসেছি।
:- কেন?
:- শুধু শুধু ঝগরা করে আর সন্দেহ করে। তাই আর সহ্য হয়নি।
:- ধুর সন্দেহ করে তাতে কি, সন্দেহ দূর করলেই তো পারেন।
:- হুম, এখন শুধু বারবার ফোন দিয়ে সরি বলে।
:- বাহ্ ভালো তো। তাহলে ক্ষমা করে দিন।
:- হুম ভাবছি, একটা সারপ্রাইজ দিয়ে ক্ষমা করে দেবো তাই কালকে পার্কে আসতে বলেছি, ওকে সারপ্রাইজ দিবো বলে।
:- ওহ আচ্ছা খুব ভালো।
এরমধ্যেই জয় যে কখন এসেছে কে জানে। এসেই বললো,
:- হ্যাঁ ভালোই তো। ভালো না!! তা কবে থেকে এসব চলছে শুনি?
:- জয়, কি বলছিস এসব তুই।
:- এখনো তো কিছুই বলিনি। এই তোর সেই হৃদয় তাই না, যার কথা তখন আমায় বলছিলি।
:- তুই যা ভাবছিস, তা ঠিক না।
:- রাখ তোর ঠিক, বেঠিক আমি চললাম,
বলেই চলে গেলো!!
:- ওর নাম জয়? (হৃদয়)
:- হুম
:- কি হয় তোমার?
:- বেষ্টু আর হাবি
:- কি বলো!
:- হুম ঠিকই বলি। ওর আব্বু আর আমার আব্বু বেষ্টফ্রেন্ড। সেই সূত্রেই জয় আর আমি বেষ্টফ্রেন্ড। জয় আমাকে ভালোবাসে আমি জানি, কিন্তু ভয়ে বলতে পারেনা।
:- ওহহ। এখন যে তোমাকে ভূল বুঝলো
:- কি আর করবো, কাল রাগ ভাঙ্গাতে হবে।
:- ওহ আচ্ছা, তাহলে এখন তুমি রেষ্ট নাও আমি যাই।
:- আচ্ছা
.
রাতে ডিনার করে শুয়ে আছি। কি করে জয়ের রাগ ভাঙ্গাবো বুঝতেছিনা। এতদিন জানতাম মেয়েরা হিংসুটে হয়, এখন দেখছি ছেলেরাও হিংসুটে হয়। ভাবতে ভাবতেই কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি।
সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠে, সুন্দর করে বিছানায় বসে, চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলছি,
:- সকালে ওঠে আমি জোড়ে জোড়ে বলি, সারাদিন আমি যেন দুষ্টুমি করতে পারি।
চোখ বন্ধ করে সমানে বলেই যাচ্ছি। কয়েকবার বলার পর চোখ খুলে দেখি,
ভাইয়া, আব্বু, আম্মু, ভাবি, আপু সবাই ঘুমঘুম চোখে রাগ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
:- কি হয়েছে তোমরা সবাই আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
:- সকাল সকাল কি শুরু করছিস? (আম্মু)
:- কেন, প্রার্থনা করলাম।
:- এইটা কেমন প্রার্থনা? (আপু)
:- দুষ্টুমির প্রার্থনা।
:- সকাল সকাল শুরু করে দিয়েছিস? (ভাইয়া)
:- আরে ভাইয়া, বুঝোনা সকাল সকাল প্রার্থনা করলে মনটা ফ্রেশ হয়।
:- হু বুঝছি। এবার ঘুমাতে দেন আফা।
:- ঐ, আফা কি? (রেগে)
:- ওহ সরি, আমার কলিজা।
.
সকালে রেডি হয়ে জয়ের বাসায় গেলাম।
গিয়ে দেখি জয় ঘুমুচ্ছে। দাঁড়াও ঘুম ছুটাচ্ছি তোমার মি. জয়! কিন্তু কি করি, কি করি!! হুম পেয়েছি সেফটিপিন। সেফটিপিন দিয়ে দিলাম জোড়ে একটা খোঁচা!!
:- উফফফ!!
:- ঐ চুপ চেঁচাস কেন? (মুখ চেপে ধরে)
:- তুই এখানে!!
:- আমি আসিনি তোর বউ আসছে।
:- আমার বউ কে?
:- কে আবার! আমি (একটু ভাব নিয়ে)
:- আজ এত ভালোবাসা। মতলবটা কি পাগলী?
:- মতলবটা রাগ ভাঙ্গানো। এখন ওঠ ফ্রেশ হয়ে আয়, কলেজে যাবো। কলেজ শেষ করে ঘুড়তে যাবো।
:- আচ্ছা।
জয় রেডি হওয়ার পর জয়কে নিয়ে কলেজে গেলাম। কলেজে যাওয়ার পথে এক সিনিয়র ভাইয়ার সাথে খেলাম ধাক্কা। সকাল সকাল মেজাজটাই খারাপ করে দিছে, এর মজা তো দেখাতেই হবে।
কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি, ছেলেটি বটগাছের নিচে বসে আছে। সাথে তার কিছু ক্লাশমেট। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমি আমার কলমটা ঠিক তার পেছনে ফেললাম। কলম তোলার বাহানায় ওর পেছনে গিয়ে সেফটিপিন দিয়ে জোরে খোঁচা দিয়ে বটগাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়েছি। কেউ অবশ্য আমাকে দেখেওনি।
:- আল্লাহ্ রে!! (চিৎকার করে)
:- কি হয়েছে তোর? (ভাইয়াটার ফ্রেন্ড)
:- কি যেন পিঠে বিধলো?
:- কি বিধলো?
:- কেউ মনে হয় খোঁচা দিছে।
:- এখানে তো কেউ নাই, কে খোঁচা দিব।
আমি ওদের কথা শুনছি আর হাসছি। কোথথেকে জয় এসে, আমার হাত টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
:- কি হলো জয়, এভাবে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?
:- (চুপ)
জয় কোনো কথাই বলছেনা। কিছুক্ষণ পর একটা পার্কে নিয়ে গিয়ে ওর সামনে দাঁড় করালো।
:- কি সমস্যাটা কি তোর? (জয়)
:- কই সমস্যা?
:- তুই কি এই দুস্টুমি ছাড়বিনা?
:- কি করেছি আমি?
:- কি করেছিস মানে। ঐ ভাইয়াটাকে সেফটিপিন দিয়ে খোঁচা দিলি কেন?
:- আমার কোনো দোষ নাই। উনি আগে ধাক্কা দিলো কেন?
:- ঐটা তো উনি ইচ্ছে করে না ও দিতে পারে।
:- তাহলে তো সরি বলতো। সরি বললো না কেন?
:- তোকে নিয়ে আমি আর পারিনা।
জয়ের বকাঝকা আর সহ্য হচ্ছেনা। হঠাৎ একটা দুষ্টুমি বুদ্ধি এলো মাথায়।
সামনে একটা ছেলে আর মেয়ে বসে আছে। পেছনদিকে থেকে ছেলেটাকে ডাক দিলাম।
:- এই যে, এক্সকিউজ মি একটু শুনুন।
ছেলেটা আমার দিকে তাকাতেই আমি জয়ের সামনে ছেলেটাকে একটা ফ্লাই কিস দিলাম!!
ছেলেটার সাথে বসে থাকা মেয়েটা বসা থেকে ওঠে গেলো, ছেলেটিও। মেয়েটি রাগী চোখে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছে, আর জয় রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আমি অবাক চোখে ছেলেটার দিকে আর ছেলেটা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ ছেলেটা আর কেউ নয়, ছেলেটা হৃদয়!!!!
যাহ্, বাব্বাহ্ এবার তো হৃদয় আর আমার দুইজনের কপালেই দুঃখ আছে। মেয়েটা অলরেডী হৃদয়কে মার দেওয়া শুরু করে দিছে, মেয়েটা মনে হয় অনুগতা। পাশে তাকিয়ে দেখি জয় নাই। হায় হায়, জয় কই গেলো। পেছনে তাকিয়ে দেখি জয় রাগ করে চলে যাচ্ছে। দৌড়ে গিয়ে জয়ের সামনে দাঁড়ালাম।
:- সরি জয়
:- সামনে থেকে সর
:- সরি বললাম তো। তুই একটু বস এখানে আমি তোকে সব বলে বুঝাচ্ছি।
জয়কে নিয়ে একটা বেঞ্চে বসেছি আর হৃদয় ও অনুগতার কথা বলছি।
:- ঐ তোর মুখে কি? (জয়)
:- সেন্টার-ফ্রুট
:- মুখ থেকে ফেল ঐটা। কি হলো তাকিয়ে আছিস কেন, ফেল ঐটা।
:- হু ফেলছি।
:- হুম বল এইবার।
.
তারপর হৃদয় আর অনুগতার কথা সব হৃদয়কে বললাম। জয়ের রাগ ভেঙ্গে গেছে। ওখান থেকে ফুসকা খেয়ে আসার পর জয় আমাকে বাড়ির গেটের সামনে নামিয়ে দিয়েছে। ওর মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো ঠিক করতে গিয়ে দেখে, চুলে চুইঙ্গগাম লাগানো।
ফোনে একটা ম্যাসেজ আসলো সাথে সাথে জয়ের,
:- তুই আর ভালো হবিনা তাইনা, দুষ্টুর ডিব্বা আমার!!
:- হিহিহি
.
আরে বাবা, আপনারা বুঝেননাই ব্যাপারটা😉
(সমাপ্ত)

Advanced thanks. You guys are so helpful for newbie.😍😍

@originalworks
#Originalworks
@minnowpond
@followforupvotes
@minnowsupport
@banjo
@dorabot
@dropahead
@gaman
@abasinkanga
@skreza
@kevinwong
@craig-grant
@juneaugoldbuyer
@blakemiles84
@bobbylee
@paco
@crypt0
@trevonjb
@yuliana
@thecryptofiend
@chriscrypto
@jonnyrevolution
@brianphobos

@craigrant----
@craigrant
#TrevonJB
@trevonjb
#CraigRant
@Craig-grant
#upvoteforupvote
#followforfollow

@itchykitten
@martin.mikes
@jean-gregoire
@kedjom-keku
@ecoinstant
Non bid bot upvote services:

@treeplanter
@echowhale

Here are links to other bid bots I have reviewed:
@upme
@luckyvotes
@mercurybot
@bearwards
@postpromoter
@redlambo
@upmewhale
@allaz
@steembloggers
@sneaky-ninja
@booster
@aksdwi
@boomerang
Please read about this bot before you use it!
Bidder beware:
@mrswhale
@getboost

Special thanks to
@esteemapp
@creative-commons
@good-karma

Sort:  

য়েছি সেফটিপিন। সেফটিপিন দিয়ে দিলাম জোড়ে একটা খোঁচা!! :- উফফফ!! :- ঐ চুপ চেঁচাস কেন? (মুখ চেপে ধরে) :- তুই...

Hahahaha bro want to chat with you
Sms me
https://m.me/dhokho.steemit.7

Your Post Has Been Featured on @Resteemable!
Feature any Steemit post using resteemit.com!
How It Works:
1. Take Any Steemit URL
2. Erase https://
3. Type re
Get Featured Instantly � Featured Posts are voted every 2.4hrs
Join the Curation Team Here | Vote Resteemable for Witness

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 70135.32
ETH 3789.12
USDT 1.00
SBD 3.77