হার না মানা গল্প পর্ব-১

in #never6 years ago

হার না মানা গল্প সিরিজের প্রথম পর্বে আজ এমন একজন মানুষ কে নিয়ে এসেছি যার কথা আপনি হয়ত আগে কখনো শুনেন নি। হাঙ্গেরি তে যে লোক টি একজন জাতীয় হিরো। সেখান কার মানুষের প্রত্যেকের অনুপ্রেরনা। তার জীবনের গল্প শুনে অনেক মানুষ ই বদলে গেছে। তো চলুন এবার মূল গল্পে যাই।


Source

ক্যারলি তাকাস নামে হাঙ্গেরির খুব ভালো একজন শুটার ছিলেন। প্রতিটি প্রতিযোগিতায় তিনি সব ধরনের পুরুষ্কার জিতে নিয়ে ছেন। তার সাহসীকতা ও আদম্য ইচ্ছা শক্তি দেখে সবাই ভেবে নিয়ে ছিলো ১৯৪০ সালের অলেম্পিক এর গোল্ড মেডেল পাবেন। ক্যারলিও ঠিক সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়। তখন তার স্বপ্ন ছিলো একটাই সেটা হলো গোল্ড মেডেল জিতে সেরা দের সেরা হওয়া। সব কিছু ঠিক ঠাক ভাবেই হচ্ছিলো। তার কাছে ২ বছর সময় ছিলো। তিনি জানতেন এই ২ বছরে তিনি নিজেকে আরো ধারালো করে তুলতে পারবে। ১৯৩৮ সালে তখন কার সময়ে আর্মি দের একটি ক্যাম্প চলতে ছিলো। তিনিও সেই ক্যাম্প এই ছিলেন। হঠাত তিনি একটি দুর্ঘটনার শিকার হন। যে হাত কে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে সেরা হাত বানাবেন ভেবে ছিলেন। তার সেই হাত টি গ্র্যেনেড বিষ্ফোরন এ উরে যায়। তার সব কিছু মুহুর্তেই শেষে হয়ে যায়।

তখন তার কাছে ২ টি পথ খোলা ছিলো। হয় তিনি পরাজিত মানুষ হিসেবে নিজেকে লুকিয়ে রাখবেন। নাহলে তার ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্ন কে আবার জীবিত করবেন। পৃথিবী কে দেখাবে কিভাবে অসম্ভব কে সম্ভব করা যায়। তিনি আবার সপ্ন দেখা শুরু করলেন। তার কাছে যা আছে তা নিয়েই। আর যা নেই তার কাছে সেটা আজীবন এর জন্য ভুলে গেলেন। এতো কিছুর পরও তার এক্টাই স্বপ্ন তিনি সেরা শুটার ই হতে চান। তার স্বপ্ন কে বাস্তবায়নের জন্য তার কাছে যা ছিলো তা হলো তার বা হাত। দুর্ঘটনায় পরার পর তার চিকিৎসা চলে এক মাস। সেই এক মাস পরেই তিনি তার সেই শেষ সম্বল বা হাত নিয়েই ট্রেনিং শুরু করে দেন। তার ঠিক ১ বছর পর তিনি আবারো প্রতিযোগিতায় ফিরে আসেন। হাঙ্গেরিতে তখন ন্যাশনাল শুটিং ইভেন্ট শুরু হয়। সেখানে দেশ সেরা শুটার রা অংশগ্রহন করেন। বাকি প্রতিযোগিরা ক্যারলি কে দেখে বাহবা দিতে লাগলো। এ হলো রিয়েল হিরো যিনি আমাদের অনুপ্রেরনা যোগাতে এসেছেন। তখনো কেউ জানত না তিনি এই এক বছর বা হাত দিয়ে অনুশিলন করে ছেন। তখন ক্যরলি বলল আমি তোমাদের অনুপ্রেরনা দিতে এখানে আসিনি আমিও তোমাদের মত প্রতিযোগি। সুতরাং তৈরী হয়ে যাও।

শুরু হলো প্রতিযোগীতা। সবাই সবার সেরা টা দিয়ে চেস্টা চালালো। আর ক্যরলি তার নতুন হাত দিয়ে সেই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হলো। তিনি এখানেই থেমে থাকেন নি। কারন তার ইচ্ছা ছিলো তার হাত হবে বিশ্ব সেরা শুটারুর হাত। এরপর তিনি অলিম্পিক এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। কিন্তু ২য় বিশ্ব যুদ্ধের কারনে সেই ১৯৪০ এর অলিম্পিক বাতিল করা হয়। তখন তাকে ১৯৪৪ এর অলিম্পিক এর দিকে চেয়ে থাকতে হয়। কিন্তু সেটিও বাতিল হয়ে যায়। তখন তাকে ১৯৪৮ সালের অলেম্পিক এর জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু ততো দিনে ২৮ বছরের তরুন ৩৮ বছরের হয়ে গেছে। তরুন প্রতিযোগিদের সাথে টিকে থাকা তার জন্য দুর্সাধ্য ব্যপার হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু তার মাঝে অসম্ভব বলে কিছু ছিলো না। বিশ্বের বাঘা বাঘা খেলোয়ার দের সাথে টক্কর হয় ক্যারলির। কিন্তু এবারো তিনি জিতে যায়।

কিন্তু তার যাত্রা তবুও থামেনি। ১৯৫২ সালের অলিম্পিক এ ও অংশগ্রহন করেন ক্যারলি। এবার ও এই এক হাতি শুটার বিজয়ী হন। গোল্ড মেডেল পান। গড়ে উঠে ইতিহাস। তখন কার পর থেকে এখন পর্যন্ত পর পর দুবার কেউ গোল্ড মেডেল পান নি শুটিং এ।

ব্যর্থতার হাজারো কারন থাকতে পারে। কিন্তু সফলতার একটি কারন সেটি হচ্ছে ইচ্ছা শক্তি। ইচ্ছা শক্তি থাকলে তুমিও অনেক কিছু করতে পারবে। যেমন টা পেরেছিলো ক্যারলি। এই ছিলো হার না মানা গল্পের প্রথম পর্বে। আশা করি আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে।

Post Source

Coin Marketplace

STEEM 0.26
TRX 0.11
JST 0.033
BTC 63851.10
ETH 3059.36
USDT 1.00
SBD 3.85